এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > তৃণমূল-সিপিএমের লোকদেখানো “কুস্তি” আর ভেতরে “দোস্তি”, শিলিগুড়ির পর ঝড় তুলতে চলেছে বিজেপি?

তৃণমূল-সিপিএমের লোকদেখানো “কুস্তি” আর ভেতরে “দোস্তি”, শিলিগুড়ির পর ঝড় তুলতে চলেছে বিজেপি?


2011 সালে বামেদের ক্ষমতাচ্যুত করে রাজ্যের ক্ষমতায় বসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন তৃণমূলের প্রধান বিরোধী দল ছিল বামফ্রন্ট। কিন্তু যতদিন এগিয়েছে, যত সময় গড়িয়েছে, ততই রাজ্যে বিরোধীদলের জায়গা দখল করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর বিজেপির পক্ষ থেকে বিরোধী দলের ক্ষমতা দখল করার পরই অভিযোগ করা হয়েছে যে, বিভিন্ন জায়গায় বিজেপিকে আটকানোর জন্য সিপিএম-তৃণমূল গাঁটছড়া বাঁধতে শুরু করেছে। তবে বরাবরই তৃণমূল এবং সিপিএমের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

সম্প্রতি রাজ্যের অন্যান্য মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভার মত শিলিগুড়ি পৌরসভায় মেয়র অশোক ভট্টাচার্যকে প্রশাসক করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে সেই প্রশাসক বোর্ডে তৃণমূলের বেশকিছু কাউন্সিলর সদস্য হওয়ায় তার চরম বিরোধিতা করেছেন অশোকবাবু। যার পরেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পিছু হটে অশোকবাবুর কথামত সংশোধিত প্রশাসক বোর্ড তৈরি করা হয়। যাকে স্বাগত জানিয়েছেন সেই অশোক ভট্টাচার্য। কিন্তু শিলিগুড়ি পৌরসভায় এই প্রশাসক বোর্ড তৈরিতে রাজ্য সরকারের সঙ্গে অশোকবাবুর মতানৈক্য তৈরি হলেও, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদে তৃণমূল এবং সিপিএম একসাথে বোর্ড চালাচ্ছে বলে এবার অভিযোগ করল ভারতীয় জনতা পার্টি।

জানা গেছে, বামফ্রন্ট পরিচালিত শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের দায়িত্বে রয়েছেন তৃণমূলের ছোটন কিস্কু। যার ফলে রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে জোর সোরগোল। বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, শিলিগুড়ি পৌরসভায় তৃণমূলের সঙ্গে কুস্তি করে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদে একসাথে ক্ষমতা দখল করছে সেই তৃণমূল এবং সিপিএম। এদের দুমুখো নীতি মানুষের সামনে চলে এসেছে। কিন্তু যেখানে বামেদের দখলের শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ রয়েছে এবং যেখানে বামেদের সাথে গাঁটছাড়া আদায় কাঁচকলায় সম্পর্ক, সেখানে কেন তৃণমূলের নেতা পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ পদ সামলাচ্ছেন?

বস্তুত, গত দেড় বছর আগে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ছোটন কিস্কু সিপিএম ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। কিন্তু এর পরেও তিনি কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে ইস্তফা দেননি। এমনকি সিপিএমের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেও অপসারিত করা হয়নি। যার ফলে তিনি সেই পদেই রয়ে গিয়েছেন। আর এতেই এবার সরব হয়ে তৃণমূল এবং সিপিএমের অশুভ আঁতাত রয়েছে বলে অভিযোগ করতে শুরু করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। যার ফলে তৃণমূল যেমন চাপে পড়েছে, ঠিক তেমনই চাপে পড়তে শুরু করেছে সিপিএমও‌।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, কথায় কথায় সিপিএম নেতারা দলীয় নীতির কথা শোনান। কিন্তু বাস্তবে যে তারা সুযোগ সন্ধানী, তা প্রমাণিত হয়ে গেছে। যদিও বা এই ব্যাপারে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি সিপিএমের তাপস সরকার বলেন, “এখানে আমরা তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে চলছি না। সংসদীয় রীতি-নীতি মেনে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে দল পরিচালনা করছি। তাই আমাদের বিরুদ্ধে বিরোধীরা কোনো প্রশ্ন তুলতে পারে না। পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাবে না। এটা রাজ্য সরকারের মনোনীত প্রশাসক নির্বাচিত বোর্ড নয়। কাজেই পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগের সঙ্গে এখানকার পরিস্থিতি মেলালে চলবে না।”

অন্যদিকে এই ব্যাপারে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের তৃণমূলের বিরোধী দলনেতা কাজল ঘোষ বলেন, “এখানে সদস্য সংখ্যার নিরিখে সিপিএমের সঙ্গে আমাদের সামান্য তফাৎ। ইচ্ছা করলেই অনাস্থা এনে অন্যান্য স্থায়ী সমিতিগুলো দখল করে নিতে পারতাম। আমরা এবার মহকুমা পরিষদের স্ট্র্যাটেজি বদলের কথা চিন্তা ভাবনা করছি।”

তবে সিপিএম এবং তৃণমূলের পক্ষ থেকে যে কথাই বলা হোক না কেন, শিলিগুড়ি পৌরসভা নিয়ে তৃনমূলের বিরুদ্ধে সিপিএম সরব হয়েছে। কিন্তু মহকুমা পরিষদের কেন এভাবে বোর্ড চালানো হচ্ছে, তা নিয়ে বিজেপির সোচ্চার হওয়াতেই এখন তৃণমূল এবং সিপিএম ব্যাপক বিপাকে পড়বে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ফলে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!