এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > মমতার হুঁশিয়ারির ফল মারাত্মক, ফের নবান্নের ঘাম ছোটালেন রাজ্যপাল!

মমতার হুঁশিয়ারির ফল মারাত্মক, ফের নবান্নের ঘাম ছোটালেন রাজ্যপাল!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করার কারণে যে ভাষায় রাজ্যপালকে আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তা কার্যত নজিরবিহীন। শিক্ষক দিবসের মঞ্চ থেকে রাজ্যপালকে মুখ্যমন্ত্রীর আক্রমণের পর তা নিয়ে নানা মহলে মলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। অনেকেই ভেবে নিয়েছিলেন, এবার কোনো একটি চরম পদক্ষেপ রাজ্যের বিরুদ্ধে নিতে পারেন রাজ্যপাল। তবে তেমন কিছু না করে সরকারের ছটফটানি আরও বাড়িয়ে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের সাংবিধানিক প্রধান। যে বিষয়ে রাজ্যের এত আপত্তি, মধ্যরাতে আবারও রাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করে দিলেন রাজ্যপাল আনন্দ বোস। স্বভাবতই মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তি এবং আক্রমণের পরেও যে তাদের কিছু যায় আসে না, তা স্পষ্ট করে দিল রাজভবন।

সূত্রের খবর, মঙ্গলবার মধ্যরাতে কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে একজনকে নিয়োগ করেন রাজ্যপাল। আর তারপর থেকেই তা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে শিক্ষা মহলে। কেননা শিক্ষক দিবসের মঞ্চ থেকে 16 টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্ত কোনোমতেই মেনে নিতে পারছেন না। এমনকি ভবিষ্যতে এই সমস্ত উপাচার্যরা যদি রাজ্যপালের নিয়ম মেনে চলেন, তাহলে তাদের বেতনেও যে আঘাত আনতে পারে রাজ্য সরকার, সেই ব্যাপারেও ইঙ্গিত দিতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। এমনকি মধ্যরাতে রাজ্যপালের উপাচার্য নিয়োগের সিদ্ধান্তকে হঠকারী সিদ্ধান্ত বলেও একাধিক আক্রমণ সূচক বাক্য প্রয়োগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপর থেকেই রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সংঘাত ভয়াবহ হয়ে উঠবে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু যে বিষয়ে এত আপত্তি রাজ্য সরকারের এবং মুখ্যমন্ত্রীর, সেই বিষয়েই আবার পদক্ষেপ গ্রহণ করে রাজ্যপাল বুঝিয়ে দিলেন, তিনি কারও কথায় চলবেন না।

বিরোধীদের দাবি, বর্তমানে রাজ্যপাল পদটাই তুলে দিতে চাইছে এই সরকার। সংবিধানের বিন্দু বিসর্গ তারা মানতে চাইছে না। তাই সব কিছুর তোয়াক্কা না করে প্রয়োজনে রাজভবনের সামনে ধরনা দেওয়ার কথাও শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। অর্থাৎ তিনি যে সবকিছু নিজের হাতে রাখতে কি ভয়াবহ হতে পারেন এবং গণতন্ত্রকে টুটি চেপে হত্যা করতে পারেন, তা তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে পরিষ্কার বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের। তবে মুখ্যমন্ত্রী যদি বুনো ওল হন, তাহলে রাজ্যপাল বাঘা তেতুল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে হুমকিই দিয়ে যান না কেন, রাজ্যপাল যে তার অবস্থান থেকে সরবেন না এবং সংবিধানকে রক্ষা করে যাবেন, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। যার জন্য রাজ্যপালের ভূমিকার প্রশংসা করে তাকে স্বাগত জানাচ্ছে বিরোধীরা।

পর্যবেক্ষকদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর হয়তো ভেবে নিয়েছিলেন যে, এবার রাজ্যপাল আর শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। কিন্তু উল্টে আরও বিপদ ঘনিয়ে এলো রাজ্য সরকারের। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে এত আপত্তি ছিল রাজ্যের। রাজ্যপাল এই কাজ করতে পারেন না সহ একাধিক যুক্তি রাজ্যের পক্ষ থেকে স্থাপন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই কাজ করে আবার রাজ্যপাল নিজের হাতেই স্টিয়ারিং রাখলেন। যে ইস্যুকে কেন্দ্র করে এই ভাদ্রের গরমে এত প্যাচপ্যাচ অবস্থা তৈরি হয়েছিল নবান্নের, তা আরও দ্বিগুণ করে কালঘাম ছুটিয়ে দিলেন বাংলার সাংবিধানিক প্রধান। অন্তত তেমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!