নামেই মমতা বিরোধীতা! ক্ষমতার রাজনীতি করতে গিয়ে আরও বিপাকে বাম-কংগ্রেস! কংগ্রেস তৃণমূল বামফ্রন্ট বিজেপি রাজনীতি রাজ্য September 24, 2023 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- এতদিন বাম এবং কংগ্রেসরা পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে এমন একটা ভাব দেখাচ্ছিল যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া তাদের নাকি দ্বিতীয় কোনো শত্রু নেই। কিন্তু তারা যে সব সময় ক্ষমতার জন্য, চেয়ারের জন্য সুবিধাবাদী রাজনীতি করছে, তা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আর এই অভিযোগ সেই বাম এবং কংগ্রেসের ভেতর থেকেও অনেকে করতে শুরু করেছেন। কারণ যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের প্রধান শত্রু পশ্চিমবঙ্গে, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই সর্বভারতীয় রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধীতার জন্য জোট করতে দেখা গিয়েছে কংগ্রেসকে। যদিও বা সেই জোটের সাফল্য নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। আর তার মাঝেই এবার সেই জোটকে ফোর টুয়েন্টি বলে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি তিনি এটাও বুঝিয়ে দিলেন যে, বাম এবং কংগ্রেস যা করছে, তা তাদের পক্ষে আরও সর্বনাশ ডেকে আনবে। প্রসঙ্গত, এদিন সর্বভারতীয় রাজনীতিতে গঠন হওয়া বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে কটাক্ষ করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “এটা একটা ঠগ বন্ধন। এই জোট একটা ফোর টুয়েন্টি। বাম এবং কংগ্রেসের লজ্জা হওয়া উচিত। ধুপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনে তাদের ভোট 6 শতাংশ কমেছে। কিন্তু তারপরেও তারা তৃণমূলের সঙ্গে দিল্লিতে জোট করছে। তবে মানুষ মোদিজীর ওপরেই ভরসা রাখবেন।” বলা বাহুল্য, ইতিমধ্যেই বিরোধী দলনেতা হিসেবে শুভেন্দু অধিকারীর পারফরম্যান্সে যে তিনি অত্যন্ত খুশি, সেই ব্যাপারে মন্তব্য করে প্রদেশ কংগ্রেসের চাপ বাড়িয়ে দিয়েছেন কৌস্তভ বাগচী। আগামী দিনে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছে। আর তার মাঝেই নীতি এবং আদর্শের দিক থেকে তৃণমূল বিরোধীতার কথা বললেও, বাম এবং কংগ্রেস যে দেউলিয়ার রাজনীতি করছে, তা বলে এই দুই দলের স্থানীয় কর্মীদের মনেও প্রশ্নের সঞ্চার করলেন শুভেন্দুবাবু। একাংশের দাবি, বাম এবং কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সেটিং আজকের নয়। যদি তারা প্রকৃতই বিরোধিতা করত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, তাহলে আজকে পশ্চিমবঙ্গের এই দশা হতো না। অনেকদিন আগেই রাজ্যে আবার তৃণমূল সরকারের পতন ঘটে যেত এবং ক্ষমতায় আসত অন্য কোনো রাজনৈতিক দল। কিন্তু একসময় বামেদের পক্ষ থেকে এবং একসময় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিরোধী দলনেতা থাকলেও, তারা কোনোদিন শুভেন্দু অধিকারীর মত হতে পারেননি। সম্প্রতি কৌস্তভ বাগচী কংগ্রেসের নেতা হয়েও সেই কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। আর আজকে বিজেপি বিরোধীতার জন্য সর্বভারতীয় রাজনীতিতে যে বাম এবং কংগ্রেস সব সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন বাংলায়, সেই তারাই তার সঙ্গে জোট করতে ব্যস্ত রয়েছেন। যা কংগ্রেস এবং বাম কর্মীদের মনে যথেষ্ট আঘাত দিচ্ছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পর্যবেক্ষকদের মতে, কংগ্রেস নেতৃত্ব কোনোদিন তাদের হাইকম্যান্ডের নির্দেশের বাইরে বের হতে পারবে না। তাদের হাইকম্যান্ড তৃণমূলের সঙ্গে এক টেবিলে বসেই সর্বভারতীয় রাজনীতিতে জোট করবে। আর তাই মেনে নিতে হবে বাংলার কংগ্রেস নেতাদের। সেদিক থেকে বাম এবং কংগ্রেসের যে সমস্ত কর্মীরা বাংলায় প্রতিমুহূর্তে তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত হচ্ছেন, তারা কি করে এই জোট মেনে নেবেন! তাই তারা এখন বিকল্প প্ল্যাটফর্ম খোঁজার চেষ্টা করছেন। তৃণমূলের বিরুদ্ধেই তাদেরকে লড়তে হবে। তাই দলীয় নেতৃত্ব যখন তাদের ব্যথা বুঝছে না, তখন তাদের বিকল্প পথ হতে পারে একমাত্র বিজেপি। এমতাবস্থায় সেই সমস্ত বাম এবং কংগ্রেসের কর্মী, যারা নীচুতলায় প্রতিমুহূর্তে তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করছেন, তাদের কাছে বঙ্গ নেতৃত্বের মুখোশটা টেনে খুলে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। বুঝিয়ে দিলেন যে, বাংলার বাম এবং কংগ্রেস নেতৃত্বরা ক্ষমতা বোঝেন, চেয়ার বোঝেন। তাই কর্মীদের ব্যথা, বেদনা তাদের কানে পৌঁছবে না। তাই যদি রাজনীতি করতে হয়, যদি তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করতে হয়, তাহলে নীচুতলার কর্মীরা বিজেপিতে যোগ দিন। দিনের শেষে তেমনটাই দাবি গেরুয়া শিবিরের। আপনার মতামত জানান -