এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > মৃণালিনীর প্রেম -(লাভ স্টোরি)- কলমে অপরাজিতা – অন্তিম পর্ব

মৃণালিনীর প্রেম -(লাভ স্টোরি)- কলমে অপরাজিতা – অন্তিম পর্ব


না বলবে না নন্দিনী, শ্রেয়সী যেমন আড়ালে ছিল আড়ালেই থাক,কেননা তার কোনো আর অস্তিত্ব নেই অভির জীবনে, সে শুধু অভির জীবনে একটা বড় ভুল। রাত্রেই নন্দিনী  বলেছে সৌদামিনীর ঠাকুমার শরীরখারাপ তাই তাঁকে দেখতে যাবে আর মৃণালিনীকে নিয়ে আসবে, তাকে ছাড়া বাড়ি মানাচ্ছে না। আনতে যাবে, সৌদামিনী, নন্দিনী, বিভাস, নন্দিনীর বর আর অভি. ওর তো ঠাকুমাকে খুব ভালো লেগেছে। যে মেয়েকে বিয়ে করতে কষ্ট তাকে ঢং করে আনতে যাবার কি আছে ?প্রশ্ন তুলেছে অভির মা। একেবারে সত্যি কথা। ছেলের এই আদিক্ষেতাগুলো একেবারে পছন্দ নয় তাঁর। হাতের কাছে এসেও মেয়েটা হাতছাড়া হয়ে গেলো। অভি সাড়া দেয়নি, নন্দিনী চুপিচুপি মাসিকে বলেছে – দাড়াও দেখি যদি কিছু করতে পারি।

বিষয়টা ওই বাড়িতে জানানো হয়নি, কেননা বড়সড় সারপ্রাইস দিতে চায় তারা মৃণালিনীকে, জানলেই না করে দেবে হয়তো। কিন্তু তবুও সৌদামিনী বাড়িতে বলেছে, কে যাবে তা বলেনি, শুধু বলেছে নন্দিনীদি ঠাকুমাকে দেখতে যাবে,তারা ভেবেছিলো ঠাকুমা আসবেন কিন্তু আস্তে পারেননি ,তাই দেখতে আসবেন। মৃণালিনীর কথা বলা হয়নি। সকালে সেই মতো সব ব্যবস্থা হয়েছে। মৃণালিনী বাড়িতেই আছে, কোথাও যায়নি সে।

ঠাকুমার ঘরে ছিল মৃণালিনী, ঘরে ঢুকলো সৌদামিনী, বিভাস,নন্দিনী।
এস বলে বসতে দিলো মৃণালিনী। ঠাকুমা এবার মৃণালিনীকে বললেন চশমাটা দে তো দিদি!
চশমাটা টেবিলে ছিল , মৃণালিনী ঘুরে টেবিল থেকে চশমা নিতে ঘুরলেই ঠাকুমা বললেন- ও বাবা এ যে আমার সেই রাজপুত্তর গো, কেমন আছো ?
ধক করে উঠলো মৃণালিনীর। ঠাকুমা অভিকেই রাজপুত্তর বলে, অভি এসেছে?
ঘুরে দেখলো – থমকে গেছে মৃণালিনী, অস্বস্তি হচ্ছে খুব। অভি. অভি এসেছে।

ঠাকুমা – কই গো দিদি দাও চশমা!

অভি – আমি দিচ্ছি দাঁড়ান।

মৃণালিনীর গা ঘেঁষেই চশমাটা তুলে নিলো অভি।হুম গায়ে গা ঠেকলো মৃণালিনীর সাথে অভির , একটু সরে গেলো মৃণালিনী।

আমি একটু আসছি – বলে মৃণালিনী ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। ঘরের ভেতরে কথা চলতে থাকলো। মৃণালিনী ছাতে গেছে অভি কথা বলতে বলতেই দেখেছে। বেরিয়ে যাচ্ছিলো অভির ফোন এসেছে, কল করেছে বাড়ি থেকে ,ওরা পৌঁছেছে কিনা জানতে , ফোনটা নন্দিনীকে দিয়ে বেরিয়ে গেলো অভি। ছাতে উঠে দেখলো এককোনে রেলিং ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে মৃণালিনী। অভি বুঝতে পারছে মৃণালিনী কাঁদছে, কারণ আজ জানে অভি,মৃণালিনীর ঘর পেরিয়েই ছাতে উঠার সিঁড়ি। আসার সময় ও দেখেছে মৃণালিনীর ঘরে ওর দেওয়া সেই মীরা বাইয়ের মূর্তিটা। অভিকে না ভালোবাসলে কেন রেখেছে ওটা এত যত্ন করে ওর ঘরে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অভি মৃণালিনীর পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। মৃণালিনী দেখেই সরে যাচ্ছিলো

অভি – কাল চলে এলে কেন?

মৃণালিনী- এমনি, শরীর ভালো ছিল না

অভি – সেটা তো সবার জন্য, আসল কারণ কি ?

মৃণালিনী – আসল কারণ কিছু নেই, শরীর খারাপ ছিল তাই

অভি – আমি জানি কারণটা , আমার জন্যই চলে এসেছো, ইনফ্যাক্ট আমি যাবো জানলে হয়তো যেতেও না তাই তো?

মৃণালিনী – সেসব কিছু নয়,

অভি – সেই জন্যই আমি কেমন আছি একবার জানতে চাইলে না!

মৃণালিনী -কেমন আছো ?

অভি – ভালো নেই, দুটো কারণ, এক নম্বর -শ্রেয়সীর সাথে আমার ব্রেকআপ হয়ে গেছে ,

মৃণালিনীর কথাটা শুনে ভালো লাগলো না , ফের ভয় করতে শুরু করেছে , মনে হচ্ছে আবার কি অভি অপমান করবে , সারাজীবন এর জন্য মৃণালিনীকে দায়ী করবে। আবার কথা শোনাবে। হাতের মুঠো শক্ত করে বললো – আমি সত্যিই সেদিন ইচ্ছা করে কিছু করিনি , আমি বুঝতে পারিনি ,এ র সেই রাত্রেই সব ডিলিট করে দিয়েছি। তুমি চাইলে আমি কথা বলতে পারি যে আমার ভুল ছিল।

অভি – আর দুই নম্বরটা হলো, আমি তোমাকে খুব মিস করি ,

মৃণালিনীর কানে কথাটা ঢোকেনি , সে ফের বললো – আমি সত্যিই বুঝতে পারিনি, আমি জানতাম না ,আমি

অভি – ভালোবাসি তোমাকে, তোমার সাথে কাটানো সব মুহূর্তগুলোকে ভালোবাসি।

মৃণালিনীর কানে এবার ঢুকেছে কথাগুলো। অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল অভির দিকে।

এবার অভি ওর হাতটা ধরে ওকে কাছে টেনে নিয়ে বললো – তোমার সাথে চুরি করে গুঁড়ো দুধ খেতে চাই, সারাজীবন বৃষ্টিতে ভিজতে চাই, নাগরদোলায় জড়িয়ে নিয়ে বসতে চাই, আরো অনেক কিছু চাই। ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে জানিনা কবে, কখন বাট ভালোবাসি। আর এখানে আমার আসা শুধুমাত্র তোমার জন্য , বিয়ে করবে আমাকে?

মৃণালিনী কিছু বলতে পারেনি শুধুমাত্র কেঁদেছে, অভি ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে আর ছাড়বে না, না ও ভুল করেনি ও জানে ওর মৃণালিনী ওকে খুব ভালোবাসে। জড়িয়ে ধরেছে মৃণালিনীও। অভি আসার সময় নন্দিনীকে বলেছিলো সে ছাতে যাচ্ছে মৃণালিনীর কাছে। নন্দিনী ছাতে এসেছে অভিকে ওর ফোন দিতে কেননা অভির মা কল করেছে। একিরে কি করছিস তোরা ?
নাদিনীর গলা পেয়ে মৃণালিনী অভির কাছ থেকে সরে দাঁড়ালো।
নন্দিনী – মাসি কল করেছিল, কথা বল।
অভি আবার মৃণালিনীকে কাছে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরে বললো – মাকে বল আমি মৃণালিনীকে বিয়ে করবো।আর ফোন নিয়ে যা পরে কথা বলবো।

নন্দিনী চলে গেছে, মৃণালিনীকে অভি বলেছে ওকে নিতেই এখানে এসেছে ঝটপট ব্যাগ গোছাতে রেডি হতে। মৃণালিনীর বাবা অভিকে দেখে খুব একটা খুশি হননি , দুটো কারণ – তিনি জানেন যে তাঁর মেয়েকে এই ছেলে বিয়ে করতে রাজি হয়নি , তাছাড়া তার মেয়ের সাথে এত মেশামেশি কেন?
নন্দিনী এখনই কিছু বলেনি ,মাসি মৃণালিনীর বাবাকে কল করে যা বলার বলবেন। নন্দিনীর জোরাজুরিতে রাজি হয়েছে বাবা , সঙ্গে গেছে মৃণালিনী।

অভির মা খুব খুশি ছেলে বিয়ে করবে বলেছে, মৃণালিনীর বাবাও রাজি হয়েছে। সামনে মাসেই বিয়ে। মৃণালিনী ফের আগের মতোই হয়ে গেছে, তবে অভি একটা শর্ত রেখেছে মৃণালিনী যেন স্বাভাবিক সাজে। বিয়ে হয়েছে। সবাই খুশি হলেও মৃণালিনীর বান্ধবীরা যে খুব একটা খুশি হয়নি মুখ দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। যাই হোক, বিয়ে মিতে যাবার পর, ওরা পুনেতে চলে গেছে। দুজনের সংসারে মৃণালিনী আর অভি খুব খুশি। রবিবারের সকালে বেল বাজলো ,অভি চা করছিলো। মৃণালিনী দরজা খুলো। একটা মেয়ে ঢুকলো, মৃণালিনীকে অগ্রাহ্য করেই।

অভি কে এসেছে দেখতে লিভিং রুমে আসতেই – দেখলো শ্রেয়সী।

শ্রেয়সী – অভি আমি সরি, সুনীত আমাকে চিট করেছে , ওর অন্য গার্লফ্রেন্ড ছিল। আমি বুঝতে পারিনি।

অভি – শ্রেয়সী , আমি এখন ম্যারেড, এন্ড বিলিভ মে আমি খুব হ্যাপি মৃণালিনীর সঙ্গে , এন্ড বিগ বিগ থাঙ্কস যে তুমি আমার সাতে ব্রেক আপ করেছিলে নাহলে আমি কোনো দিন বেরোতে পারতাম না এই সম্পর্কটা থেকে। আমি যেমন ভাবে বাঁচতে চেয়েছিলাম মৃণালিনী আমার সাথে ঠিক সেইভাবেই বাঁচে , ওর সাথে প্রত্যেকটা মুহূর্ত আমি বাঁচি। ভালো থেকো।
ও পরিচয় করে দিই।
ও মৃণালিনী আমার ওয়াইফ ,আর মৃণালিনী ও শ্রেয়সী আমার এক্স গার্লফ্রেন্ড।

শ্রেয়সী আর দাঁড়ায়নি, চলে গেছে। মৃণালিনী জানে ওর অভির শুধু ওকে ভালোবাসে, আর কেউ কোথাও নেই।

 

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!