লোকসভার আগে আরও এক পুরসভা বিরোধীশূন্য করে দলনেত্রীকে উপহার শুভেন্দু অধিকারীর মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম রাজ্য March 2, 2019 লোকসভার দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই রায়গঞ্জ পুরসভা বিরোধীশূন্য হয়ে যায় খুশির জোয়ারে ভাসল জোড়াফুল শিবির। এই পুরসভার দুই কংগ্রেস কাউন্সিলার এবার আনুষ্ঠানিকভাবে এবার তৃণমূলে যোগ দিলেন। রায়গঞ্জের বিদ্রোহী মোড়ে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরুণচন্দ্র চন্দ এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিরুদ্ধ সাহা তৃণমূলে যোগদান করেন। যদিও গত ১০ ডিসেম্বরই হেমতাবাদে তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর সভামঞ্চে উঠে তাঁরা জোড়া ফুলের পতাকা তুলে নিয়েছিলেন। তবে এবার লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে ঘটা করে তৃণমূলে যোগদানের কাজটি সম্পন্ন করে ফেললেন। এদিনের অনুষ্ঠানে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অমল আচার্য, রায়গঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান সন্দীপ বিশ্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান অরিন্দম সরকার সহ জেলা নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য,শুভেন্দু অধিকারী আগেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রেখেছিলেন ১ মার্চ থেকে রায়গঞ্জ পুরসভা বিরোধী শূন্য পুরসভা হিসাবে কাজ করবে। সেই কথাই পূরণ করল তৃণমূল। স্বাভাবিকভাবেই এর জেরে বিরোধীশিবির অস্বস্তিতে পড়ল। প্রসঙ্গত,গত পুরসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ পুরসভার ২৭টি আসনের মধ্যে ২৪টিতেই জয়ী হয় তৃণমূল। বাকি তিনটির মধ্যে দু’টিতে কংগ্রেস এবং একটিতে বিজেপি জয় হাসিল করে। একদিকে যেমন সম্প্রতি বিজেপির কাউন্সিলর প্রয়াত হন৷ অন্যদিকে,কংগ্রেসের দুই কাউন্সিলর অনিরুদ্ধ বাবু এবং অরুণ বাবু দলবদল করে তৃণমূলে আসবেন,এমনটাও জল্পনা শুরু হয়েছিল। গত ডিসেম্বরেই সেই জল্পনাকে সত্যি প্রমান করে হেমতাবাদে শুভেন্দু অধিকারীর সভামঞ্চে ওই দুই কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেয়। যেহেতু সভাটি ছিল হেমতাবাদে আর কাউন্সিলর দুজন রায়গঞ্জের কাজেই রায়গঞ্জে অনানুষ্ঠানিক ভাবে তাঁদের তৃণমূলে নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। আর সেটাই করা হল চলতি সপ্তাহে। তবে ওই দুই কংগ্রেসত্যাগী কাউন্সিলরদের দাবী,তাঁদের সঙ্গে ওয়ার্ডের আরো কিছু কর্মী তৃণমূলে এসেছেন। এলাকার উন্নয়নে যোগ দিতেই তৃণমূলে এসেছেন বলে দাবী করেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরুণচন্দ এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিরুদ্ধ সাহা। আরো জানান,’এরআগে হেমতাবাদে শুভেন্দু অধিকারীর সভায় আমরা দলে যোগ দিলেও এদিন রায়গঞ্জ শহরে আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা তৃণমূলে যোগদান করলাম। এদিন আমাদের এলাকা থেকে অনেকেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।’ আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এ প্রসঙ্গে রায়গঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান সন্দীপ বিশ্বাসের বক্তব্য,’কংগ্রেস থেকে আসা ওই কাউন্সিলারের দলে যোগদানের কথা জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী আগেই বলে গিয়েছিলেন। তাঁর কথা মতোই এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে ওই দুই কাউন্সিলরকে দলে শামিল করে নেওয়া হয়। ফলে ১ মার্চ থেকে রায়গঞ্জ পুরসভা বিরোধীশূন্য পুরসভা হিসেবে কাজ শুরু করবে।’ তবে এ প্রসঙ্গে উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তর বক্তব্য,বছরখানেক আগেই ওই দুই কাউন্সিলর কংগ্রেস ত্যাগ করেছিলেন। তৃণমূল একই লোককে দলে নেওয়ার কথা বলছে। তবে এসবে তিনি গুরুত্ব দিতে নারাজ। তবে বিরোধীদের দল ভাঙিয়ে সংগঠন কত ভারী করেছে তৃণমূল তা লোকসভা ভোটেই স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন এই কংগ্রেস নেতা। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞের মতে,বিরোধীদলের দুজন সদস্যকে ঢাকঢোল পিটিয়ে দলে এনে লোকসভা ভোটের আগে রায়গঞ্জ শহরে একটি চমক দিয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। রায়গঞ্জ বরাবরই কংগ্রেসের শক্তিঘাঁটি হিসাবে পরিচিত ছিল। তবে গত পুরসভা নির্বাচনে অনিরুদ্ধ সাহা এবং অরুণচন্দ্রের সূত্র ধরে এই রায়গঞ্জ পুরসভা তৃণমূলের দখলে আসে। প্রথমে তাঁরা বিরোধী হিসাবে পুরসভায় কাজ শুরু করলেও কিছুদিন পরে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে ফেলেন। অন্যদিকে,কংগ্রেসের একসময়ের শক্তিঘাঁটি থেকে লোকসভা ভোটের মুখে কংগ্রেসের দুই সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় কংগ্রেসের সংগঠন চাপের মুখে পড়ল বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। আপনার মতামত জানান -