মালদহ নিয়ে সন্তুষ্ট নন, জানিয়ে দিলেন মমতা! কি বললেন! জেনে নিন! মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম রাজ্য March 3, 2020 দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বারবার বিপাকে ফেলেছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। নানা জেলায় চলা সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অনেক নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে হারের মুখ দেখিয়েছে। তবে গত লোকসভা নির্বাচনের পরাজয়ের স্বাদ ব্যাপক পরিমাণে পেয়ে তা হজম করতে কষ্ট হয়েছিল তৃণমূল নেতৃত্বের। আর তারপরেই জেলায় জেলায় দ্বন্দ্ব বন্ধ করবার জন্য কড়া পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরাজিত লোকসভা কেন্দ্রগুলোতে দলের সাংগঠনিক ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনেন তৃণমূল নেত্রী। সেদিক থেকে কিছু জেলায় তৃণমূলের অবস্থা ভাল হলেও, মালদহ জেলা যে এখনও সেই গোষ্ঠী কোন্দলেই মজে রয়েছে, আর তাতে যে তিনি খুশি নন, নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকে তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বস্তুত, সোমবার নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের মেগা কর্মসূচি “বাংলার গর্ব মমতার” সূচনা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন এই কর্মসূচির পরেই মালদা সফর থাকার কারণে আগেভাগেই নিজের বক্তব্য রাখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বক্তব্য রাখতে গিয়ে মালদা জেলার নাম তুলে ধরে সেই জেলা নিয়ে যে তিনি সন্তুষ্ট নন, তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সূত্রের খবর, এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মালদহে খেয়াল খুশিমত দল চলছে। অনেকেই দলের নির্দেশ মেনে চলছেন না। দলের কথা শুনছেন না।” আর এরপরই এভাবে চললে যে তিনি কাউকে বরদাস্ত করবেন না, তাও কড়া ভাষায় জানিয়ে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মালদায় কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি হলেও, গত লোকসভা নির্বাচনে সেখানে বিজেপির উত্থান এবং তৃণমূল কংগ্রেসের একটি আসন না পাওয়া নিয়ে কার্যত অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল এখানে ভালো ফল না করার পেছনে দলের নেতা-নেত্রীদের দ্বন্দ্বই প্রধান কারণ বলে ফলাফল পর্যালোচনায় উঠে এসেছিল। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তারপর মৌসম বেনজির নূরকে সভাপতি করে হৃতগৌরব পুনরুদ্ধার করতে সচেষ্ট হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তারপরেও অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। সামনেই পৌরসভা নির্বাচন। বিভিন্ন সময় ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান নীহার ঘোষের সঙ্গে প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসছে। যা রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলেছে দলকে। তাই এই পরিস্থিতিতে মালদহ সফরের আগে নেতাজি ইন্ডোরের মঞ্চ থেকে সেই মালদহ জেলার নাম করে সকল নেতা-নেত্রীকে সতর্ক করে দিয়ে সীমারেখা টেনে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। একাংশের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মালদহ সফরে যাওয়ার আগে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে সেই মালদহ জেলার ব্যাপারে উষ্মা প্রকাশ করে বুঝিয়ে দিলেন যে, এবার মালদায় গিয়ে তিনি এই ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ নেবেন। কিন্তু তার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, মালদহ জেলার ব্যাপারে এখন তা নিয়ে রীতিমতো গুঞ্জন তৈরি হয়েছে জেলাজুড়ে। এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, “নেত্রীর বক্তব্য শুনে মনে হল, এবার তিনি লক্ষণরেখা টেনে দিয়েছেন।” এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা সফরে আসার আগে যেভাবে মালদহ নিয়ে অসন্তুষ্ট প্রকাশ করলেন, সেই প্রসঙ্গে প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেন, “আমি দিদির অনুগত সৈনিক। দলের নির্দেশ মত কাজ করি।” অন্যদিকে সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়ে দিয়েছেন মালদহ জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী মৌসম বেনাজির নূর। কিন্তু জেলার নেতা-নেত্রীদের মুখ থেকে এক কথা শোনা গেলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে মালদহ জেলা নিয়ে কার্যত অসন্তুষ্ট, নেতাজি ইন্ডোরের মঞ্চ থেকে প্রমাণিত হয়ে গেল। এখন তৃণমূলের মেগা কর্মসূচী উদ্বোধনের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মালদা সফরে গিয়ে দলের সংগঠনের ব্যাপারে কোনো কড়া সিদ্ধান্ত নেন কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -