প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট:-সেই মার্চ মাস থেকে করোনা ভাইরাসকে আটকাতে শুরু হয়েছে লকডাউন। ধীরে ধীরে ভারতবর্ষ আনলক ফোরের দিকে পা বাড়ালেও পশ্চিমবঙ্গে লকডাউন বাদ রাখার কথা এখনও শোনা যায়নি সরকারের গলায়। স্বাভাবিক ভাবেই পশ্চিমবঙ্গের কনটেইনমেন্ট জোন বাদে আলাদা এলাকাগুলোতে আদৌ সমানভাবে লকডাউন থাকবে, নাকি ধীরে ধীরে তা তুলে নেবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, এখন তা প্রধান প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে সকলের কাছে। কেননা এই দীর্ঘ লকডাউনের ফলে মানুষের রুজি-রুটির কার্যত সংশয়ের মুখে পড়তে শুরু করেছে। তাই এই পরিস্থিতিতে যদি লকডাউন ধীরে ধীরে হালকা করা না হয়, তাহলে প্রবল অসুবিধার মুখে পড়তে পারেন জনতা জনার্দন। আর এখানেই একাংশের প্রশ্ন, কলকাতা সহ জেলাগুলোর পরিস্থিতি ধীরে ধীরে ভালো হতে শুরু করেছে। তাহলে কেন সম্পূর্ণ লকডাউন থেকে সরে আসার চিন্তাভাবনা করছে না নবান্ন?

সূত্রের খবর, আগামী 13 সেপ্টেম্বর সর্বভারতীয় মেডিকেলের প্রবেশিকা পরীক্ষা রয়েছে। আর তার আগের দিন লকডাউন যাতে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়, তার জন্য অভিভাবক অভিভাবিকা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। আর এখানে জল্পনা তৈরি হচ্ছে, তাহলে হয়ত এবার ধীরে ধীরে লকডাউনের পথ থেকে সরে আসতে পারে রাজ্য সরকার। এদিন এই প্রসঙ্গে নবান্নের আধিকারিক বলেন, 12 সেপ্টেম্বরের পরে সম্পূর্ণ লকডাউনের সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। কোভিড সংক্রমণের সামগ্রিক পরিস্থিতি আগের থেকে যথেষ্ট ভালো হয়েছে।”

কিন্তু সত্যিই কি তাই? সরকারি তথ্য কি বলছে? জানা গেছে, রাজ্যে প্রথম করোনা আক্রান্ত ধরা পড়েছিল গত 17 মার্চ। আর তারপর থেকেই কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই 24 পরগনা সহ বিভিন্ন এলাকায় হু হু করে বাড়তে থাকে করোনা ভাইরাস। তবে এখন তা অনেকটাই আয়ত্তের মধ্যে এসেছে। গত 23 আগস্ট কলকাতায় 17 টি কনটেইনমেন্ট জোন থাকলেও এদিন তা মাত্র একটিতে এসে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে হাওড়াতে আগে একটি কনটেইনমেন্ট জোন থাকলেও, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে 74 টিতে। দক্ষিণ 24 পরগনা, হুগলি, উত্তর 24 পরগনাতেও ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে কনটেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছুদিন আগেই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আনলক ফোর ঘোষণা করার সময় জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, এখন থেকে কোনো রাজ্য সরকার তাদের রাজ্য সম্পূর্ণরূপে লকডাউন করতে পারবে না। কিন্তু তার আগেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে 7 সেপ্টেম্বর, 11 সেপ্টেম্বর এবং 12 সেপ্টেম্বর পূর্ণাঙ্গ লকডাউনের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই ধরে নেওয়া হয়েছিল, হয়ত বা পশ্চিমবঙ্গের করোনা ভাইরাস চিন্তাজনক পর্যায়ে গিয়েছে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার লকডাউন থেকে সরে আসছে না। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সামগ্রিকভাবে গোটা রাজ্যে সেপ্টেম্বর মাসে তিন দিন লকডাউন হওয়ার পর, আর তেমনভাবে পূর্ণাঙ্গ লকডাউন হবে না বলেই মনে করছেন একাংশ।

অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধীরে ধীরে এখন লকডাউন তুলে দেওয়া উচিত। কারণ তা না হলে যদি ব্যবসা-বাণিজ্য সমস্ত কিছু এভাবেই বন্ধ হয়ে থাকে, তাহলে রাজ্যের অর্থনৈতিক কার্যত বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে। তাই এখন সরকার সমগ্র বিষয়টি উপলব্ধি করে 7, 11 এবং 12 সেপ্টেম্বরের পর রাজ্যকে পূর্ণাঙ্গ লকডাউনের প্রক্রিয়া থেকে বিরত রাখে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।