জাতীয় নাগরিকপঞ্জী নিয়ে গেরুয়া শিবিরের অস্বস্তি বাড়িয়ে এবার বড় প্রশ্ন তুললেন দলীয় বিধায়কই জাতীয় August 1, 2018 সমগ্র অসম রাজ্য বর্তমানে আতঙ্কগ্রস্থ অবস্থায় রয়েছে। জাতীয় নাগরিকপঞ্জীকরণের চূড়ান্ত খসড়া থেকে বাদ গেছে ৪০ লক্ষ বাঙালিদের নাম। এই অস্বস্তির পরিবেশে উদ্বেগ বাড়িয়ে সামনে এল দলীয় বিধায়কদের বিতর্কিত মন্তব্য। এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকায় বিষ্ময়কর ভাবে নাম নেই অসমের বিজেপি বিধায়ক রমাকান্ত দেউড়ির। তবে লিস্টে নাম নথিভুক্ত করার সুযোগ আছে। কিন্তু তাতে ঘোর আপত্তি জানালেন তিনি। উল্টে প্রশ্ন ছুঁড়লেন মিডিয়ার সামনে। ‘ভূমিপুত্রদের আবার নাগরিকত্বের প্রমাণ কিসের?’ যুক্তিতে তিনি জানালেন,’আমি আমার পূর্বপুরুষ-সবাই ভারতীয়। এই মাটির সন্তান। তাই কোনো আবেদন আমি করব না।’ উল্লেখ্য, এনআরসির তালিকায় নাম নেই এআইইউডি বিধায়ক অনন্তকুমার মালোর এবং এনআরসি-র মূল কারিগর প্রতীজ হাজেলারও। ওদিকে, বিচ্ছিন্নবাদী জঙ্গি আন্দোলনের নেতা পরেশ বরুয়া সহ বহু জঙ্গী নেতার নাম এনআরসি-র তালিকাভুক্ত হয়েছে। আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে ——————————————————————————————- এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে। এছাড়া আরো জানা যাচ্ছে,বরাক উপত্যকায় শুধু সাধারন মানুষ নয়, এনআরসি-র তালিকায় ঠাই মেলেনি বহু বিশিষ্টজনের। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলি আহমেদের ভাইপো জিয়াউদ্দিন আলি আহমেদের নাম নেই নাগরিকপঞ্জিতে। নাম নেই কাছাড়ের বিজেপি বিধায়ক দিলীপ পালের স্ত্রী অর্চনা পালের । কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন বিধায়ক আতাউর রহমান মাজারভুঁইয়ার নামও বিপন্নদের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এআইইউডিএফ কাছাড় ইউনিটের সভাপতি সামিমুল ইসলাম ও তঁার পরিবারের কেউই নেই এনআরসি-তে। ওদিকে, কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান প্রশান্ত চক্রবর্তী জানিয়েছেন, তাঁর দুই দাদার নাম চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় থাকলেও তাঁদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের নাম সে-তালিকার থেকে উধাও। বাদ-পড়াদের জন্য দাবি বা আপত্তি করার সুযোগ, সংশোধনের অবকাশ থাকছে ঠিকই, কিন্তু দরিদ্রদের কাছে এ-সব নিতান্ত দুর্ভোগের। এমনটাই জানালেন,করিমগঞ্জের (উত্তর) কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ। রাজনৈতিক সূত্রের খবর থেকে জানা যাচ্ছে, ৩ কোটি ২৮ লক্ষ ৯১ হাজার ৩৮৯ জন আবেদনকারীর মধ্যে নাগরিক তালিকায় নাম নেই ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭০৭ জনের। এটা খাতায় কলমের হিসাব, তবে বাস্তবে সংখ্যাটা আরেকটু বেশি। কিন্তু তালিকা প্রকাশের ২৪ ঘন্টা পেরোনোর পরও গন আন্দোলনের কোনো নমুনা দেখা গেল না কেন এ বিষয়ে অসম রাজ্য নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমন্বয় সমিতির চেয়ারম্যান তপোধীর ভট্টাচার্য জানান, মানুষ আপাতত আতঙ্কিত। সংখ্যালঘুরা ভয়েই মুখের কুলুপ এঁটে আছেন। ওদিকে,প্রফুল্ল কুমার মহন্ত এদিন এনআরসি-র তালিকায় বাঙালি বা মুসলিম বিদ্বেষের অভিযোগ সম্পূর্ণই অস্বীকার করলেন। তাঁর মতে শুধুমাত্র বাংলাদেশিরাই এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। রাজ্যের আরেক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুন গগৈ এনআরসি-র তালিকা প্রকাশের নেপথ্যে রাজনৈতিক স্বার্থের দিকটা একেবারেই উড়িয়ে দিলেন না। তাঁর মতে,৪০ লাখ উদ্বাস্তু থাকতেই পারে না রাজ্যে। এ ব্যাপারে এনআরসি-র তালিকা প্রকাশের স্বচ্ছতা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করলেন বর্ষীয়ান এই কংগ্রেস নেতা। অন্যদিকে,মন্তব্যে সংখ্যালঘুদের দিকে ঝুঁকে প্রতিবাদে সরব হলেন জমিয়েত উলেমায়ে হিন্দ নেতা মওলানা আরশাদ মাদানি। তিনি জানালেন,সংখ্যালঘুদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তালিকা বহির্ভূত করা হয়েছে সংখ্যালঘুদের। এর জন্য তিনি সংখ্যালঘুদের পাশে থেকে লড়াই করবেন বলেই আশ্বাস দিয়েছেন। উল্লেখ্য,এনআরসি সূত্র থেকে জানা গেছে,এনআরসি-তালিকা থেকে যাদের নাম বাদ পড়েছে,তাঁদের কাছে সাতদিনের মধ্যেই চিঠি চলে যাবে। এর ভিত্তিতে পুনরায় তালিকায় নাম তোলার সুযোগ পাবেন ডি-ভোটাররা। তবে ডি-ভোটারদের তালিকাভুক্তদের নাম বাদ যাওয়ার কারণ প্রকাশ্যে আনা হবে না। শুধু নাম বাদ যাওয়ার খবরটুকু জানানো হবে। আপনার মতামত জানান -