বিজেপির বিরোধিতা পোক্ত করতে বাম-কং জোট তৃণমূলের হাত ধরতে মরিয়া? সহযোগিতার আশ্বাস শাসকদলের? কলকাতা বর্ধমান রাজ্য November 29, 2019 বিগত লোকসভা ভোটে রাজ্যে বিজেপি 18 টি আসন দখল করেছিল। তবে এই 18 টি আসন দখল করার পেছনে বামেদের ভোট বিজেপির দিকে যাওয়ার জন্যই তারা এই সাফল্য পেয়েছে বলে দাবি করেছিল রাজনৈতিক মহল। আর বামের ভোট রামে চলে যাওয়ার কারণেই তৃণমূলের এই বিপর্যয় বলে মনে করেছিল একাংশ। কিন্তু লোকসভা ভোটের 6 মাস পেরোতে না পেরোতেই গতকাল প্রকাশিত হয়েছে রাজ্যের ৩ বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনের ফলাফল। যেখানে বিজেপি লোকসভা ভোটের নিরিখে দুটি কেন্দ্রে এগিয়ে থাকলেও, উপনির্বাচনের ফলাফলে সেই দুটিতেই পর্যুদস্ত হয়েছে তারা। জয়লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। পাশাপাশি করিমপুরেও শেষ হাসি হেসেছে ঘাসফুল শিবির। আর বিজেপির স্রোত কিছুটা আলগা হতেই এবার “শিল্প বাঁচাও, দেশ বাঁচাও” স্লোগানকে সামনে রেখে বাম-কংগ্রেস শ্রমিক সংগঠনের লংমার্চ আয়োজিত হতে চলেছে এই রাজ্যে। যেখানে রাজনৈতিক শত্রুতাকে কিছুটা দূরে সরিয়ে দেখে বিজেপির বিরোধিতায় তৃণমূল কংগ্রেসকে এই আন্দোলনের পাশে চাইলেন বাম এবং কংগ্রেসের নেতারা। যা দেখে অনেকে বলছেন, বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলাফলের পর আগামী 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে একদম কোণঠাসা করতেই বাম এবং কংগ্রেসের এই লং মার্চে তৃণমূলকে স্বাগত জানানোর প্রক্রিয়া। জানা গেছে, সিটু, আইএনটিটিইউসি, এআইটিইউসি, এইচএমএস সহ বহু শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ডাকা এই লং মার্চ 30 নভেম্বর চিত্তরঞ্জন থেকে সূচনা হবে। আর ধাপে ধাপে বিভিন্ন জায়গায় রাত্রিযাপন করে 11 ডিসেম্বর কলকাতায় গিয়ে সভার মাধ্যমে এই কর্মসূচি শেষ করা হবে। মূলত, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে যেভাবে রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলিকে বেসরকারিকরন করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তার বিরুদ্ধেই বাম এবং কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এই আন্দোলনের প্রক্রিয়া বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। আর এহেন পরিস্থিতিতে বাম, কংগ্রেস তাদের এই কর্মসূচিতে তৃণমূলকে পাশে পাওয়ার আবেদন জানালে রাজ্য রাজনীতিতে বিজেপিকে ঠেকাতে তিন দল এবার ঐক্যবদ্ধ হতে চলেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এই প্রসঙ্গে কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসির জেলা সভাপতি বিকাশ ঘটক বলেন, “আমরা চাই সবাই একসঙ্গে কেন্দ্রের জনবিরোধী শিল্পনীতির বিরোধিতা করে রাস্তায় নামুক। মুখ্যমন্ত্রী নীতি আয়োগের সদস্য। তিনি আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিন। শিল্প বাঁচাতে এখন রাস্তায় না নামলে সমাজ বিপন্ন হয়ে যাবে।” অন্যদিকে তাদের কর্মসূচিতে তৃণমূলের যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে সিটুর জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরী বলেন, “শিল্প বাঁচানোর লড়াইয়ে তো কোনদিন আমরা তাদের সঙ্গে না হাঁটার কথা বলিনি। অনেক জায়গায় একসঙ্গে আন্দোলনও হয়েছে। এবারও যদি তারা আসতে চান, তাহলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।” তবে বিরোধী দল কংগ্রেস ও বামেদের শ্রমিক সংগঠনের এই লংমার্চে তাদের আহ্বান জানানোয়, তারা কি সেখানে উপস্থিত থাকবেন? এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, “কেন্দ্রীয় বিরোধী কোনো আন্দোলন করতে হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই করতে হবে। কারণ মানুষ এখনও দিদির উপরে আস্থা রাখেন। আমরা সঙ্গে না হলেও পানীয় জলের ব্যবস্থা সহ সবরকম সহযোগিতা করব।” আর বিজেপিকে চাপে রাখতেই যে বাম, কংগ্রেসের এই কর্মসূচি এবং তাতে তৃণমূলকে আহ্বান জানানো, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত প্রায় প্রত্যেকেই। এখন গোটা প্রক্রিয়ায় একে অপরকে সহযোগিতা করে এই তিন রাজনৈতিক দলের শ্রমিক সংগঠন কতটা সার্থকতা পায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। তাছাড়া, উপনির্বাচনের ফলাফল থেকেই স্পষ্ট বাম-কংগ্রেস জোট দাগ কাটতে না পারলেও, তৃণমূল বিরোধী ভোট ভাগ করে সুবিধা করে দিয়েছে শাসকদলের। ফলে, স্বাভাবিকভাবেই শাসকদল চাইবে আগামী বিধানসভা নির্বাচনেও – এইভাবেই বিরোধী ভোট ভাগ হোক, যার সুবিধা সরাসরি তাদের প্রার্থীরা পাবে। আর তাই বাম-কংগ্রেসের কর্মসূচিতে তৃণমূলের ‘সহযোগিতা’ নিয়ে এখন নতুন করে রাজনৈতিক জল্পনা শুরু হল। আপনার মতামত জানান -