ইডিও নাকি সময় মেনে আসবে? আজব বক্তব্য স্পীকারের! তুলোধোনা বিজেপির! তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য January 12, 2024 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- এই রাজ্যে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা কখন কি বলেন, তার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। তারা এমন সব কথা বলে ফেলেন, যা নিয়ে মাঝেমধ্যেই তৈরি হয় বিতর্ক। যাই হোক, সেসব কথা ধরলে প্রচুর খবর হবে প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত। কিন্তু আজ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যখন রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু এবং তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হয়েছে, তখন তৃণমূলের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছে প্রতিহিংসার কথা বলার প্রক্রিয়া। তবে এইসব কিছুতে অবশ্য আশ্চর্য হয়নি পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। কারণ তারা এটা দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় যে কথা বললেন, তা শুনে অনেকেই চমকে যাচ্ছেন। অনেকে আবার রসিকতার সুরে বিমানবাবুর বক্তব্যকে হাতিয়ার করে বলছেন যে, তাহলে কি এবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকেও দিনক্ষণ দেখে রেড করতে হবে নাকি? নিজেদের কি ভাবতে শুরু করেছেন তৃণমূল নেতারা? বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছ থেকে আর যাই হোক, এত দায়িত্ব জ্ঞানহীন মন্তব্য আশা করা যায় না বলেই মনে করছেন একাংশ। কিন্তু কি এমন বলেছেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ? প্রসঙ্গত, আজ সাতসকালেই পৌর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের তিন হেভিওয়েটের বাড়িতে পৌঁছে যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এখনও পর্যন্ত সেখানে তারা তল্লাশি চালাচ্ছে। আর এই বিষয় নিয়েই প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে আজব এক মন্তব্য করে বসেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমাদের পরিষদীয় দলের সঙ্গে যুক্ত তাপসবাবুকে রাজ্য বিধানসভার বাজেটের কিছুদিন আগে তার বাড়িতে এভাবে চলে যাওয়া, এটা আমার মনে হয়, ঠিক হচ্ছে না। আমাদের আর এক মন্ত্রী তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর সামলাচ্ছেন, তার বাড়িতে এভাবে চলে যাওয়া, আমার মনে হয় ঠিক হচ্ছে না। এই সময় এগুলো করা উচিত নয়। সামনেই আমাদের বাজেট অধিবেশন রয়েছে।” এছাড়াও যেমন তৃণমূল নেতারা প্রতিহিংসার কথা বলেন, তেমনই বক্তব্য রেখেছেন তিনি। কিন্তু প্রতিহিংসার কথা বললে সেটা নিয়ে আলোচনার কোনো বিষয় ছিল না। তবে বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছ থেকে সময় মেনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আসবে কখন বাজেট অধিবেশন হবে, কখন হবে না, সেটা দেখে তারা দুর্নীতি কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেবে, এটা কি করে সম্ভব? এসব কি বলে ফেললেন বিধানসভার অধ্যক্ষ? আসলে তৃণমূল প্রচন্ড ভয়ে রয়েছে। তারা খুব ভালো মত জানে যে, এর পরিণতি ভয়ংকর হতে পারে। অনেকেই তো জেলে গিয়েছেন। সেই সংখ্যা আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে। তাই সবকিছু জেনে বুঝেও হতাশ হয়ে কার্যত একটি মন্তব্য করে হাসির পাত্র হলেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই দাবি সমালোচকদের। ইতিমধ্যেই গোটা বিষয় নিয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ পদটা নিরপেক্ষ। কিন্তু তিনি সবকিছু লংঘন করেছেন। বিজেপি বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেও তিনি তাদের সদস্য পদ খারিজ করেন না। রাজ্য বিধানসভার স্পিকার কার্যত তৃণমূলের দলদাস হিসেবেই কাজ করেন। তাই তার কাছ থেকে এইসব মন্তব্য আসবে, এটাই তো স্বাভাবিক। তবে তার বক্তব্যে কিছু যায় আসে না। রাজ্যের মানুষ চোরেদের জেলযাত্রা দেখতে প্রস্তুত বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের। পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূল কোনো সাংবিধানিক বা কোনো প্রশাসনিক পদের তোয়াক্কা করে না। তা না হলে তারা পুলিশকে এইভাবে ব্যবহার করত না। স্বাভাবিকভাবেই তাদের দলের বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর বিধানসভার স্পিকারের দায়িত্ব নিয়ে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় যে এমন সব আলটপকা মন্তব্য করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। তবে এসব বলে তিনি দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করলেও তাতে কেউ বিচলিত হচ্ছে না। যেভাবে তৃনমূল নেতাদের জেলে যাওয়ার সংখ্যা বাড়ছে তাতে আগামী দিনে রাজ্য বিধানসভায় কতগুলো আসন তৃণমূলের শূন্য হয়ে পড়ে থাকে, সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা। আপনার মতামত জানান -