এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > কংগ্রেস বিধায়ক হয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি! মাননীয় স্পিকারবাবু আর কবে ঘুম ভাঙবে?

কংগ্রেস বিধায়ক হয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি! মাননীয় স্পিকারবাবু আর কবে ঘুম ভাঙবে?

২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুড়ি মেরে বাম-কংগ্রেস জোটকে উড়িয়ে দিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় এলেন, তখন আমজনতা থেকে সাধারণ তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা ভেবেছিলেন, দলের গায়ে যে দুর্নীতির দাগ লাগতে শুরু করেছে, যেসব নেতাদের নামে একাধিক অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়স্তরে বা দলীয়স্তরেই – তাঁদের সকলের বিরুদ্ধেই এবার কড়া অনুশাসনের ব্যবস্থা করবেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেননা মানুষ তাঁকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন, সরকার পরে যাওয়ার কোনো দুশ্চিন্তা নেই – এখন যদি রাজনীতির ময়দানকে কলঙ্কমুক্ত করার অভিযানে না নামেন তো কবে নামবেন?

গেরুয়া শিবিরের এক যুবনেতার কথায়, কিন্তু, ও হরি! দলের যেসব নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা! উল্টে কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট থেকে একাধিক নেতা-বিধায়ক-সাংসদ যোগ দিলেন তৃণমূলে। শাসকদলের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে তাঁরা নাকি তৃণমূলের নৌকায় ঠাঁই নিয়েছেন। কিন্তু দুর্জনেরা বলে থাকেন, একাধিক মিথ্যা মামলা বা ছেলে-পুলে আত্মীয়-স্বজনদের সরকারি চাকরি বা সুবিধা পাইয়ে দেওয়া এবং ওই সব নেতাদের ব্যক্তিগত উন্নয়নের সুবাদেই তাঁরা নাকি ঘাসফুল শিবিরে ভিড়েছেন!

ওই নেতার কথায়, সত্যি যেটাই হোক, এখন একদলের প্রতীকে ও সেই দলের কর্মী-সমর্থকদের কঠিন লড়াইয়ে ও আবেগে ভর করে জিতেও যখন মনে করছেন যাঁদের বিরুদ্ধে এতদিন লড়েছেন, তাঁরাই শ্রেয় – তাহলে তো আপনার ‘নৈতিকতা’ বলে পদত্যাগ করে অন্যদল যোগ দিন! হাতের কাছেই বড় উদাহরণ – মুকুল রায়। যেদিন ভাবলেন আর মতাদর্শগত পার্থক্যের জন্য তৃণমূল কংগ্রেসটা করবেন না – সেদিন দলীয় সব পদ থেকে, এমনকি রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকেও ইস্তফা দিয়ে তবে বিজেপিতে যোগ দিলেন। বিজেপিতে গিয়ে কোনো পদ না পেয়েও, কোনো জনপ্রতিনিধি না হওয়া সত্ত্বেও – যে দল ছেড়েছেন সেই দলের সুবাদে প্রাপ্ত কোনো সুবিধা নিলেন না। এটাই তো রাজনীতিতে হওয়া উচিত।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

ওই যুবনেতার আরও বক্তব্য, কিন্তু, তৃণমূলের উন্নয়ন দেখে উৎফুল্ল হয়ে ওঠা এইসব ‘তৎকাল নেতা-নেত্রীরা’ তার ধার ধারলেন না! প্রফুল্ল চিত্তে যে দল ত্যাগ করেছেন, সেই দলের বিধায়ক হিসাবে বিধানসভায় সবটুকু সুযোগ সুবিধা ভোগ করে চললেন আর বাইরে তৃণমূলের দাপুটে নেতা হয়ে বিরাজ করে চললেন। বাধ্য হয়েই, বিরোধী দলের নেতারা ছুটলেন বিধানসভার স্পিকারের কাছে। আর তিনি সব শুনে-দেখে-বুঝে রায় দিলেন, তিনি নাকি বুঝতেই পারছেন না ‘দলবদলকারীরা’ আদতে দলবদল করেছেন! যে পদে থেকে দলীয় রাজনীতির উর্ধে উঠতে হয় (হাতের কাছে আরেক বাঙালির চমকপ্রদ উদাহরণ আছে – সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, যিনি প্রাণের চেয়ে প্রিয় দল থেকে বহিস্কৃত হয়ে যাবার ভয়কে উপেক্ষা করেও, অধ্যক্ষের ধর্ম ও সংবিধানের আদর্শ থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত হন নি), সেই পদে থেকেও এতখানি দলীয় আনুগত্য দেখিয়ে কি পদটিকেই কালিমালিপ্ত করছেন না মাননীয় বিমানবাবু?

ওই যুবনেতা এবার সরাসরি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন, তবে এতদিন না হয় বুঝতে পারেননি – কিন্তু এখন তো তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একেবারে সাংবাদিক বৈঠক করে কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর সিংহকে রানাঘাট তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি করে দিলেন! এবার কি আপনার ঘুম ভাঙবে? নাকি নীতি-আদর্শকে শিকেয় তুলে অধ্যক্ষ হিসাবে প্রাপ্ত বাড়তি সুবিধাগুলোই বেশি প্রিয় হয়ে থাকবে? অবশ্য আপনি তা পারেন, কেননা অধ্যক্ষ হবার আগে আপনি যে দলের বিধায়ক সেই দলের সর্বোচ্চ নেত্রী একদিন যে শঙ্কর সিংহকে টিকিট দেওয়ার জন্য গলায় শাল জড়িয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন, তাঁকেই এখন বিজেপি আতঙ্কে কেঁপে গিয়ে জেলা সভাপতি করছেন। সুতরাং, নীতি-আদর্শ শব্দগুলো আপনি বা আপনার দলের কাছ থেকে আশা করায় অন্যায়!

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!