চাবকে চামড়া তুলে নেব! শিক্ষকদের এইভাবেই হুমকির অভিযোগ বিদ্যালয় পরিদর্শকের বিরুদ্ধে নদীয়া-২৪ পরগনা বিশেষ খবর রাজ্য September 11, 2018 শিক্ষকদের কাজ শিক্ষা প্রদান – দেশের পরবর্তী প্রজন্মকে গড়ে তোলা। কিন্তু, এই বাংলায় বোধহয় তাঁদের জন্য আর ন্যূনতম সম্মানটুকুও অবশিষ্ট নেই। রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের হুমকি-মারের পাশাপাশি এবার নিজেদের দপ্তরের আধিকারিকের কাছেই চূড়ান্ত অসম্মানিত হতে হচ্ছে তাঁদের! শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক হুমকি দিচ্ছেন – সেই বৈঠকের ভিডিও, অডিও বা ছবি বাইরে গেলে – তিনি নাকি চাবকে চামড়া তুলে নেবেন! আর এই বিস্ফোরক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমত শোরগোল পরে গেছে গোটা রাজ্য জুড়ে! ঘটনার সূত্রপাত, গত ২৩ শে আগস্ট দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানার চঞ্চলাময়ী আদর্শ হাইস্কুলে টিচার-ইন-চার্জ তথা স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা আশীষ ভট্টাচার্য্য, বহিরাগত দুষ্কৃতীদের নিয়ে স্কুলে ব্যাপক হামলা চালান বলে অভিযোগ। কেননা, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে গত ৩ বছর ধরে তিনি কোনো অডিট করেননি, স্কুলে কোনো শৌচাগার নেই এবং ৬০ লক্ষ টাকা বিভিন্ন খাতে ঋণ দেখিয়েছিলেন। ওই স্কুলে মোট ১৩ জন শিক্ষকের মধ্যে ১১ জন শিক্ষকই এই নিয়ে এসআই থেকে ডিআই সকলের কাছেই লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু অভিযোগ, ওনার বিরুদ্ধে এইভাবে দুর্নীতির লিখিত অভিযোগ জমা পড়ায় উনি পরিকল্পিতভাবে স্কুলে হামলা চালান। স্কুলে সেই দুষ্কৃতী হামলায় গ্রূপ-ডি কর্মী পঞ্চানন খাটুয়া গুরুতর জখম হন। তাঁকে স্থানীয় হাসপাতাল থেকে এসএসকেএমে রেফার পর্যন্ত করতে হয়। এছাড়াও আরো দুজন শিক্ষক – বিপ্লব আঢ্য এবং দিব্যজ্যোতি সমাজপতিও বেশ ভালো রকমের জখম হয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি হন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের নেতৃত্ত্বে গত ২৬ শে আগস্ট আক্রান্ত শিক্ষকরা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক বা ডিআই নজরুল হক সিপাহীর সঙ্গে দেখা করেন। আক্রান্ত শিক্ষকরা তাঁর কাছে – দোষীদের শাস্তি, স্কুলে পঠন-পাঠনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং ওই স্কুলের টিচার-ইন-চার্জের পদত্যাগের দাবি জানান। আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে এর পাশাপাশি ওই আক্রান্ত শিক্ষকরা ঐদিনই বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের সাথে দেখা করেন। সমগ্র ঘটনা জেনে সুজনবাবু এই বিষয়ে লিখিতভাবে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জানান, অন্যদিকে মান্নান সাহেব তা লিখিতভাবে জানান স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এরপর গত রবিবার শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের পক্ষ থেকে ওই এলাকায় একটি প্রতিবাদ সভা হয়, সেখানে অম্বিকেশ মহাপাত্র, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান হরপ্রসাদ সমাদ্দার, মইদুল ইসলাম সহ একাধিক শিক্ষাবিদ উপস্থিত ছিলেন। আর এই সভার পরেই গতকাল বিকেল ৫ টা নাগাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডিআই নজরুল হক সিপাহী ওই স্কুলে যান। অভিযোগ ওঠে সেখানেই তিনি শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকের নামে কার্যত হুমকি দেন। বৈঠক শুরু হতেই সিপিএম-এর নাম করে তিনি তুমুল গালাগালি দিতে থাকেন বলে অভিযোগ ওঠে। এমনকি আক্রান্ত শিক্ষকরা কেন সুজনবাবু বা মান্নান সাহেবের দ্বারস্থ হয়েছেন তা নিয়েও চলে প্রবল ধমকানি। আর সেখানেই তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যে সেই বৈঠকের ভিডিও, অডিও বা ছবি বাইরে গেলে – তিনি নাকি চাবকে চামড়া তুলে নেবেন! স্বাভাবিকভাবেই, এই ঘটনার অডিও ক্লিপ এবং যে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এত কিছু সেই শিক্ষকদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেছে। আর তা প্রকাশ্যে আসতেই, প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে শিক্ষাবিদ থেকে সাধারণ মানুষ সবার মধ্যেই। https://www.youtube.com/watch?v=97DfY51ZU6w আপনার মতামত জানান -