বর্তমানে করোনা সংকট চলছে গোটা বিশ্ব তথা গোটা দেশে। করোনাকে আটকাতে চলছে লকডাউন। আর এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রতিটি সরকার নিজ নিজ আঙ্গিকে তৎপরতা অবলম্বন করছে। তবে লকডাউন চলার সময় কোনো দোকানপাট খোলা না থাকায় কিভাবে আর্থিক সঙ্গতি তৈরি হবে, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

এমত পরিস্থিতিতে সম্প্রতি দেশবাসীর পাশে দাঁড়াতে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে কুড়ি লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে এই কুড়ি লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণার শেষদিনেও বেসরকারি করণের ওপরেই সবথেকে বেশি আস্থা রাখায় এবার তীব্র ক্ষোভ উগরে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

জানা গেছে, বাছাই করা শিল্পক্ষেত্র, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর অধীন প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই কর্পোরেট অনুপ্রবেশের ক্ষেত্রে সীলমোহর দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। শুধু তাই নয়, রাজ্যগুলির হাতে বেশি পরিমাণে অর্থ পৌঁছে দিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ঋণগ্রহণের ঊর্ধ্বসীমা মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের 3 শতাংশ থেকে বাড়িয়ে 5 শতাংশ করার কথা ঘোষণা করেছেন। পাশাপাশি আর্থিক সংস্কারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত আরোপ করতেও দেখা গেছে তাকে। আর কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এবার রীতিমত ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন তিনি বলেন, “3% থেকে 5 শতাংশ ঋনগ্রহনের ক্ষমতা 5 শতাংশ বাড়ানোর ক্ষেত্রে যে শর্তাবলী কেন্দ্র আরোপ করেছে, সেটা ক্ষমতা প্রদর্শন ছাড়া আর কিছুই নয়। গায়ের জোরে রাজ্যগুলির উপর এরকম শর্ত আরোপ করা যায় না। বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে নতুন আইন এনে অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্র। যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ন্যূনতম জ্ঞান থাকলে, এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। এভাবে দেশের সম্পদ কেড়ে নিচ্ছে সরকার। আর্থিক প্যাকেজে সাধারণ মানুষের জন্য শুধুই মিথ্যাচার আর ধাপ্পাবাজি ছাড়া আর কিছু নেই।”

আর করোনা ভয়াবহতার মধ্যে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আর্থিক প্যাকেজ নিয়ে বেশকিছু ঘোষণা করার পর যেভাবে তার বিরুদ্ধে সরব হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, তাতে রীতিমত কেন্দ্র বনাম রাজ্যের দ্বৈরথ চরম আকার ধারণ করবে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বিষয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আর এবার আর্থিক সংস্কারের ক্ষেত্রে রাজ্যের উপর কেন্দ্র বেশকিছু শর্ত আরোপ করায় তা যে তিনি একেবারেই মানবের না, তা বলে নিজের ক্ষোভকে সপ্তমে পৌছে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক প্রধান। আর কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সরব হওয়ার ঘটনা করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্য বনাম কেন্দ্রের দূরত্ব বৃদ্ধি করলে আখেরে ক্ষতি হবে জনতা জনার্দনের বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।