এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > আজকের মমতা-পিকের বৈঠক ঘিরে পদ হারানোর সিঁদুরে মেঘ দেখছেন দলের নেতারা, জোর জল্পনা

আজকের মমতা-পিকের বৈঠক ঘিরে পদ হারানোর সিঁদুরে মেঘ দেখছেন দলের নেতারা, জোর জল্পনা

সদ্য সমাপ্ত হয়েছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব শারদীয় উৎসব। মা দুর্গার কৈলাস যাত্রার পরে মামার বাড়ি ঘুরতে এসে ফিরেও গেছেন মা লক্ষ্মী। আর এরকম একটা সময়ে এবার শারদ উৎসবের আমেজকে কাটিয়ে চিরাচরিত নিয়মে দলের কাজকে পুনরায় শুরু করতে জেলা তথা ব্লক নেতাদেরকে ডাকা হচ্ছে কলকাতা থেকে।

তৃণমূল কংগ্রেসের গঠনতন্ত্রে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে “দিদিকে বলো” কর্মসূচি। স্বভাবতই 2019 সালে লোকসভা নির্বাচনে বাংলার মাটিতে কিছুটা ধাক্কা হয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। আর তারপরই নিজেদের রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে ঘাসফুল শিবির। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের রাজনৈতিক রূপরেখা স্থির করতে নিয়োগ করেছেন 2014 সালের নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী রণনীতিকার এবং ভোটগুরু বলে খ্যাত প্রশান্ত কিশোরকে।

আর এই প্রশান্ত কিশোর মাঠে নামার পরই কার্যত নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বদেরকে। ব্লক থেকে শুরু করে অঞ্চল, বুথ থেকে শুরু করে জেলা নেতৃত্ব, পিকের নজড় থেকে রক্ষা পায়নি কেউই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন কর্মসূচি এবং মানুষের অভাব অভিযোগ শুনে তাদের বাড়িতে গিয়ে রাত কাটানো থেকে শুরু করে সবধরণের জনসংযোগ করতে হয় তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতৃত্বদেরকে।

আর এবার সেই জনসংযোগ কর্মসূচির পর কলকাতায় গিয়ে নেতৃত্বদেরকে নিজেদের কাজের সম্পর্কে রাজ্য নেতৃত্বকে জানাতে হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আর আজ মঙ্গলবার সেই উদ্দেশ্য নিয়েই জেলায় জেলায় অবস্থিত তৃণমূলের সব ব্লক, টাউন এবং জেলা নেতৃত্বদেরকে কলকাতায় ডেকে পাঠানো হয়েছে রাজ্য নেতৃত্বের তরফ থেকে।

সূত্রের খবর, বৈঠকের বিষয় হতে চলেছে “দিদিকে বলো” কর্মসূচি নিয়ে দলের অবস্থান এবং নেতৃত্বদের করা কাজের মূল্যায়ন। স্বাভাবিকভাবেই “দিদিকে বলো” কর্মসূচিতে কোন জেলা থেকে কত অভিযোগ উঠে এসেছে, এবং সেই অভিযোগের ভিত্তিতে নেতৃত্বের কোনো পরিবর্তন হবে কিনা, সেই নিয়েও দ্বন্দ্ব রয়েছে আজকের বৈঠকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এই বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত এক তৃণমূল নেতা বলেন, “শহরের অনেকেই পৌর পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভের কথা জানিয়েছিলেন। অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হলে পৌরভোটের মুখে প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে পৌরসভার কর্তাদেরকে।” আবার পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহল অধ্যুষিত এলাকার এক ব্লক সভাপতি বলেন, “দিদিকে বলো নম্বরে অভিযোগ কিছু গিয়ে থাকলে সেগুলো শুধরে নেব।”

কিন্তু ডাকাবুকো তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতে, দিদিকে বলো নম্বরে যদি এলাকার সমস্যা বা সেই এলাকার উন্নয়নমূলক কর্মসূচি নিয়েই শুধু আলোচনা হয়ে থাকে, তাহলে জেলায় জেলায়, ব্লকে ব্লকে উপস্থিত দলীয় নেতৃত্বরা অনেকটাই সেভজোনে রয়েছে। কিন্তু যদি জেলা থেকে অভিযোগকারীরা দিদিকে বলো নম্বরে ফোন করে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে নিজেদের ক্ষোভ, বিক্ষোভ প্রকাশ করে থাকেন, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই নেতৃত্বের কপালে চিন্তার ভাঁজ দেখা দিতে পারে।

কারণ দিদিকে বলো কর্মসূচির মাধ্যমে তৃণমূল কংগ্রেস একদিকে যেমন জনগণের অভিযোগ শুনে প্রশাসনিক পরিকাঠামোর উন্নতি করতে সচেষ্ট হয়েছেন, অন্যদিকে তেমনই স্বচ্ছতার অভাবে ভুগতে থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে যে সমস্ত বেনোজলগুলো ঢুকেছিল, মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের দল থেকে নিরস্ত করতে সচেষ্ট হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল বলে দাবি একাংশের।

তাই এখন সবচেয়ে বড় জল্পনার বিষয়, জেলায় জেলায় যেভাবে দিদিকে বলো নম্বর প্রচার করা হয়েছে, মানুষের কাছে যেভাবে পৌঁছে গেছে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব, যদি প্রকৃত অর্থেই জনসংযোগে সমর্থ হয়ে থাকে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব, তাহলে মানুষের করা অভাব-অভিযোগের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। কারণ শুধু অভিযোগ শুনলেই জনসংযোগ সম্পূর্ণ হয়ে যায় না। মানুষের করা অভিযোগের যদি সঠিক নিষ্পত্তি না হয়, তাহলেই দিদিকে বলো কর্মসূচির ফল হিতে বিপরীতও হতে পারে বলে দাবি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

আর এখন আজকের বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বদের মনে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, মানুষের অভিযোগে সরকারি পরিকাঠামো অভিযুক্ত হয়েছে, না তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযুক্ত হয়েছে! সকলের কাছে দ্বন্দ্বের বিষয় এই একটাই বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আর তার সমাধান ততক্ষণ সম্ভব নয়, যতক্ষণ বৈঠক শেষে দল তার অবস্থান স্পষ্ট করছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!