প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- গত শনিবার ফেসবুক পোস্ট করে তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি আর রাজনীতিতে থাকতে চান না। এক্ষেত্রে রাজনীতি থেকে বিদায় নেওয়ার পাশাপাশি তিনি তার সাংসদ পদ থেকেও ইস্তফা দিতে চান বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। আর তারপর থেকেই রীতিমতো তাকে নিয়ে চর্চা শুরু হয় বঙ্গ রাজনীতিতে। তবে ফেসবুকে তিনি রাজনীতি ত্যাগ করার কথা বা সাংসদ পদ ছাড়ার কথা জানালেও, সেভাবে এই ব্যাপারে কোনোরূপ ইস্তফাপত্র প্রকাশ্যে আনতে দেখা যায়নি তাকে। পাশাপাশি বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকেও তার মান ভাঙানোর জন্য একাধিক নেতা তার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন।

যার জেরে মনে করা হয়েছিল, ধীরে ধীরে বরফ গলতে শুরু করবে। এমনকি তৃণমূলের পক্ষ থেকেও কটাক্ষ করে বলা হয়েছিল, বাবুল সুপ্রিয় নাটক করছেন। অবশেষে নিজের সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে জানিয়ে দিলেন সেই বাবুল সুপ্রিয়। যেখানে অতীতের করা মন্তব্য থেকে কিছুটা হলেও সরে এলেন তিনি। রাজনীতিতে না থাকলেও সাংসদ পদ যে তিনি ছাড়ছেন না, সেই কথা নিজের ফেসবুক পোস্টের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরেছেন আসানসোলের সাংসদ।

বস্তুত, বাবুল সুপ্রিয় ফেসবুক পোস্টে রাজনীতি ত্যাগ করার কথা বলার পর থেকেই তার অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। দফায় দফায় বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে তার বৈঠকের পর মনে করা হয়েছিল, এবার হয়ত সমস্ত দ্বন্দ্ব মিটে যাবে এবং নিজের ফেসবুক পোস্ট তুলে নেবেন বাবুল সুপ্রিয়। কিন্তু সেই পথে হাঁটতে দেখা গেল না তাকে। বরঞ্চ রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণরূপে বিদায় নেওয়ার কথা জানিয়ে দিলেন তিনি।

সূত্রের খবর, এদিন একটি ফেসবুক পোস্ট করেন বাবুল সুপ্রিয়। যেখানে তিনি লেখেন, তিনি রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণভাবে বিদায় নিচ্ছেন। তবে সাংসদ হিসাবে তিনি তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবেন বলে সেই পোষ্টের মধ্যে দিয়ে জানিয়ে দেন বাবুলবাবু। অর্থাৎ এতদিন বিজেপি সাংসদ থাকলেও, এবার কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত না থেকে সাংসদ হিসেবে তিনি আসানসোলের মানুষের পাশে থাকবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিশিষ্ট এই সঙ্গীতশিল্পী।

তবে বাবুল সুপ্রিয় এই ধরনের সিদ্ধান্ত প্রকাশ্য জানিয়ে দেওয়ার পর তাকে নিয়ে নানা মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। অনেকে বলছেন, এ আসলে ধরি মাছ না ছুঁই পানির মত বিষয়। প্রথমে ফেসবুক পোস্ট করে এখন যদি তা তুলে নেওয়া হয়, তাহলে বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হবে। এমনকি জনমানসে তার সম্পর্কে ভুল বার্তা যেতে পারে। তাই বিজেপি নেতৃত্বের দেখানো পথে হেটে এখন শুধুমাত্র সাংসদ পদ ব্যবহার করে রাজনীতির সঙ্গে দূরে থাকার কথা জানিয়ে দিলেন বাবুল সুপ্রিয়। তবে পরবর্তীতে হয়ত বা দেখা যাবে, তিনি আবার বিজেপির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।

আসলে এই সমস্ত কিছুই বিজেপির অভ্যন্তরীণ পরিকল্পনা। ড্যামেজ কন্ট্রোল করতেই এখন চাপে পড়ে বিজেপি নেতৃত্বের নির্দেশে বাবুল সুপ্রিয়র এই ধরনের সিদ্ধান্ত বলে কটাক্ষ করছেন একাংশ। যদিও বা অনেকে বলছেন, রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়ে এখন নিজের মতো করে নিজের পুরনো জগত অর্থাৎ সংগীত জীবনে ফিরে যেতে চাইছেন বাবুল সুপ্রিয়। আর সেই কারণেই সমস্ত রাজনৈতিক তিক্ততা মিটিয়ে শুধুমাত্র সাংসদ পদ রেখে আসানসোলের মানুষের পাশে থেকে নিজের দায়িত্ব পালন করতে চাইছেন তিনি। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।