এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > তৃণমূলে গেলেই মিলবে পদ, টাকাপয়সা! ‘সৎ’ বামনেতার কাছে ‘অফার’ নিয়ে পিকের ‘টীম’ পৌঁছাতে, যা হল!

তৃণমূলে গেলেই মিলবে পদ, টাকাপয়সা! ‘সৎ’ বামনেতার কাছে ‘অফার’ নিয়ে পিকের ‘টীম’ পৌঁছাতে, যা হল!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গত ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস তেমন একটা আশানুরূপ ফল করতে পারেনি। এরপর আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনে নিজেদের জয়ের ধারাকে অব্যাহত রাখতে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে ভোটকুশলী পিকে ও তাঁর টিম আইপ্যাককে রাজ্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সম্প্রতি আইপ্যাক টিম রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠনকে মজবুত করতে ও দলে স্বচ্ছ মানুষের সংখ্যা বাড়াতে অন্য দলের বিভিন্ন সৎ সদস্যদের তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান এর জন্য বারবার আহ্বান করছেন।

সূত্রের খবর, অন্য দলের যে সমস্ত সদস্যদের সততার ব্যাপারে নাম আছে, সেই সমস্ত সদস্যদের তৃণমূল দলে যোগদান করানোর জন্য রীতিমতো ফোন করছেন এই টিম আইপ্যাক। এই পরিস্থিতিতে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি ব্লকে ১০ বছরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক প্রবীণ লক্ষীকান্ত রায়ের কাছে প্রথমে ফোন করে তারপর সশরীরে হাজির হলেন পিকে টিমের দুজন সদস্য বলে দাবি করা হয়েছে।

বাম দলের প্রাক্তন বিধায়ক লক্ষীকান্ত রায় জানিয়েছেন, প্রথমে দুজন অজ্ঞাতপরিচয় লোক তাকে ফোন করে বলেছিলেন, “আপনি সৎ, তৃণমূলে যোগ দিন”। এই দুই অজ্ঞাত পরিচয় মানুষ নিজেদের পিকে টিমের সদস্য বলে পরিচিত করেছেন বলে জানিয়েছেন লক্ষ্মীকান্তবাবু। প্রথমে তাঁকে তৃণমূলে যোগ দেবার অনুরোধ আসে, এরপর তাঁকে পদ ও অর্থের লোভ দেখানো হয়। বলা হয়, “তাঁকে দরকার, কেননা তিনি সৎ।”

সিপিএমের প্রবীণ ও প্রাক্তন বিধায়ক লক্ষীকান্তবাবু প্রথমে তাঁদের প্রস্তাব সম্পূর্ণভাবে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি অপরিচিত ফোনে আলাপরত ব্যক্তিকে নিজের বাড়িতে আসার জন্য আমন্ত্রণ করেন। এরপরই দুজন ব্যক্তি তাঁকে জানান যে, জলপাইগুড়িতে টিম আইপ্যাকের দায়িত্বে যিনি রয়েছেন, তিনিই তাঁর বাড়ি গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন। এটাও জানান যে, এই ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষে বিহারবাসী হলেও বর্তমানে তিনি জলপাইগুড়িতেই আছেন ও টিমের কাজ করছেন।

এরপর লক্ষীকান্তবাবুর জলঢাকা নদী তীরবর্তী বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হন দুজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। স্থানীয় রীতি অনুযায়ী অজ্ঞাত পরিচয় এই দুজনকে প্রথমে পান ও সুপারি দিয়ে অভ্যর্থনা করেন তিনি, তারপর তাঁদের সঙ্গে বাড়ির গাছতলায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা তাঁর ঘরের ভেতরে গিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেন। লক্ষীকান্তবাবু প্রশ্ন তোলেন, একজন কমিউনিস্ট পার্টির লোকের সঙ্গে তৃণমূল ‘এজেন্টদের’ কি এমন গোপন কথা থাকতে পারে?

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এরপর লক্ষ্মীকান্তবাবুর টালির চাল দেওয়া মাটির ঘর দেখে বিস্মিত হয়ে তারা জিজ্ঞাসা করেন, ১০ বছর ধরে বিধায়ক থেকে আর ১৫ বছর ধরে পঞ্চায়েত সমিতিতে থেকে তাঁর বাড়ির এই করুন দশা কেন? কেনই বা তিনি নিজের আর্থিক উন্নতি করতে পারেননি? অজ্ঞাত পরিচয় দুই ব্যক্তির এই প্রশ্নের উত্তরের লক্ষীকান্ত বাবু জানান, বামপন্থীদের কি তারা চোর বলে মনে করেন?

লক্ষীকান্ত বাবু আরো জানান, যে বিশেষ দলের হয়ে তাঁরা কাজ করতে নেমেছেন, সেদলেই এরকম চুরি কেলেঙ্কারী হয়ে থাকে। তবু নাছোড়বান্দা দুজন ব্যক্তি তাঁকে তৃণমূলে যোগ দেবার বারবার অনুরোধ জানাতে থাকেন বলে জানা গেছে। তারা জানায়, সাম্প্রতিক দুর্নীতির পরিবেশে, তাঁর মত সৎ নেতার তৃণমূলের বিশেষ প্রয়োজন আছে। আর সেখানে গেলে টাকা, পদ দুটিই তিনি পাবেন।

এরপর লক্ষ্মীকান্ত বাবু তাদের নিজের রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে জানান। বলেন, ১৯৬৭ সালে তাঁর প্রথম বিপিএলএফ এর সঙ্গে সংযুক্তির কথা। তারপর ক্রমান্বয়ে ছাত্র, যুব, কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হবার কথা । বর্তমানে অশীতিপর অবস্থায় শারীরিক কারণেই তিনি রাজনীতি থেকে সরে পড়েছেন নিজের মতাদর্শ বিসর্জন দেননি। দুই ব্যক্তিকে তিনি জানান যে, তিনি গরু, ছাগল নন তিনি একজন কমিউনিস্ট আদর্শে বিশ্বাসী কর্মী। তাই দলবদল তার পক্ষে অসম্ভব।

এভাবে একজন বাম নেতাকে জোর করে তৃণমূলে তৃণমূলে সামিল করতে গিয়ে মুখ পুড়লো টীম পিকের বলে দাবি করা হয়েছে বাং শিবিরের তরফে। তবে নিজেদের টীম পিকের সদস্য বলে বলে দাবি করা এই দুই ব্যক্তি, আদৌ টীম পিকের সদস্য কিনা তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। সব মিলিয়ে, এই ঘটনা সামনে আসতেই রাজ্য রাজনীতিতে রীতিমত ঝড় উঠে গেছে। অনেকে তো একধাপ এগিয়ে দাবি করছেন, প্রকৃত ঘটনা সামনে আসার জন্য এর যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিৎ।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!