এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > হায় রে, শিল্প সম্মেলনে এ কোন বড়াই মমতার! অট্টহাসি বিজেপির!

হায় রে, শিল্প সম্মেলনে এ কোন বড়াই মমতার! অট্টহাসি বিজেপির!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-রাজ্যে এখন আলোচনা করার মত একটাই খবর। সেটা হচ্ছে, শিল্প সম্মেলনের নাম করে রাজ্যের মানুষের কোটি কোটি টাকা নষ্ট করছেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। না, এই অভিযোগ আমরা করছি না। এই অভিযোগ করছে বিরোধীরা। তারা বলছেন যে, শিল্প সম্মেলন তো এর আগেও হয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে কোনো রেজাল্ট এসেছে কি? আগে সেই রেজাল্টের হিসাবটা রাজ্য সরকার দিয়ে আবার শিল্প সম্মেলন করুক। তাতে কারওর কোনো অসুবিধা নেই। এক কথায় বিরোধীরা এটা বোঝানোর চেষ্টা করছে যে, এই রাজ্যে শিল্পের কোনো সম্ভাবনা নেই। সব কিছুকে ধ্বংস করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকার। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য তাতে কান দিতে নারাজ। শিল্প সম্মেলনের শেষ দিনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এমন সব কথা বলে বসলেন, যা শুনে হাসি থামাতে পারছে না রাজ্যের বিরোধী দল। অনেকে তো এটাও বলছেন যে, হাট, বাজারে অনেক সবজি বিক্রেতা রয়েছে, যারা নিজেদের সবজি সব থেকে ভালো, এটা প্রমাণ করার জন্য হাকাহাকি করতে ব্যস্ত থাকেন। বাংলায় শিল্প টানার জন্যও এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে তেমনই চেঁচামেচি করতে দেখা গেল। যে বাংলা এত উন্নত বলে তিনি দাবি করেন, সেই বাংলায় শিল্প সম্মেলনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি এমন সব কথা বললেন, যা দেখে সমালোচনায় সরব হচ্ছে বিরোধী শিবির।

প্রসঙ্গত, এদিন শিল্প সম্মেলনের শেষ দিনে সেখানে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। যেমনটা আশা করা হয়েছিল, তিনি তেমনভাবেই বড় বড় দাবি করে বলতে থাকেন যে, এত মৌ স্বাক্ষর হয়েছে, এত বিনিয়োগ আসবে, ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু আশ্চর্যজনক তার কথায় যেটা মার্ক করার মত, সেটা হচ্ছে, তিনি বলেছেন, সুযোগ কিন্তু বারবার আসে না। অর্থাৎ তিনি নামিদামি শিল্পপতিদের কাছে এটা তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন যে, তার বাংলা সেরা। তাই তার বাংলায় বিনিয়োগ করতে হলে এখনই করতে হবে। ভবিষ্যতে তা না হলে সেই সমস্ত শিল্পপতিরা মস্ত বড় চান্স হাতছাড়া করে ফেলবেন। কিন্তু একজন মুখ্যমন্ত্রী তিনি এতটা নিচে কেন নামবেন? নিজের রাজ্য সেরা, এটা প্রমাণ করার জন্য তিনি কেন এত কথা খরচ করবেন? যদি তার রাজ্য সেরাই হয়, যদি তিনি পরিকাঠামোগতভাবে সত্যিই রাজ্যের উন্নতি করে থাকেন, তাহলে তো সেই খবর শিল্পপতিদের কাছে রয়েছে! বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও তো মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তাকে তো এতো চেঁচামেচি করে রাজ্যে শিল্প আনতে হয়নি। তিনি তো টাটার মতো শিল্পগোষ্ঠীকে রাজ্যে এনেছিলেন। কিন্তু তাদের তাড়িয়ে ছেড়েছেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন, তিনি কি সর্বনাশ করেছেন! ফলে মুখ রক্ষার জন্য শিল্প সম্মেলন করে কিছু শিল্প তো রাজ্যে আনতে হবে। সেই কারণেই শেষ দিনে শিল্পপতিদের কাছে তার তৈরি করা বাংলা সেরা বলে প্রমাণ করার মরিয়া চেষ্টা শুরু করে দিলেন। তেমনটাই বলছেন সমালোচকরা।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে অট্টহাসি তৈরি হয়েছে বিরোধী মহলে। বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, একজন মুখ্যমন্ত্রীর কথার মধ্যে দিয়েই বোঝা যায়, তিনি কিভাবে রাজ্য পরিচালনা করছেন। “সুযোগ বারবার আসে না” বলে তিনি আসলে শিল্পপতিদের‌ শরনাপন্ন হলেন। তিনি তাদেরকে বোঝাতে চাইলেন যে, এই রাজ্যে কেউ বিনিয়োগ করছে না। অন্তত কেউ একজন বিনিয়োগ করে এই রাজ্যটাকে রক্ষা করুন। তা না হলে রাজ্যের মানুষ তৃনমূলকে বিদায় দেওয়ার জন্য তৈরি হয়ে আছে। কারণ কিছুদিন আগেই বিদেশ সফর করে এসেছেন। সেখান থেকে কত শিল্প এলো, তার তথ্য তিনি রাজ্যবাসীকে দেননি। এখন আবার শিল্প সম্মেলন করছেন। অতীতে করা শিল্প সম্মেলন থেকে কি রেজাল্ট এসেছে, তার তথ্যটুকুও দেননি। ফলে বিরোধী দল যেমন চেপে ধরবে রাজ্যকে, তেমনই প্রতিবাদী মানুষরাও এবার পথে নামতে শুরু করবেন। তাই চাপে পড়েই মুখ্যমন্ত্রী শিল্প সম্মেলনের শেষ দিন এই সমস্ত কথা বলতে বাধ্য হয়েছেন বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের‌।

পর্যবেক্ষকদের মতে, যে রাজ্যে দিনের পর দিন খুন, সন্ত্রাস, গুলি চলে, সেই রাজ্য নিয়ে বড়াই করার মত কিছু নেই। মুখ্যমন্ত্রী এই সমস্ত কিছুকে ধামাচাপা দিয়ে যাতে ছিটেফোঁটা হলেও শিল্প আসে, তার জন্য মরিয়া চেষ্টা শুরু করে দিলেন। কারণ তিনিও খুব ভালো মত জানেন, এই শিল্প সম্মেলন সেরে ওঠার পর বিধানসভার অধিবেশন শুরু হলে বিরোধীরা তাকে এই বিষয় নিয়ে চেপে ধরবে। আর তখন কোনো তথ্য দিতে না পারলে চরম বিপাকে পড়তে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। তাই সবদিক বুঝেই শিল্প সম্মেলনের একদম শেষ মুহূর্তে শিল্পপতিদের কাছে বিনিয়োগ করার মরিয়া চেষ্টা করেছেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান। কিন্তু সকলেই বাংলার দৈনদশা প্রত্যক্ষ করছেন। তাই যে সমস্ত চোর কেষ্ট, বিষ্টুরা বাংলাকে ঘিরে ধরেছে, তারা বিদায় না নিলে এই রাজ্যে শিল্প তৈরি করার মত আগ্রহ দেখাবেন না কোনো শিল্পপতিরাই। এক্ষেত্রে নিজের তৈরি করা রাজ্যকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বড়াই কোনোমতেই কাজে দেবে না। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!