এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ‘নিয়ম ভেঙে’ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ক্ষুব্ধ বিরোধীরা, উঠল শিক্ষায় স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ

‘নিয়ম ভেঙে’ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ক্ষুব্ধ বিরোধীরা, উঠল শিক্ষায় স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ


ক্ষমতায় আসার পর প্রথমেই শিক্ষার উন্নতিতে নব দুয়ার খুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায় জেলায় প্রচুর বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। আর এবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজ্যে আরও বিশ্ববিদ্যালয় হবে। অলচিকি বিশ্ববিদ্যালয়ও গড়ে তোলার চিন্তাভাবনা হচ্ছে।”

বস্তুত, বুধবার হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের জন্য বিধানসভায় একটি বিল পাশ হয়েছে। আর এই বিল পাশের প্রক্রিয়ার শেষ লগ্নে আলোচনায় অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরে ঠিক করা হবে।” তবে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কাজ যাতে এখনই শুরু করা হয়, তার জন্য শিক্ষা দপ্তরকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এদিন হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বিশিষ্ট হিন্দি সাহিত্যিক প্রেমচাঁদের নামে করার জন্য বিলে সংশোধনী এনেছিলেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী।

কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সুজনবাবুর আনা মোট ২০টি সংশোধনীর মধ্যে কোনওটিই গ্রহণ করেননি। তিনি বলেন, হাওড়ার মানুষ ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে আলোচনা করে হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ঠিক হবে। জানা যায়, এদিন যখন বিধানসভায় হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর আলোচনা শেষ হওয়ার পর সুজন চক্রবর্তীর আনা সংশোধনীগুলি একের পর এক খারিজ করছেন শিক্ষামন্ত্রী, ঠিক সেই সময়ই সভায় আসেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এরপরই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় বক্তব্য রাখেন। তারপর ধ্বনি ভোটে সেই বিল পাশ হয়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে বিলের উপর আলোচনা শেষ হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়ার সমালোচনা করেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, “বিলের উপর ‘থার্ড রিডিংয়ে’ এভাবে মুখ্যমন্ত্রী বলতে পারেন না। নজিরবিহীনভাবে এটা করা হয়েছে।” অন্যদিকে তিনি যা করেছেন, তা বিধি মেনেই করেছেন বলে জানান বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বিধানসভার লবিতে বলেন, “বিরোধীরা বিল পাশের শেষ পর্যায়ে এসে কোনও প্রশ্ন তুললে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী থার্ড রিডিংয়ে বক্তব্য পেশ করতে পারেন। এক্ষেত্রে বিল পাশের পর মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় বিবৃতি দিলে কিছু বলার ছিল না।”

এদিকে এদিন বিলের উপর আলোচনায় বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী শিক্ষাক্ষেত্রে বেসরকারিকরণের প্রবণতার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের স্বাধিকার হারাচ্ছে।” ফরওয়ার্ড ব্লকের ইমরান রামজ বলেন, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই বিল আনা হয়েছে। ভোটের দিকে তাকিয়ে হিন্দিভাষীদের সন্তুষ্ট করতে চাইছে সরকার। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি একেবারেই আলাদা। হিন্দি, উর্দুকে সরকারি ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। কিন্ত প্রাপ্য সম্মান দেওয়া হচ্ছে না। হিন্দি, উর্দুভাষী ছাত্র-ছাত্রীরা সরকারি উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে সমস্যায় পড়ছে। হিন্দি কলেজ ও স্কুলে শিক্ষক নেই।”

অন্যদিকে হিন্দি স্কুল ও কলেজে পরিকাঠামোর অভাবের প্রসঙ্গ তোলেন বিজেপি পরিষদীয় দলনেতা মনোজ টিগ্গা। আর বিজেপির পরিষদীয় দলনেতার এই অভিযোগের জবাব দিতে পাল্টা নিজের বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার তো বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ কমিয়ে দিচ্ছে। ওই টাকা যদি মনোজবাবু নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতে পারতেন, তাহলে তাঁর কথাগুলি শুনতে ভালো লাগত। প্রয়োজন অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে। হিন্দি শিক্ষকও নিয়োগ করা হবে। বাম আমলের মতো কম বেতনে শিক্ষক নিয়োগ তাঁরা করছেন না। স্নাতকোত্তর স্তরে হিন্দি নিয়ে পড়াশোনার জন্য মূলত নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টি করা হচ্ছে। হিন্দিভাষী বেশি থাকার জন্য জলপাইগুড়ি ও আসানসোলে আঞ্চলিক কেন্দ্র খোলা হবে।” সব মিলিয়ে বিধানসভায় বিল পাসে শাসক-বিরোধী তরজা চরম আকার ধারণ করল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!