এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > মমতার কাছে কি নির্দোষ শাহজাহান! একি বললেন মুখ্যমন্ত্রী! সোচ্চার বিরোধীরা!

মমতার কাছে কি নির্দোষ শাহজাহান! একি বললেন মুখ্যমন্ত্রী! সোচ্চার বিরোধীরা!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশেষে এতদিন পর সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন। মহিলারা যখন তাদের এতদিনের ব্যথা, বেদনা প্রকাশ্যে জানাচ্ছেন, তখন এই রাজ্যের মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হয়েও কেন তিনি চুপ, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিলেন সকলেই। নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকেও এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রবল কটাক্ষ ছুড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আড়ালে থেকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি হয়ত সন্দেশখালির এই ঘটনা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত হয়ে রয়েছেন। যেভাবে তার দলের নেতারা ফেঁসে যাচ্ছেন, তাতে সাধারণ মানুষের এই গর্জে ওঠা, তাদের এই প্রতিবাদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সেই কারণেই তিনি এতদিন কিছু বলেননি। কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করার পর অবশেষে গোটা ঘটনায় মুখ খুলতে দেখা গেল এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। আর তিনি এমন একটি কথা বললেন, যার পর রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের ভূমিকা নিয়ে আরও বেশি করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু কি এমন বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?

প্রসঙ্গত, এদিন হুগলিতে প্রশাসনিক সভায় যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তাকে এতদিন পর পেয়ে সন্দেশখালি নিয়ে প্রশ্ন করতে শুরু করেন সাংবাদিকরা। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তাদের সবাইকেই তো গ্রেফতার করা হয়েছে।” এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সবাই কোথায় গ্রেফতার হয়েছেন? শুধুমাত্র উত্তম সর্দারকেই তো গ্রেফতার করা হয়েছে। শিবু হাজরা থেকে শুরু করে মূল পান্ডা, যিনি নেপথ্যে থেকে এতদিন সন্ত্রাস করেছেন, এই এলাকার মানুষকে চোখ রাঙিয়েছেন, যার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, সেই শেখ শাহজাহানকে এখনও পর্যন্ত খুঁজেই পাচ্ছে না এই রাজ্যের পুলিশ।

তাহলে সেই ব্যাপারে কেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কিছু বললেন না? আসলে বললেন না, তা নয়। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে একজনের গ্রেপ্তারির বিষয়টিকে বড় করে দেখাতে চাইছেন। উত্তম সর্দারের গ্রেফতারের বিষয়টিকে হাতিয়ার করে এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান প্রমাণ করতে চাইলেন যে, তার সরকার রাজধর্ম পালন করছে। কিন্তু তলায় তলায় আসল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে স্টেপ না নিয়ে যেভাবে তাদের আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে কিন্তু মানুষের মনে ক্ষোভ এবং প্রশ্ন থেকেই গেল এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে। ফলে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যতই রাজধর্ম পালনের প্রমাণ দেওয়ার চেষ্টা করুন না কেন, তার সেই কথায় চিড়ে ভিজবে না বলেই দাবি একাংশের।

ইতিমধ্যে গোটা বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, একজন প্রশাসনিক প্রধান, যিনি আবার মহিলা, তার কাছ থেকে এরকম বক্তব্য সত্যিই কি আশা করা যায়? তিনি এখন গর্বের সহকারে বলছেন, সবাইকে গ্রেফতার করে নেওয়া হয়েছে, তার কাছে সবাই মানে কি শুধু উত্তম সর্দার? শিবু হাজরা এবং শেখ শাহজাহান তারা কি সব ধোয়া তুলসী পাতা এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের কাছে? তাহলে কি তিনি বুঝিয়ে দিতে চাইলেন যে, শুধুমাত্র উত্তম সর্দারকে গ্রেফতার করেই তার পুলিশ থেমে যাবে! আর কারওর বিরুদ্ধে কোনো স্টেপ নেবে না? রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রীই যদি এই ধরনের কথা বলেন, তাহলে দুষ্কৃতীরা আরও বেশি করে প্রশ্রয় পাবে। তাই এই রাজ্যের পুলিশ এবং এই শাসকের উপর ভরসা থাকছে না সাধারণ মানুষের। আগামী দিনে তারা নবান্নের গদিতে পালা বদল ঘটানোর জন্য তৈরি বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, এত করুন আর্তনাদ শোনার পরেও, মহিলারা এত হাহাকার করার পরেও, এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কেন চোখ খুলছে না! এটাই তো একটা বড় প্রশ্ন। তিনি কি কোনো কাজের জন্য ঋণী হয়ে রয়েছেন এই এলাকার আরও যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, সেই শেখ শাহজাহান এবং শিবু হাজরাদের কাছে? হয়ত এই যে উত্তম সর্দারকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাকেও হয়ত গ্রেপ্তার করতে মন চায়নি এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু যেভাবে প্রতিবাদ তৈরি হয়েছে, সাধারণ মানুষ তাদের বিক্ষোভ যে পদ্ধতিতে আছড়ে পড়েছে, তাতে ভয় পেয়ে পরিস্থিতির জন্যে শেষ পর্যন্ত একটা কড়া স্টেপ নিতে বাধ্য হয়েছে এই পুলিশ। কিন্তু সুযোগ পেলে হয়ত তাকেও ছেড়ে দেওয়া হবে।

আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এখনও পর্যন্ত যখন মূল অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হয়নি বলে দাবি করছে সন্দেশখালি, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ধরনের বক্তব্য মোটেই কাঙ্খিত নয়। তিনি বলতে পারতেন যে, এখনও পর্যন্ত অনেকেই গ্রেফতার হয়নি, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে। কিন্তু তিনি যেভাবে বললেন যে, সবাই গ্রেপ্তার হয়ে গেছে, তাতে বোঝাই যাচ্ছে যে, এই রাজ্যের পুলিশ ইচ্ছাকৃত ভাবেই ধরছেনা সন্দেশখালির ঘটনায় বাকি অভিযুক্তদের। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!