এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > বাচ্চা হারানোয় মিটিং বন্ধ – ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তৃণমূল নেত্রী! আসল সত্যটা কি? দেখে নিন ভিডিওতে

বাচ্চা হারানোয় মিটিং বন্ধ – ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তৃণমূল নেত্রী! আসল সত্যটা কি? দেখে নিন ভিডিওতে


মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর কর্মী-সমর্থকরা বার বার ‘মমতাময়ী মায়ের’ সাথে তুলনা করেছেন, আর তা এখনো অব্যাহত। কোনো কোনো কর্মী সমর্থকের কাছে তিনি তাঁদের নিজের জন্মদাত্রী মায়ের থেকেও বড়। শুধু তাই নয়, তাঁর ভাইপোকে তিনি জন্ম না দিলেও মায়ের স্নেহেই বড় করেছেন বলেও বার বার দাবি উঠেছে তৃণমূলের তরফ থেকে। কিন্তু এদিন আমডাঙ্গার সভায় মুখ্যমন্ত্রীর অন্য এক রূপ দেখে কার্যত হতাশ গোটা রাজ্যবাসী।

আমডাঙায় নিজের প্রার্থীর প্রচারে গিয়ে জনসভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে যখন তিনি প্রবল আবেগে সমর্থকদের বোঝাচ্ছেন, মোদী আচ্ছে দিনের নাম করে কি কি ক্ষতি করেছেন, তখনই হঠাৎ ছন্দপতন! এক তৃণমূল সমর্থক মহিলার বাচ্চা হারিয়ে যায়, মহিলার কান্নাকাটির জেরে সভাস্থলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে রীতিমত বিরক্ত বক্তা মমতা ব্যানার্জী চুপ করে যান। ক্ষুব্ধ হয়ে জনতাকে বিশৃঙ্খলার কারণ জিজ্ঞেস করেন, “কি হয়েছে?” সভায় উপস্থিত কর্মী-সমর্থকদের কাছে জানতে পারেন এই বাচ্চা হারানোর কথা, আর তা শুনেই রীতিমত রেগে যান তিনি!

মুখ্যমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, “বাচ্চা হারিয়ে গেছে খুঁজে দিচ্ছি। মিটিংটা হয়ে যাক।” তারপর ধমকের সুরে বলেন, “বসুন আপনারা।” কিন্তু যাঁদের বাচ্চা,সেই পরিবার ও তাঁদের পাশে থাকা মানুষজন তৃণমূল নেত্রীর কথা না শুনে, নিজেদের হারিয়ে যাওয়া বাচ্চার খোঁজেই ব্যস্ত থাকেন। বাচ্চার মা রীতিমত কান্নাকাটি শুরু করে দেন বলে সভায় উপস্থিত জনতার বক্তব্য। ফলে সভার তাল পুরোপুরি কেটে যায়, আর তাতে চূড়ান্ত বিরক্ত তৃণমূল নেত্রী বলেন, “আপনি নাম বলুন আমি বলে দিচ্ছি। পুলিশের কাছে লিখে দিন আমি নাম এনাউন্স করে দিচ্ছি, বসুন আপনি। বাচ্চা হারিয়ে গেছে তারজন্য মিটিং নষ্ট করার কি আছে?”

এরপর স্টেজে বসা তাঁর দলের নেতাদের দিকে তাকিয়ে রীতিমত ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, “তোমরা দেখো কেউ গিয়ে।” তাঁর কথা মতো রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু ও অন্য নেতারা তড়িঘড়ি ছুটে যান। এদিকে মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তৃতার রেশ কেটে যাওয়ায় তৃণমূল নেত্রীর ধৈর্য্যের বাঁধ তখন ভেঙে গেছে। তিনি রীতিমত বিরক্তি ঝরানো সুরে বলেন যে, “আচ্ছা খুঁজে দেওয়া হবে দাঁড়ান না।” একইসঙ্গে বাকিদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা বসুন ওনাকে আমরা সাহায্য করছি।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তারপর ওই বাচ্চা হারানো মায়ের উদ্দেশ্যে বলেন, “দেখুন খুঁজে দেবে, নাম বলুন।” তারপরেই বাচ্চা হারানোর জেরে গোলমাল হওয়ায় রীতিমত ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলে ওঠেন, “তোমরা মিটিংটা নষ্ট করে দিলে তো! আমি কিন্তু আর মিটিংয়ে বক্তৃতা দিচ্ছি না! আগে বাচ্চাটাকে খুঁজে দাও, আমার মিটিংয়ে বক্তৃতা দেবার দরকার নেই! এগুলো আস্তে করে বললেও তো হতো, এর জন্য চিৎকার চেচামেচি করে মিটিংটা নষ্ট করার কি দরকার? দেখে নিন এখানে ওখানে আছে কিনা, তা নাহলে পুলিশ প্রশাসন দেখে নেবে।”

এরপর স্টেজ থাকা দলের নেতারা তৃণমূল নেত্রীকে জানান, যে হারানো বাচ্চাটিকে খুঁজে পাওয়া গেছে। এই শুনে আর যেন তৃণমূল নেত্রীর ক্ষোভ বেড়ে যায় আরও কয়েকগুন! তিনি আরো বিরক্ত হয়ে বলেন, “পেয়ে গেছে? তাহলে মিটিংটা নষ্ট করে লাভ নেই, দিস ইস ভেরি ব্যাড।” এরপরেই, বাচ্চা হারানোর জন্য ‘গোলমালকারীদের’ উদ্দেশ্যে তিনি বলে ওঠেন, “এই তিন চারজন মিলে মিটিংটা নষ্ট করে দিলো! তোমরা এটা ঠিক করলে না, এইভাবে মিটিং নষ্ট করতে নেই বাবু! এগুলো শিখে নাও।” এরপর জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, “আমার আর বলার মুড নেই, মুডটা নষ্ট হয়ে গেছে।”

যদিও এর পরে আবার বক্তৃতা দিতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু, এই নিয়েই রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়ে যায়। বিরোধীরা এই বিষয়টিকে নিয়ে সরব হন। তাঁরা এই বিষয়টিকে প্রচারের হাতিয়ার করে দাবি করেন যে, মায়ের কোল থেকে ছেলে হারিয়ে গেছে, তাকে খুঁজে দেওয়া নয়, তৃণমূল নেত্রীর কাছে মিটিংটা আগে! যদি, মোদী কত খারাপ আর আমি কত ভালো সেটা বলাই আগে হয়, তবে তিনি কি সমাজ সেবা করবেন? সব মায়েরা ভাবুন, কাকে ভোট দেবেন? আর এরপরেই নড়েচড়ে বসে তৃণমূল। কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করা হয় যে, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে আগে বাচ্চা খুঁজো তার পরে আমার মিটিং।

পাশাপাশি আমডাঙ্গা সভার যে ভিডিও আছে সেখান থেকেও এই অংশটি ডিলিট করে দেওয়া হয়, মমতা ব্যানার্জির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে বলেও দাবি তুলেছেন বিরোধীরা। কিন্তু, সামগ্রিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সোচ্চার হয়েছেন সাধারণ মানুষও। আর সাধারণ মানুষের সেই ক্ষোভের আঁচ পেয়েই, বিরোধীরা ‘মাতৃত্বের’ মত স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে নিজেদের প্রচারে ঝাঁঝালো আক্রমন ছুড়ে দিচ্ছেন তৃণমূল নেত্রীর দিকে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই বিষয়টিতে যথেষ্টই ক্ষতি হলো শাসকদলের ভাবমূর্তির, যা আগামী দফার নির্বাচনগুলোতে যথেষ্ট প্রভাব ফেলতে পারে।

নীচের ভিডিওতে দেখে নিন, আমডাঙার সেই জনসভায় বাচ্চা হারানোর পর কিভাবে প্রচার মঞ্চেই নিজের ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী, সেই অংশ –

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!