এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > খালি হাতে দিল্লি থেকে ফিরলেন মুকুল রায়! বড় সিদ্ধান্তের জন্য বৈঠকে বসছেন ক্ষুব্ধ অনুগামীরা?

খালি হাতে দিল্লি থেকে ফিরলেন মুকুল রায়! বড় সিদ্ধান্তের জন্য বৈঠকে বসছেন ক্ষুব্ধ অনুগামীরা?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া এক্সক্লুসিভ – তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই মুকুল রায়কে নিয়ে জল্পনার শেষ নেই। বারেবারেই শোনা যায় বড়সড় কোনো পদ বা মন্ত্রীত্ব পেতে চলেছেন তিনি – কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর তা বাস্তবের রূপ পায় না। হতাশ হতে হয় তাঁর সমর্থক-অনুগামীদের। জল্পনা ছিল রাজ্য কমিটি রদবদলের সময়েও – এবার বোধহয় কপাল খুলতে চলেছে মুকুল রায়ের। মুকুল রায়ের অনুগামীদের রাজ্য কমিটিতে বড় পদ দিয়ে তাঁকে হয়ত জাতীয় পর্যায়ের কোনো পদ দেওয়া হবে।

কিন্তু, তাও যখন হল না – তখনই হঠাৎ করে সামনে এসেছিল বড়সড় খবর। এবার একেবারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীত্বের বড়সড় পুরস্কার জুটতে চলেছে মুকুল রায়ের বলে জানা গিয়েছিল। ইতিমধ্যেই তাঁকে ফোন করেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। দুজনেই তাঁকে দিল্লিতে গিয়ে দেখা করতে বলেছেন এবং আমাদের সূত্রের খবর, সেই দেখা করার কারণ তাঁকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় নিয়ে আসা। সেই মত মুকুলবাবু গত ৮ তারিখ অমিত শাহের ভার্চুয়াল সভা শেষ হতেই বিকেলে দিল্লি উড়ে যান।

সূত্রের খবর, সেখানে তাঁর দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে। এই সব বৈঠকে বাংলায় আগামীদিনে কোন পথে বিজেপির বৃদ্ধি বা আগামী বিধানসভা নির্বাচনের স্ট্র্যাটেজি – এইসব নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর মন্ত্রীত্ব নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। কিন্তু, এইসবের মাঝেই সামনে এল তাঁর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীত্ব নিয়ে নতুন জটের খবর। অনেকে বলছেন, মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে এখনও সিবিআইয়ের মামলা ঝুলে রয়েছে, এদিকে এই সিবিআই প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব দপ্তরের মধ্যে পড়ে।

ফলে, মুকুল রায়কে যদি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় বড়সড় দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে তাঁকে নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে পারে। তাই তাঁকে আপাতত পদ বা মন্ত্রীত্ব দেওয়া যাচ্ছে না। যদিও মুকুলবাবু নিজে জানিয়েছেন, ওসব নিয়ে কোনো কথা হয়নি। করোনা পরিস্থিতিতে এখন এসব আলোচনার সময় নয়। তাছাড়া ওই পরিস্থিতির জন্য এখনই মন্ত্রীসভায় রদবদলের কথা ভাবা হচ্ছে না। তবে মুকুলবাবু প্রকাশ্যে যে কথাই বলুন না কেন, হাত খুলে রাজনীতি করার মত কোনো দিক বিজেপিতে তাঁর পক্ষে নেই বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

তাঁদের মতে, মুকুলবাবুর হাতে বর্তমানে না আছে তার পদ, না আছে মন্ত্রীত্ব। ফলে সেদিক থেকে এবার মুকুল রায় দিল্লি সফরে গিয়েছিলেন তাঁর অনুগামীদের অনেক আশা-আকাঙ্খা নিয়ে। কিন্তু, বঙ্গ রাজনীতির চাণক্য কার্যত খালি হাতে ফিরেছেন। ফলে চূড়ান্তভাবে আশাহত তাঁর অনুগামীরা। মুকুলবাবুর দল ছাড়ার পর, তাঁর হাত ধরে যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে এসেছিলেন – গত আড়াই বছর ধরে তাঁরা কার্যত বসে আছেন। কোনো পদ বা সুবিধা না পেয়েও মুকুলবাবুর কথামত তাঁরা জান লড়িয়ে দিয়েছিলেন লোকসভা নির্বাচনে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর তার ফলও বিজেপি পেয়েছিল হাতেনাতে – বাংলা থেকে যত শতাংশ ভোট কোনোদিন পায় নি তারা, তার থেকেও বেশি আসন ছিনিয়ে নিতে পেরেছিল। এরপর মুকুল রায়ের অনুগামীরা ভেবেছিলেন তাঁদের বিজেপি আপন করে নেবে। কিন্তু, এতদিন তাঁদের শুনতে হয়েছে, বিজেপিতে এসে ৩ বছর না হলে নাকি পদ পাওয়া যায় না। ফলে, মুখ বুজে তাঁরা অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু, সদ্য সমাপ্ত রাজ্য কমিটির পরিবর্তনে দেখা গেছে, তাঁদের অনেক পরে যোগ দিয়েও অনেকেই দিব্যি পদ পেয়ে গেছেন।

তার থেকেও বড় কথা, মুকুলবাবুর অনুগামীদের সঙ্গে কথা বললে বোঝা যায়, তাঁরা পদের জন্য লালায়িত নন। কেননা, তাঁরা শাসকদল ছেড়ে যখন এসেছিলেন, সকলেই গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। কিন্তু, তাঁর এসেছিলেন রাজনীতিটা খোলা মনে করতে পারবেন বলে। আর বিজেপিতে এসে, তাঁদের রাজনৈতিক কার্যকলাপ কার্যত কুলুঙ্গিতে উঠে গেছে বলে অভিযোগ! তৃণমূল বা অন্য বিরোধী দল নয়, শুধুমাত্র ‘মুকুল রায়ের লোক’ বলে তাঁদের বিভিন্ন জায়গায় ‘আটকে’ দেওয়া হচ্ছে বিজেপির তরফেই বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই অবস্থায়, তাঁদের রাজনৈতিক ‘গুরু’ মুকুল রায় পদ বা মন্ত্রীত্ব না পাওয়ায়, আগামীদিনে তাঁদের রাজনৈতিক পরিধি আরও ছোট হতে চলেছে বলে কার্যত আতঙ্কে আছেন তাঁরা। আর তাই দেরী না করে এবার মুকুল রায়ের অনুগামীরা বসতে চলেছেন এক গোপন বৈঠকে বলে সূত্রের খবর। জলপাইগুড়ি থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর, হাওড়া থেকে ঝাড়গ্রাম – সেই বৈঠকে থাকতে চলেছেন প্রায় সব জেলার নেতারাই। কিন্তু, কেন সেই বৈঠক?

ওই বৈঠকে যোগ দিতে চলা একাধিক নেতা-নেত্রীরা জানাচ্ছেন, বিজেপিতে আসা ইস্তক প্রাপ্য ন্যূনতম সম্মান মেলেনি! এতদিন তাঁরা মুখ বুজে তাকিয়ে ছিলেন মুকুল রায়ের দিকেই। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নিশ্চয় মুকুলবাবুর জন্য বিশেষ কিছু ভাবছেন এবং সেই পথেই তাঁদেরও যথাযোগ্য রাজনৈতিক পুনর্বাসন মিলবে। কিন্তু, সেই ভাবনা বাস্তবের সঙ্গে একদমই মিলছে না! ফলে আগামী দিনে বিজেপিতে তাঁরা আদৌ থাকবেন কিনা সেই নিয়েই চলছে ভাবনা চিন্তা? যদি বিজেপি ত্যাগ করেন, তাহলে কি শাসকদলে ফিরে যাবেন? নাকি অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের ভাবনা ঘুরছে তাঁদের মাথায়?

এই সব নিয়েই প্রকৃতপক্ষে আলোচনা হতে পারে ওই মেগা বৈঠকে বলে জানা যাচ্ছে। অর্থাৎ, যাঁদের কঠিন পরিশ্রমের জন্য মুকুল রায় লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ১৮ টা আসন দিতে পেরেছিলেন, তাঁদের সকলেরই প্রায় বিজেপির প্রতি মোহভঙ্গ হয়েছে এটা নিশ্চিত। এই অবস্থায় আগামীদিনের পথ চলা নিয়ে ‘বড় সিদ্ধান্ত’ নেওয়ার ভাবনায় রয়েছেন তাঁরা। আর এই নতুন ইঙ্গিত সামনে আসতেই রীতিমত ঝড় উঠে গেছে রাজ্য রাজনীতিতে। ইতিমধ্যেই একাধিক রাজনৈতিক শিবির থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়ে গেছে বলেই সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে কি রাজ্য রাজনীতি নতুন মোড়ে দাঁড়িয়ে গেল? উত্তরের অপেক্ষায় রাজনৈতিক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!