পুলিশ-কর্তাকে ঠকাতে গিয়ে পুলিশের জালে কোটি টাকার প্রতারণা চক্র কলকাতা রাজ্য July 7, 2018 সারদা-নারদা-রোজভ্যালি কান্ডের পর ফের সামনে এল নগদ টাকার দুর্নীতি। এবার প্রতারকদের পাল্লায় খোদ প্রাক্তন পুলিশ কর্তা। এই নজিরবিহীন ঘটনাটি ঘটেছে কোলকাতার বাঁশদ্রোনী থানা এলাকায়। অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্তার নাম চন্দ্রকান্ত মহাপাত্র। জানা গেছে, মাসখানেক আগে নর্দান পার্কের বাসিন্দা চন্দ্রকান্তবাবুর কাছে বিমা কোম্পানির পক্ষ থেকে একটি ফোন আসে। সেখানে জানানো হয় যে, তাঁর প্রিমিয়ামের টাকা নির্দিষ্ট সময়ের আগে দিলে মিলবে বিশেষ ছাড়া। ঘটনায় কোনো রকম সন্দেহের অবকাশ ছিল না তাঁর। কারণ চন্দ্রকান্তবাবুর প্রিমিয়ামের টাকা দেওয়ার শেষ তারিখটাও ঠিক-ঠাক বলেছিলো তারা। এরপরই তাকে ফোনে বলা অ্যাকাউন্ট নম্বরে দুটি বিমার প্রিমিয়ামের ৪ লাখ টাকা নির্দ্বিধায় জমা করে দেন চন্দ্রকান্তবাবু। তারপরই জানতে পারেন, তিনি ঠকবাজদের পাল্লায় পড়েছেন। গোটা টাকাটাই ট্রান্সফার করেছেন প্রতারকদের অ্যাকাউন্টে। এরপর আর দেরি না করে চন্দ্রকান্তবাবু বাঁশদ্রোণী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তারপরই গ্রেফতার হন এই প্রতারণা চক্রের অন্যতম মাথা ২১ বছরের মণীশ চিত্রাংস। আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে ——————————————————————————————- এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে। তাকে লাগাতার জেরা করেই উঠে এসেছে মামলা সংক্রান্ত নানা তথ্য। জেরায় মণীশ জানিয়েছে, গত দু’বছর ধরে সে এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত। আগে মণীশ একটি বেসরকারি বিমা কোম্পানির কর্মী ছিলেন। চাকরি চলে যাওয়ার পরও তাঁর কাছে থেকে গিয়েছিল বিমা কোম্পানির ডেটাবেস। যেখানে ছিল গ্রাহকদের বিমা-প্রিমিয়াম সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য। আর সেই ডেটাবেস ব্যবহার করেই যে গ্রাহকদের প্রিমিয়ামের মোটা অঙ্কের টাকা আছে তাঁদেরকেই টার্গেট করত মণীশের চক্র। কমপক্ষে, এখনো অবধি ১ কোটি টাকার প্রতারণা করেছে মণীশ। পুলিশ সূত্র থেকে জানা গেছে, মণীশের হদিশ পাওয়া সহজ ছিল না। দু’টি জিনিসের উপর ভরসা রেখেই তদন্তে নেমেছিল পুলিশ। সেগুলি হল- প্রতারকদের মোবাইল নম্বর। আর যে অ্যাকাউন্ট নম্বরে টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে তার নম্বর। এক তদন্তকারী পুলিশ কর্মী জানান, ফোন নম্বর আর অ্যাকাউন্ট নম্বর থেকে বোঝা যাচ্ছিল, উত্তর-পূর্ব দিল্লির আশপাশের একটি জায়গা থেকে এই কাজ হচ্ছে। কিন্তু সিমকার্ড নেওয়া হয়েছিল ভুয়ো তথ্য দিয়ে। তাই ঠিকানা পেতে সমস্যা হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত তদন্তের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে তদন্তকারীরা উদ্ধার করেন, দিল্লি লাগোয়া উত্তরপ্রদেশের লোনি এলাকার এটিএম থেকে বীমার টাকা তোলা হয়েছে। সেই এটিএম-এ পাওয়া সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে চিহ্নিত করা হয় মণীশকে। আর সেই ছবি নিয়ে মনীশের পাকড়াও করতে গিয়ে মেলে তার আস্তানার হদিশ। তবে তদন্তকারীদের দাবি, এই চক্রের জাল বহুদূর ছড়িয়ে আছে। আছে আরো অনেক পান্ডাও। শুধু এ রাজ্য নয়, তামিলনাড়ু, অসম, ত্রিপুরার বাসিন্দাদেরও একই ভাবে ফাঁসিয়েছে এই চক্র। আপনার মতামত জানান -