এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > সিপিএমের ‘পুরোনো’ ফর্মুলাতেই কি ব্রিগেডের মহাসমাবেশের মাঠ ভরাতে চলেছে শাসকদল? জল্পনা তুঙ্গে

সিপিএমের ‘পুরোনো’ ফর্মুলাতেই কি ব্রিগেডের মহাসমাবেশের মাঠ ভরাতে চলেছে শাসকদল? জল্পনা তুঙ্গে


আসন্ন ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচন জাতীয় রাজনীতিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। একদিকে কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে যেমন এক জোট বেঁধেছে বিরোধীরা, ঠিক তেমনই দ্বিতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর আসনে যাতে পুনরায় বসতে পারেন নরেন্দ্র মোদী সেজন্য পাল্টা বিভিন্ন কর্মসূচি নিচ্ছে গেরুয়া শিবিরও। আর শাসক-বিরোধী এই দোলাচলের মাঝেই এবার বাংলা থেকেই বিজেপিকে উৎখাতের ডাক দিয়ে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে সরব হতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

আগামী ১৯ শে জানুয়ারি কলকাতার ব্রিগেডে দেশের বিভিন্ন অ-বিজেপি দলগুলিকে নিয়ে একটি জনসভার ডাক দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই জনসভায় রেকর্ড সংখ্যক মানুষের ভিড় করতে এখন থেকেই তৎপর হয়ে উঠেছে রাজ্যের শাসক দল। কেননা এই জনসভায় যেমন একদিকে বিভিন্ন রাজ্যের অ-বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী তথা বিভিন্ন বিরোধীদলের শীর্ষনেতারা উপস্থিত থাকবেন, ঠিক তেমনি গোটা ভারতবর্ষ দেখবে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের এই বিরোধী জোটের সমাবেশ। ফলে সেইখানে রেকর্ড সংখ্যক মানুষের ভিড় করলে অনেকটাই চাপে ফেলা যাবে বিজেপিকে বলে মনে করছেন শাসকদলের নেতা-কর্মীরা।

ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় গিয়ে তৃণমূলের শীর্ষস্তরের নেতারা এই ব্রিগেড সমাবেশের সমর্থনে প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন। সাধারণ মানুষকে এই ব্রিগেডের সভায় নিয়ে আসতে জেলার নেতাদের নির্দেশ দিচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু এবারে সেই সমাবেশে দলীয় কর্মীদের সপরিবারে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাতে গিয়ে নিজের পরিচিত এক বামপন্থী শিক্ষকের উদাহরণ টেনে আনলেন খোদ তৃণমূল মহাসচিব রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জানা গেছে, গত শুক্রবার নদিয়ার কৃষ্ণনগরের রবীন্দ্রভবনে ব্রিগেড সমাবেশের একটি প্রস্তুতি সভার ডাক দেয় তৃণমূল কংগ্রেস আর সেখানে উপস্থিত হয়ে নদীয়া জেলা থেকে যাতে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ এই ব্রিগেডে যোগ দেয়, সেই ব্যাপারে তৃণমূল মহাসচিব দলীয় নেতা কর্মীদের ‘টিপস’ দেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সূত্রের খবর, পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “১৯৭৭ সালে যখন বামেরা ক্ষমতায় এসেছিল তখন আমি কলেজের ছাত্র। বামেদের জয়ের পর তাঁরা ব্রিগেডের ডাক দিয়েছিল। আর সেই বামেদের সমাবেশে তাঁদের দলের প্রত্যেকেই নিজেদের পরিবার নিয়ে গিয়েছিল। আমি এমন একজনকে জানি যিনি আমার শিক্ষক ছিলেন। তিনিও সদ্যোজাত শিশুকে নিয়ে এবং তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে সেই ব্রিগেড সমাবেশে যাচ্ছিলেন – আমি দূর থেকে দেখছিলাম”। এই ঘটনার উল্লেখ করে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে তৃণমূল মহাসচিব এর আহ্বান, “সেদিন পরিবর্তনের টানে সকলে সামিল হয়েছিলেন। আর আজ ভারতবর্ষজুড়ে যে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে তাঁর বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে রাস্তায় নামতে হবে। এবার পরিবারকে নিয়ে চলো – এই প্রতিজ্ঞা করতে হবে”।

রাজনৈতিক মহলের মতে, তাহলে কি এবার দলীয় কর্মীদের পরিবারের উপরই বেশি ভরসা রাখছে তৃণমূল? কেননা একটি পরিবারে কম করে তিন থেকে পাঁচ জন সদস্য পাওয়া যাবে। ফলে সেই পরিবারকে ধরেই এবারের জনসভাকে সার্থক করে তুলতে চায় ঘাসফুল শিবির। অন্যদিকে এদিনের ব্রিগেডের প্রস্তুতি সভা থেকে বিজেপির উদ্দেশ্যেও কড়া সতর্কবার্তা দেন তৃণমূল মহাসচিব। তিনি বলেন, “বিজেপির নামই করবেন না। ওদের নাম করেই ওদের তুলে ধরা হচ্ছে”! পাশাপাশি নদীয়া জেলায় শাসকদলের খারাপ ফলাফলের জন্য দলীয় নেতাদের একাংশই যে দায়ী এদিন সেই ব্যাপারেও বার্তা দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

তিনি বলেন, “কোথাও কোথাও আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগতে শুরু করেছি। কেউ কেউ মনে করেন যে, আমাদের কেউ কিছু করতে পারবে না। তাদের উদ্দেশ্যে বলি, আপনারা জনগণকে বোঝেননি”। অন্যদিকে নির্বাচনের সময় এলেই নিজের পরিবারের সদস্যদের দাঁড় করানোর জন্য নেতাদের হুড়োহুড়ি প্রসঙ্গেও এদিন একাংশকে কটাক্ষ করেন তৃনমূল মহাসচিব। “কাকাকে দাঁড় করাও, মামাকে দাঁড় করাও, বউকে দাঁড় করাও – এবার এই জিনিস আর চলবে না” – বলে সকলকে সতর্ক করে দেন তিনি। পাশাপাশি এদিনের এই সভা থেকে আগামী ১৯ শে জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশের সমর্থনে এখন থেকেই সকলকে দেওয়াল লিখনের নির্দেশ দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সব মিলিয়ে আসন্ন ব্রিগেড সমাবেশের আগে সেখানে রেকর্ড সংখ্যক মানুষের জনসমাবেশ করাতে এবার প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএমের দেখানো পথেই দলীয় কর্মীদের পরিবারের ওপরই ভরসা রাখছে রাজ্যের শাসকদল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!