এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কন্যাশ্রীদের সাবলম্বী করে তোলার বিশেষ প্রকল্প পেল ইউনিসেফের ভূয়সী প্রশংসা

কন্যাশ্রীদের সাবলম্বী করে তোলার বিশেষ প্রকল্প পেল ইউনিসেফের ভূয়সী প্রশংসা

কোচবিহারের জেলা প্রশাসনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ইউনিসেফ! গোটা রাজজুড়ে কন্যাশ্রী প্রকল্পের ছাত্রীদের স্বনির্ভর করে তুলতে যে পাঁচটি সেরা এবং সফল মডেল তৈরি করা হয়েছিল,তা মধ্যে স্থান পেল কোচবিহারের ‘সমর্থা’। কোচবিহার জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে,জেলার কন্যাশ্রী প্রকল্পের মেয়েদের হাতের কাজে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্যে এই ‘সমর্থা’প্রকল্প চালু করেছিল জেলা প্রশাসন।

বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় এর প্রশিক্ষণ চলছে। এই ‘সমর্থা’প্রকল্পই নজর কাড়ল ইউনিসেফের। বর্তমানের কন্যাশ্রীদের সাবলম্বী করে তোলার কোচবিহার জেলা প্রশাসনের এই প্রয়াসের ভূয়সী প্রশংসা করল ইউনিসেফ। শিক্ষার জগতে এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি জেলার কন্যাশ্রীরা যে সাবলম্বী হতে ওঠার পথেও সমানভাবে অগ্রসর হতে পারে তার জন্যেই আরো বেশি সংখ্যক মেয়েদের এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত করে তোলার চেষ্টা শুরু হয়েছে প্রশাসনিক স্তরে।

এই প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক স্তরে সমর্থা যেভাবে প্রশংসা পেল তাতে এই প্রকল্পের কাজের জন্যে বাড়তি উৎসাহ পেলেন জেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। এ ব্যাপারে,কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “সমর্থা’র মাধ্যমে আমরা কন্যাশ্রীর মেয়েদের নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। ইউনিসেফ এই উদ্যোগকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছে।”

জেলা প্রশাসনিক সূত্রের তরফ থেকে জানা গিয়েছে,রাজ্যজুড়ে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছিল ইউনিসেফ। সেখানে ‘সমর্থা’-কে তুলে ধরেছিল কোচবিহার জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে জেলার ৫৪৭ জন কন্যাশ্রীর ছাত্রীকে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জেলার বেশিরভাগ ব্লকেই এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এবং এই প্রশিক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন বিশেষজ্ঞদের একটি বিশেষ টিম। আরো বেশি সংখ্যক ছাত্রীকে যাতে এই প্রকল্পের আওতায় আনা যায়,জেলা প্রশাসনিক স্তরে তারই চেষ্টা চলছে বর্তমানে।

কোচবিহার পুরসভা ও কোচবিহার-১ ব্লকে ৮২জন কন্যাশ্রীর ছাত্রীকে রঙিন মাছ চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কোচবিহার-২ ব্লকে ৯০ জন ছাত্রীকে উলবোনা, বাঁশের নানা ধরনের হস্তশিল্প, গয়না তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। দিনহাটা-১ ব্লকেও ৩৫ জন ছাত্রীকে নানা ধরনের হস্তশিল্পের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

দিনহাটা-২ ব্লকে ৩০জন ছাত্রীকে কাগজ ও কাপড় দিয়ে নানা ধরনের হস্তশিল্প তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। দিনহাটা পুর এলাকায় ৫০জন ছাত্রীকে কাগজ ও আঁকার নানা কাজ শেখানো হচ্ছে। হলদিবাড়ির ৪৫জন ছাত্রীকে গয়না তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। মাথাভাঙা-১ ব্লকে ৩০জন ছাত্রীকে গয়না ও ব্যাগ তৈরি এবং মাথাভাঙা-২ ব্লকে ৩০জন ছাত্রীকে সূচিশিল্পের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। মাথাভাঙা পুর এলাকা ২৯জন ছাত্রীকে ব্যাগ তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। মেখলিগঞ্জে মোট ৬০জন ছাত্রীকে ক্রিস্টাল ব্যাগ ও খেলনা তৈরির কাজ শেখানো হচ্ছে।

সিতাইয়ের ৩০জন ছাত্রীকে সূচিশিল্প ও ফাইল তৈরির কাজ শেখানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শীতলকুচির ৩৫জন ছাত্রীকে ফুলদানি তৈরির কাজ শেখানো হচ্ছে। তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের ৩০জন ছাত্রীকে বিউটিশিয়ানের কোর্স করানো হচ্ছে। তুফানগঞ্জ-২ ব্লকে ৩০জনকে গয়না তৈরি ও তুফানগঞ্জ পুর এলাকার ৩৪জনকে মোমবাতি তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে,বলে জানা গিয়েছে।

জেলা প্রশাসনিক অাধিকারিকদের বক্তব্য, ভবিষ্যতে এই রাজ্যের কন্যাশ্রীরা যাতে কর্মসংস্থানের নতুন দিশা পায় তার জন্যেই রাজ্যসরকারের তরফ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পড়াশুনোর পাশাপাশি কন্যাশ্রীদের সাবলম্বী হতেও সাহায্য করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কন্যাশ্রীদের এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দিতে প্রশাসনিক তৎপরতা যেমন রয়েছে তেমনি শেখার আগ্রহও রয়েছে মেয়েদের মধ্যে। তাই প্রকল্প এতো প্রসংশিত হচ্ছে বিভিন্নমহলে। এবার থেকে কন্যাসন্তানদের সাবলম্বীভাবে তৈরি করার ব্যাপারে অভিভাবকদেরও সচেতন করার উদ্যোগ নিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। আশা করা হচ্ছে, আগামী দিনে আন্তর্জাতিকস্তরে এই প্রকল্প আরো সম্মান অর্জন করবে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!