এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > কি কষ্ট! ভাইপোর জন্য দরদ উথলে উঠছে মমতার! বঙ্গ পুলিশ আরও নৃশংস? সোচ্চার বিরোধীরা!

কি কষ্ট! ভাইপোর জন্য দরদ উথলে উঠছে মমতার! বঙ্গ পুলিশ আরও নৃশংস? সোচ্চার বিরোধীরা!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- দিল্লিতে ধরনা কর্মসূচির পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দপ্তরে গিয়ে তার দেখা না পেয়ে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল যে অসভ্যতা করেছে, তার জবাব দিয়েছে দিল্লী পুলিশ তেমনটাই দাবি করছে বিরোধীরা। কিন্তু তৃণমূল অবশ্য বলছে, পুলিশ দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূলের সাংসদ এবং রাজ্যের মন্ত্রীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এসবের মধ্যেই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, দিল্লির এই আন্দোলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা যাওয়া তো দূরের কথা। কলকাতা থেকে তিনি একটি অডিও বার্তা পর্যন্ত দেননি। কিন্তু ভাইপো গ্রেপ্তার হওয়ার পরেই পিসির যেন দরদ উথলে উঠতে শুরু করেছে। তাই শেষ পর্যন্ত টুইট করে একদিকে পুলিশ এবং অন্যদিকে বিজেপিকে আক্রমণ করে হাল ধরার চেষ্টা করলেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের দপ্তরে অসভ্যতা করার সময় তৃণমূলের নেতাদের কয়েক মিনিটের জন্য গ্রেপ্তার করে রাখা হয়েছে, তাতেই এত অস্বস্তি শুরু হয়ে গিয়েছে সেই তৃণমূল দলের নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের? কিন্তু তার সরকারের পুলিশ যখন দিনের পর দিন, ঘন্টার পর ঘন্টা বিরোধী নেতা কর্মীদের আটক করে রাখে, তখন কেন এই সহানুভূতি জাগে না বাংলার পুলিশ মন্ত্রীর? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সোচ্চার হচ্ছে বিরোধী শিবির।

প্রসঙ্গত, এদিন দিল্লিতে ধর্না দেওয়ার পর তৃণমূলের কর্মসূচির মধ্যেই ছিল যে, তারা কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সঙ্গে দেখা করবেন। তাদেরকে সময় দেওয়া হয়েছিল সন্ধ্যে ছটা। তবে যে কোন কারণেই হোক, মন্ত্রী তাদের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। কারণ একজন মন্ত্রীর বহু কাজ থাকে। আর বাংলায় যে এই একশো দিনের কাজে দুর্নীতি হয়েছে, তা তো স্পষ্ট। তাই তৃণমূল যখন 50 লক্ষ চিঠি নিয়ে সেই কেন্দ্রের দপ্তরে গিয়েছে, তখন সেখানে তারা মন্ত্রীর দেখা পায়নি। আর তারপরেই প্রতিবাদ শুরু করে দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের সাংসদ এবং বাংলার মন্ত্রীরা। কিন্তু একসময় তা সহ্যের সব সীমাকে অতিক্রম করে। যার কারণেই পুলিশ তাদেরকে তুলে নিয়ে গিয়ে আটক করে। আর বাংলা থেকে বসে এই দৃশ্য সহ্য করতে পারেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনো কিছুতেই তিনি মেনে নিতে পারছেন না যে, দলের সাংসদ এবং তার ভাইপোকে এইভাবে পুলিশ দিয়ে হ্যারাস করা হবে! অবশ্য তিনি তা মানবেন কি করে? কারণ তার ভাইপো তো কোনোদিন বিরোধী রাজনীতি করেনি, বিরোধী আন্দোলন তো তিনি জানেন না। তাই পুলিশকে দেখে এদিন তার ভাইপোও কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছে বলেই কটাক্ষ করছে বিরোধীরা।

যার জেরে একটি টুইট করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রী লেখেন, “আজ গণতন্ত্রের জন্য একটি অন্ধকারময় দিন। অশুভ দিন। দিল্লী পুলিশ বিজেপির শক্তিশালী হাত হিসেবে কাজ করছে। আমাদের প্রতিনিধিদের নির্লজ্জভাবে হেনস্থা করা হয়েছে। যারা সত্যি কথা বলার সাহস দেখিয়েছিল, তাদেরকে অপরাধীদের মতো ভ্যানে তুলে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। অহংকার তাদের অন্ধ করে দিয়েছে। তাদের ঔদ্ধত্যের কোনো সীমা নেই। বাংলার কন্ঠকে রোধ করতে তারা সব সীমা লংঘন করেছে।” আর এখানেই বিরোধীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ছে যে, আপনি তো বাংলার পুলিশ মন্ত্রী। তাহলে আপনার রাজ্যে কোনো পরিস্থিতির অবনতি হলে কোনো সরকারি দপ্তরে কেন বিরোধীদের ঢুকতে পর্যন্ত দেওয়া হয় না? কিছুদিন আগেই তো রাজ্যের বিরোধী দলনেতা স্বাস্থ্য ভবনে যেতে চেয়েছিলেন। তাকে এবং বিরোধী দলের বিধায়কদের সেখানে পুলিশ দিয়ে কিভাবে হেনস্থা করেছে, তা তো গোটা রাজ্যের মানুষ দেখেছে। আর সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের এই দপ্তরে তো আঞ্চলিক দল তৃণমূলের সর্বভারতীয় নেতাদের ঢুকতে দেওয়া হয়েছিল। তাদের জলের বোতল দেওয়া হয়েছিল। তাদের চেয়ারে বসতে দেওয়া হয়েছিল। হতে পারে মন্ত্রী যেকোনো কারণে তাদের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। কিন্তু তারপর তারা যে অসভ্যতা করেছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। যার কারণেই পুলিশ কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলেই দাবি বিরোধীদের।

গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, তার ভাইপো তো জীবনে বিরোধী আন্দোলন করেননি। তাই দিল্লিতে অসভ্যতা করার পর পুলিশ যখন আটক করেছে, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় থেকে তার ভাইপোকে নিয়ে হয়তো চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। যার কারণেই তার দরদ উথলে উঠেছে এবং চিন্তা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে যে, শেষ পর্যন্ত টুইট করে বিজেপির প্রশাসন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে হলো বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে। যে মুখ্যমন্ত্রীর আমলে বাংলার প্রশাসনের মেরুদন্ড ভেঙে গিয়েছে, তিনি আবার দিল্লী পুলিশকে নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন! কিছু কিছু জিনিসের কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে। আর তা ভাঙলে পুলিশ কড়া পদক্ষেপ নেবেই। কিন্তু রাজনৈতিক নেতাদের তো সব পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকা উচিত। সেখানে শুধুমাত্র একটু পুলিশ আটক করেছে এবং কিছু সময় পর ছেড়েও দিয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে ললিপপ নেতারা যে নাকে কান্না কাঁদছেন, তা দেখে বিরোধীরা একটা কথাই বলছেন যে, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের মত অসভ্যতা অন্তত দিল্লী পুলিশ করেনি। বাংলার পুলিশ বিরোধীদের দমন করতে, তাদের কণ্ঠরোধ করতে কি পরিমান অত্যাচারই না করে। যদি সেই সম পরিমাণ অত্যাচার দিল্লী পুলিশ করত, তাহলে এই বীরপুঙ্গব নেতারা কি বলতেন? দিনের শেষে তেমনই প্রশ্ন তুলছে সমালোচক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!