প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- দল পরিবর্তন করার জন্য সহধর্মিনীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলায় জড়িয়ে পড়েছেন তিনি। তবে স্বামী রাজ্য যুব বিজেপি মোর্চার সভাপতি তথা সংসদ সৌমিত্র খাঁ-এর নামে আজও সিঁথিতে সিঁদুর এবং হাতে শাখা পড়েন সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হওয়া সুজাতা মন্ডল খাঁ। তবে রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা হলেও এবং স্বামী তাকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও, তিনি যে আজও সৌমিত্রবাবুর প্রতি সম্পর্কের নিরিখে নিষ্ঠা এবং শ্রদ্ধা রাখেন, তা প্রতিমুহূর্তে বুঝিয়ে দিয়েছেন সুজাতাদেবী।

বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ-এর সঙ্গে মৌমিতা সাহা নামে এক মহিলার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে বলে নানা মহলে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে বিজেপির একাংশ সৌমিত্রবাবুর বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্র চালানোর অভিযোগ তুলছেন। যেভাবে মৌমিতা সাহাকে জায়গা দেওয়া হয়েছে, তাতে বিজেপির একাংশ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। তবে মৌমিতাদেবীর সঙ্গে সৌমিত্রবাবুর যে সম্পর্কের জল্পনা নিয়ে নানা মহলে চর্চা শুরু হয়েছে, তাকে মানতে নারাজ তৃণমূলের নেত্রী তথা সৌমিত্রবাবুর সহধর্মিনী সুজাতা মন্ডল খাঁ।

সূত্রের খবর, এদিন স্বামী সৌমিত্র খাঁ এর সঙ্গে মৌমিতা সাহা নামে এক মহিলার সম্পর্ক তৈরি হওয়া নিয়ে যে জল্পনা তৈরি হয়েছে, তাকে সম্পূর্ণরূপে নস্যাৎ করে দেন সুজাতাদেবী। এদিন তিনি বলেন, “এই জল্পনার কোনো দাম নেই। ওকে যুব মোর্চার সভাপতি পদ থেকে সরানোর জন্য সব চক্রান্ত করা হচ্ছে। কিন্তু এত পরে কেন? আমি তো ভেবেছিলাম, অনেক আগেই এসব কথাগুলো রটানো হবে। আমাদের মধ্যে একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এটা অনেকেই জানে এবং তার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা একে অপরকে নয় বছর ধরে চিনি। ও অন্য মেয়েদের দিকে চোখ তুলেও তাকায় না। ওর পছন্দ এত নিচে নামবে না। এগুলো হাস্যকর মজাদারও বটে। প্রথমবার জল্পনা শুনে হো হো করে হেসেছিলাম। ও কোনোদিন কাউকে ব্যক্তিগতভাবে পাত্তা দেয় না। যারা পরিশ্রম করে জায়গা করে নেয়, তারা এই রকম রুচিহীন কাজ করতে পারে না। দিলীপ ঘোষ চাইছে, কিভাবে সৌমিত্রকে সরানো যায়। বিজেপির গোয়ালঘরের গরুদের মধ্যে গুঁতোগুঁতি চলছে। এখন তারা বুঝে উঠতে পারছে না, কি করবে। যারা এসব নোংরা চক্রান্ত করে, তারা আসলে নিজেরাই অত্যন্ত নোংরা রুচির। সৌমিত্রর কোনোদিন পরস্ত্রীকাতরতা ছিল না।”

একাংশ বলছেন, একদিকে স্বামীর প্রতি নিজের কর্তব্য এবং নিষ্ঠার পরিচয় দিলেন এবং অন্যদিকে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল বাড়িয়ে দেওয়ার সুকৌশল চেষ্টা করলেন সুজাতাদেবী। তিনি বুঝিয়ে দিলেন, তার স্বামীকে বিজেপির একটি গোষ্ঠী সরানোর জন্য এই সমস্ত বদনাম করতে চাইছে। কিন্তু তিনি যে তার স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং আস্থাভাজন, সেই কথা তুলে ধরে সৌমিত্রবাবুকে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেন সুজাতা মন্ডল খাঁ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ‌ বলা বাহুল্য, সুজাতাদেবী বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যুক্ত হওয়ার পরেই বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা করেন রাজ্য বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। কিন্তু তারপরেও এখনও পর্যন্ত স্বামীর প্রতি নিষ্ঠা এবং বিশ্বাস রেখে স্ত্রী হিসেবে যে তিনি সৌমিত্রবাবুর সঙ্গে রয়েছেন, তা জানিয়ে দিয়েছেন সুজাতাদেবী।

সাম্প্রতিককালে তার স্বামী তথা রাজ্য বিজেপির হেভিওয়েট নেতা সৌমিত্রবাবুর সঙ্গে এক মহিলার নাম জড়িয়ে পড়েছে। যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে। আর এই পরিস্থিতিতে সুজাতাদেবীর অবস্থান নিয়ে নানা মহলে গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল। তিনি কি তাহলে তার স্বামীর সঙ্গে এবার দূরত্ব স্থাপন করবেন, তা নিয়ে নানা মহলে তৈরি হয়েছিল প্রশ্ন। তবে সেই সমস্ত জল্পনাকে সম্পূর্ণরূপে মিলিয়ে দিয়ে তিনি যে সৌমিত্রবাবুর প্রতি আজও একইভাবে আস্থাশীল, তা বুঝিয়ে বিজেপির ভেতরের অন্তর্কোন্দল সামনে নিয়ে চলে আসলেন তৃণমূলের এই হেভিওয়েট নেত্রী। যা গেরুয়া শিবিরকে অত্যন্ত চাপের মুখে ফেলে দিল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।