এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > গনতন্ত্রের এ কোন ভাষা? বিজেপি সাংসদকে গঙ্গায় ছুড়ে ফেলার হুমকি! বকুনি দেবেন মমতা?

গনতন্ত্রের এ কোন ভাষা? বিজেপি সাংসদকে গঙ্গায় ছুড়ে ফেলার হুমকি! বকুনি দেবেন মমতা?


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-তৃণমূল নাকি সভ্য সংস্কৃতির প্রতীক! অথচ রাজনীতিতে ভাষা সংস্কৃতির দিকে বিন্দুমাত্র নজর নেই শাসকদলের। বিধানসভার ভেতরে এবং বাইরে যে কোনো গোপন দলীয় বৈঠকে বারবার নেতা মন্ত্রীদের ভাষা সম্পর্কে সচেতন হওয়ার নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই সচেতনতার বার্তা কি তার জেলার নেতাদের কানে পৌঁছেছে? বর্তমানে রাজ্য রাজনীতিতে যে পরম্পরা দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই নির্দেশ পালন করার সংখ্যা দিনকে দিন তৃণমূলে কমতে শুরু করেছে। গঙ্গা ভাঙন রোধে সমস্যা সমাধানের জন্য জেলা শাসকের অফিসে গিয়ে মানুষের কথা তুলে ধরেছিলেন বিজেপি সাংসদ খগের মুর্মু। আর তাতেই গোঁসা হয়েছে তৃণমূলের। যার কারণে এবার দলীয় সভা থেকে সেই বিজেপি সাংসদ এবং কর্মীদের একেবারে গঙ্গায় ছুঁড়ে ফেলার নিদান দিতে দেখা গেল আব্দুর রহিম বক্সিকে।

প্রসঙ্গত, মালদহের গঙ্গা ভাঙন বড় সমস্যা। প্রচুর মানুষ ঘর ছাড়া। আর সেই ঘরছাড়া মানুষদের দাবি নিয়েই কিছুদিন আগে জেলাশাসকের দপ্তরে গিয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন মালদহ উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু। যে ঘটনায় রীতিমতো গায়ে ছ্যাকা পড়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের। এদিন একটি সভা থেকে প্রকাশ্যে সেই বিজেপি সাংসদ এবং কর্মীদের হুমকি দিতে দেখা যায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সিকে। তিনি বলেন, “আগামী 25 তারিখের মধ্যে যদি এই গঙ্গা ভাঙ্গনের সমস্যার সমাধান না হয়, তাহলে বিজেপি সাংসদ এবং কর্মীদের গঙ্গায় ছুড়ে ফেলা হবে।” আর এখানেই প্রশ্ন, এটা কি গণতন্ত্রের ভাষা হতে পারে? গঙ্গা ভাঙন হতে পারে কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ত্তের মধ্যে রয়েছে। তারা সেই সমস্যার সমাধান করবেন, তা তো ভালো কথাতেও বলা যেত। ভালো ভাষাতেও বলা যেত। নাকি ভালো ভাষাতে কথা বলাও ভুলে গিয়েছেন তৃণমূলের এই সমস্ত নেতারা? শেষ পর্যন্ত গঙ্গায় ছুঁড়ে ফেলার কথা একজন জনপ্রতিনিধির মুখ থেকে শুনতে হবে? বিরোধী রাজনীতি করে বলে কি বিজেপি কর্মী এবং নেতাদের বিন্দুমাত্র সম্মান দেবে না রাজ্যের শাসক দল?

তবে আব্দুর রহিম বক্সীর এই মন্তব্যের পরেই রীতিমতো সোচ্চার হয়ে উঠেছে বিজেপি নেতৃত্ব। গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, এই ধরনের কথাই বর্তমান রাজনীতিতে ট্র্যাডিশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে যত কুরুচিকর কথায় বিরোধীদের আক্রমণ করতে পারবে, তার পয়েন্ট তত বাড়বে। তাই নিজের পয়েন্ট বাড়ানোর জন্যই আব্দুর রহিম বক্সী এই ধরনের কথা বলেছেন। তবে  তৃণমূল নেতার এদিনের এই বক্তব্যের পরিপেক্ষিতে বিরোধীদের মত আগামী দিনে লোকসভা ভোটে তাদেরকেই এই জেলায় মানুষ রাজনৈতিক ভাবে গঙ্গার জলে বিসর্জন দেবে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো বারবার করে বলেন যে, শিষ্টাচার শিখতে হবে, নীতি নৈতিকতা শিখতে হবে। দলের বিধায়কদের আরও বেশি সংযত হতে হবে। তার দলে নাকি একটি শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি রয়েছে ! তবে সেই কমিটি কখন কাজ করবে? গঙ্গা ভাঙনের সমস্যা সমাধানের জন্য জেলা শাসকের কাছে যাওয়াই কি দোষ হয়েছে বিজেপি সাংসদ এবং কর্মীদের? যে কারণে তাদের তৃণমূল বিধায়কের মুখ থেকে এত বড় হুমকি শুনতে হবে? তাহলে কি এবার দলগত দিক থেকে কোনো ব্যবস্থা নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? বকুনি দেবেন আব্দুর রহিম বক্সিকে? নাকি এই ধরনের হুমকির রাজনীতিকেই অব্যাহত রাখতে কোনোই পদক্ষেপ নিতে দেখা যাবে না শাসক শিবিরকে! প্রশ্ন তুলছে সমালোচক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!