মুকুল-শঙ্কুর হাত ধরে তৃণমূলের সাজানো বাগান শুকিয়ে যেতে চলেছে? বাড়ছে জল্পনা কলকাতা বিশেষ খবর রাজ্য May 28, 2019 সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে মুকুল রায় দেখিয়ে দিয়েছেন বঙ্গ রাজনীতির চানক্য তিনিই। ২০০৬ থেকে মোটামুটি তৃণমূলের সংগঠন সাজানোর দায়িত্ব পেয়েছিলেন – ২০০৮-এর পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই তার সুফল ঘরে তুলতে শুরু করে ঘাসফুল শিবির। এমনকি, মান-অভিমান ভুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের দায়িত্ব দিলে, সেই কঠিন লড়াইও অক্লেশে পার করে দেন। আর তারপরেই তৃণমূলে চরম অপমানিত হয়ে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তৃণমূল সমর্থকরা তাঁর এতদিনের অবদান ভুলে মীরজাফর থেকে শুরু করে চাটনি, গদ্দার থেকে শুরু করে কাঁচরাপাড়ার কাঁচা ছেলে – বিভিন্ন অসংসদীয় শব্দে তাঁকে অপমান করতে থাকেন। কিন্তু, পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ হিসাবে সেসব অপমানকর কথায় কান না দিয়ে, নতুন দল বিজেপিতে যোগ দিয়ে নিজের কাজ করে যেতে থাকেন তিনি। সেখানেও তাঁর কাজটি সহজ ছিল না – কেননা একদিকে ছিল তৃণমূলের প্রবল বাধা, একের পর এক মামলায় তাঁর নাম জড়িয়ে দেওয়া – সবথেকে বড় কথা বিজেপিতে গিয়ে কোনো পদও পান নি তিনি। কিন্তু হতাশ না হয়ে তিনি নিজের কাজটিই শুধু মন দিয়ে করে যেতে থাকেন। আর তার সুফল এবার হাতেনাতে পেয়েছে বিজেপি – প্রবল শক্তিশালী বিরোধী তৃণমূল কংগ্রেসকে কার্যত নাকের জলে-চোখের জলে করে বাংলা থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে ১৮ টি আসন। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তবে মুকুল রায় ঘনিষ্ঠদের কথামত, এখনও কাজ শেষ হয় নি দাদার। যে তৃণমূলকে এত কিছু দেওয়ার পরেও এইভাবে চরম অপমানিত হতে হয়েছে, সেই তৃণমূলকে কার্যত বঙ্গ রাজনীতিতে সাইনবোর্ড করে না দেওয়া পর্যন্ত দাদার শান্তি নেই! কিন্তু, মুকুল রায় তৃণমূলের মত শক্তিশালী দলকে সাইনবোর্ড করতে পারবেন কিনা, তা ভবিষ্যৎই বলবে। তবে আপাতত মুকুল রায়ের নির্দেশে, তাঁর ব্যাক-অফিস সামলানো শঙ্কুদেব পণ্ডা কার্যত তছনছ করে দিতে চলেছেন তৃণমূলের সাজানো বাগান বলে দাবি করছেন মুকুল-শঙ্কুর ঘনিষ্ঠ মহল। মুকুল রায়-শঙ্কুদেব পাণ্ডারা গেরুয়া শিবিরে যাওয়ার পর থেকেই বহু তৃণমূল নেতা, যাঁরা দলের প্রতি চরম ক্ষুব্ধ, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। কিন্তু, মুকুল রায়ের নির্দেশেই ‘মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচতে’ এতদিন তাঁরা বিজেপিতে যোগ দেন নি। কিন্তু, লোকসভার ফলাফল সামনে আসতেই, আর এই নেতারা দেরি করতে রাজি নন – যত সত্বর সম্ভব তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়ে সরাসরি মুকুল রায়ের সাথে রাজনীতি করতে চাইছেন। আর তাই মুকুল রায় আপাতত শঙ্কুকে দায়িত্ব দিয়েছেন তৃণমূলের যুব সংগঠনে ভাঙন ধরাতে। আর দায়িত্ব পেয়েই মুকুল রায়ের প্রিয় শিষ্য শঙ্কুদেব পণ্ডা আজ দিল্লিতে পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল যুব জেলা সভাপতি রামপ্রসাদ গিরিকে বিজেপিতে যোগদান করাতে চলেছেন। তবে, রামপ্রসাদ গিরি শুধু পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল যুব জেলা সভাপতিই নন, তিনি একইসঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের কৃষি, সেচ ও সমবায় কর্মাধ্যক্ষও। আর তাঁর সঙ্গে যোগ দিতে চলেছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের আরও অন্তত ১৫ জন হেভিওয়েট যুবনেতা। শুধু তাই নয়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে তৃণমূল যুব রাজ্য কমিটির অন্তত ৩-৪ জন নেতা আজ গেরুয়া শিবিরে পা রাখতে চলেছেন। তবে শঙ্কুদেব পণ্ডার ঘনিষ্ঠ শিবির বলছে, তিনি পশ্চিম মেদিনীপুর দিয়ে শুরু করলেও সারা রাজ্য থেকেই একাধিক তৃণমূল যুব নেতা তাঁর যোগাযোগে আছেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই, তৃণমূলের যুবশাখার সাজানো বাগান কার্যত শুকিয়ে যাবে! আপনার মতামত জানান -