পুরসভা নামেই প্রশাসক চালাচ্ছে, বাস্তবে কলকাঠি নাড়ছেন বিদায়ী চেয়ারম্যান – বিস্ফোরক বিরোধীরা কলকাতা রাজ্য November 1, 2019 রাজ্যের একাধিক পৌরসভার পেয়ার ইতিমধ্যেই উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন সময় সেই সমস্ত পৌরসভায় নির্বাচনের দাবি করেও সরকারপক্ষকে রাজি করাতে পারেনি বিরোধীরা। বিরোধীদের দাবি মানা তো দূর অস্ত, উল্টে শাসকদলের পক্ষ থেকে সেই সমস্ত পৌরসভাগুলোতে নিজেদের মনোনীত ব্যক্তি বসিয়ে তৃনমূল পৌরসভা চালাচ্ছে বলে দাবি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর। তবে বরাবরই বিরোধীদের সেই অভিযোগকে অস্বীকার করেছে তৃনমূল। কিন্তু এবার একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে অস্বস্তিতে পড়ল রাজ্যের শাসক দল। বস্তুত, ডালখোলা পৌরসভায় বর্তমানে বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বসিয়েছে রাজ্য সরকার। কারণ এখানে তৃণমূল পরিচালিত বোর্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। তবে সামনে ছটপুজোর জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে 72 কুইন্টাল গম বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। যেখানে প্রতিজনকে 5 কেজি করে গম দেওয়ার কথা ছিল। আর তেমনভাবে কোনো ওয়ার্ডের কাউন্সিলর না থাকায় বিদায়ী কাউন্সিলরদের ওপরই বিভিন্ন ওয়ার্ডের গম বিতরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তবে অভিযোগ, 12 নম্বর ওয়ার্ড এবং 3 নম্বর ওয়ার্ড সিপিএমের দখলে থাকায় সেই সমস্ত ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা সেই গম পাননি। যার ফলে তাদের এলাকার মানুষরা এই গম পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আর এতেই বিরোধীরা অভিযোগ করছে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বসানো হলেও আদতে তৃণমূলের পক্ষ থেকেই পৌরসভা চালানো হচ্ছে। আর তার জন্যই বিরোধী দলের বিদায়ী কাউন্সিলরদের গুরুত্ব না দিয়ে একনায়কতান্ত্রিক ভাবে চলছে পৌরসভা। এদিন এই প্রসঙ্গে তিন নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর সিপিএমের বিজয় বারই বলেন, “পুরসভা নামেই প্রশাসক চালাচ্ছে। বাস্তবে কলকাঠি নাড়ছেন বিদায়ী চেয়ারম্যান। ছটপুজোয় গম না দিয়ে আমাদের ওয়ার্ডের বাসিন্দা থেকে বঞ্চিত করা হল। ওয়ার্ডের কিছু বাসিন্দা ছটপুজো করেন। প্রতিবারই গম দেওয়া হয়, এবারই দেওয়া হল না। উৎসবকে নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। এসব মানুষ পরিষ্কার বুঝতে পারছে।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - একইভাবে 12 নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএমের বিদায়ী কাউন্সিলর আব্দুল হালিম বলেন, “আমার ওয়ার্ডে অল্প সংখ্যক মানুষ ছটপুজো করে। সব এলাকায় গম দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দা বলেই তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে।” আর ডালখোলা পৌরসভার সিপিএমের দুই বিদায়ী কাউন্সিলারের ওয়ার্ডের এই ঘটনা ঘটাকে কেন্দ্র করেই এবার শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। অনেকেই প্রশ্ন করতে শুরু করেছেন, যদি বিরোধীদের অভিযোগ সত্যি করে তলায় তলায় তৃণমূলের চেয়ারম্যান পৌরসভা চালান, তাহলে তিনি কেন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করবেন! এতদিন তো তিনি চেয়ারম্যান ছিলেন। কেন তিনি বিরোধী দলের দখলে থাকা ওয়ার্ডগুলোতে সাধারণ মানুষকে সুবিধা দিচ্ছেন না! এদিন এই প্রসঙ্গে ডালখোলা পৌরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান তথা এই পৌরসভার বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর সদস্য সুভাষ গোস্বামী বলেন, “ওই দুই ওয়ার্ডে কেউ ছটপুজো করেন না। তাই সেখানে গম দেওয়া হয়নি। যারা ছটপুজো করেন, তাদের প্রত্যেককে পাঁচ কেজি করে কম দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে আগে মিটিং করা হয়েছিল। আমি সামান্য বিষয় নিয়ে রাজনীতি করি না। আমার কাছে পৌরসভা এলাকার প্রত্যেকে সমান।” তবে সুভাষবাবু এই কথা বললেও বিরোধীদের অভিযোগকে কিছুটা গুরুত্ব দিয়ে যদি এই ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে তা ভুল হয়েছে বলে জানান ডালখোলা শহর তৃণমূলের সভাপতি তনয় দে। এদিন তিনি বলেন, “পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। ফলে কাউন্সিলার নেই। এজন্য সরকারি গম পৌরসভার অফিস স্টাফ দিয়ে বিতরণ করা দরকার ছিল। কিন্তু বিদায়ী কাউন্সিলর দিয়ে বিতরণ করা হয়েছে। এতে পদ্ধতিগত ভুল আছে। সরকারি সুবিধা থেকে কেউ যাতে বঞ্চিত না হয়, তা কর্তৃপক্ষকে দেখা উচিত।” কিছু যে যাই বলুন না কেন, যেভাবে সিপিএমের 2 বিদায়ী কাউন্সিলর পৌরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান তথা বর্তমান বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর সদস্য তৃণমূল সুভাষবাবুর বিরুদ্ধে বিমাতাসুলভ আচরণের অভিযোগ তুলেছেন, তাতে তৃণমূল ভবিষ্যতে এখানে অনেকটাই চাপে পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আপনার মতামত জানান -