ফের প্রকাশ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, দলের একাংশের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তৃণমূল বর্ধমান রাজনীতি রাজ্য December 17, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রাজ্যের শাসক দল তথা তৃণমূল শিবির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে জেরবার হয়ে চলেছে। অবস্থা সামাল দিতে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসরে নামলেও পরিস্থিতির যে বিশেষ কিছুই বদল হয়নি তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। একের পর এক দলনেতা, কর্মীর দলত্যাগের খবরে রাজ্যজুড়ে যখন তৃণমূলের গড়ে ভাঙন ধরেছে, ঠিক সেসময় আবারও নতুন করে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া এলাকায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খবরে অস্বস্তির মুখে তৃণমূল। সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলরই দলের একাংশের বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলেছেন। এই ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। মঙ্গলবার কাটোয়া শহরের মাধবীতলায় দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন কাটোয়া পুরসভা প্রশাসকমন্ডলীর সদস্য তথা জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অমর রাম। সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর সঙ্গে ছিলেন তিন ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর শ্যামল ঠাকুর, প্রণব দত্ত ও ভাস্কর মন্ডল। তাঁরা প্রত্যেকেই দাবি করেছেন, পরিস্থিতির বিচার চেয়ে তাঁরা দল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছেন। যদি তাঁদের প্রতি সুবিচার না করা হয়, তবে তাঁরা দল ছাড়ার ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন ইতিমধ্যে। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে অমর রাম দাবি করেছেন, 2015 সালে পুর নির্বাচনে তৃণমূল কর্মী ইন্দ্রজিৎ সিংহ খুন হন। পরে পুরসভার ক্ষমতায় তৃণমূল আসলেও রাজ্য নেতৃত্ত্বের ইচ্ছা কিন্তু যাঁরা খুনে অভিযুক্ত ছিল, তাঁরা আজকে দলে যোগ দিয়ে একেবারে প্রথম সারিতে চলে এসেছে। এ প্রসঙ্গে অভিযোগের তীর নিক্ষেপ করা হয়েছে তৎকালীন জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসের উপরেও। এদিন অমর রাম অভিযোগ করেন, অরূপ বিশ্বাস কোনকিছু বিচার না করেই তাঁকে পুরপ্রধান পদ থেকে সরিয়ে দেন। পাশাপাশি বিধায়কের লোকজন ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন যাতে দল ছেড়ে অমর রামসহ বিক্ষুব্ধরা বিজেপিতে চলে যান বলে দাবী করেন অমর রাম। এদিন অমর রাম আরও অভিযোগ করেন, পুর প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য হলেও তাঁকে দলীয় ক্ষেত্রে কোন কিছুই জানানো হয়না। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এমনকি জেলার বইমেলাতেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি তাঁকে বলে জানিয়েছেন অমর। আর এদিন সবথেকে চাঞ্চল্যকর দাবি করেন অমর রাম। তিনি জানান, বর্তমানে যারা মিটিং-মিছিল করছেন তৃণমূলের হয়ে, তাঁদের 50% ই তৃণমূলকে ভোট দেবেন না। তাই বাধ্য হয়েই দলের মধ্যে থেকে এই কথা বলতে বাধ্য হয়েছেন অমর। এ প্রসঙ্গে জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের উদ্দেশ্যে অমর রাম অভিযোগ জানিয়ে বলেন, জেলা সভাপতি তাঁদের কোনো সমস্যার কথা শোনেন না। অন্যদিকে অভিযোগকারী প্রাক্তন কাউন্সিলর শ্যামল ঠাকুর জানিয়েছেন, দল কি করে সেদিকে নজর রাখছেন তাঁরা। অন্যদিকে বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মিলেমিশেই কাজ করা হচ্ছে মানুষের জন্য। কিন্তু কেন অমর রামসহ বাকিরা এ ধরনের অভিযোগ করছেন তা তিনি বুঝতে পারছেন না অন্যদিকে দলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ এর সঙ্গে যোগাযোগ করা গেলেও তাঁর কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি দলীয় কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকার দরুণ। তৃণমূল শিবির এই মুহূর্তে ব্যাপক বিপর্যয়ে শামিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ প্রায় প্রতিদিন তৃণমূল ছেড়ে হেভিওয়েট নেতারা বেরিয়ে যাচ্ছেন। আর এই দলত্যাগ একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের অনেকেই। একই সাথে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলস্বরূপ ক্রমশ তৃণমূল গড়ে ফাটল চওড়া হচ্ছে। আপাতত দেখার এই জটিল পরিস্থিতি থেকে তৃণমূল আদৌ বেরোতে পারে কিনা একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে। আপনার মতামত জানান -