পাহাড় নিয়ে বিজেপিকে মাত দিতে গিয়ে তৃণমূলের বড়সড় ক্ষতি হল না তো? কি বলছে 2021 এর সমীকরণ! উত্তরবঙ্গ তৃণমূল রাজনীতি রাজ্য November 5, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বেশ কিছুদিন ঠিকঠাক ছিল শৈলশহর। কিন্তু আবার বিমল গুরুং সক্রিয় হতে না হতেই সেই পাহাড়ের সমীকরণে বদলাতে শুরু করল। প্রথম দিকে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার ক্ষমতায় আসার পর পাহাড় শান্ত করার উদ্যোগ নিয়েছিল। যেখানে বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জিটিএ গঠন করে তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল গুরুং সাহেবকে। তারপর সবকিছু ঠিকঠাক চললেও মাঝে গোর্খাল্যান্ডের দাবি ওঠার সাথে সাথেই সেই বিমল গুরুং তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরব হয়ে বিজেপির সঙ্গে নিজের ঘনিষ্ঠতা বানাতে শুরু করেন। আর এরপরই পাহাড়ে শুরু হয় খণ্ডযুদ্ধ। পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হতে থাকে। এদিকে বিমল গুরুং এবং বিজেপির চাপে পাহাড় নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস অস্বস্তিতে পড়ার পরেই বিমল গুরুং বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা বিনয় তামাংকে জিটিএর দায়িত্বে বসিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। তারপর সবকিছু ঠিকঠাক চললেও সাম্প্রতিক কালে আবার বিমল গুরুং প্রকাশ্যে এসেছেন। যেখানে এনডিএ ত্যাগ করার কথা বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরার কথা জানিয়েছেন তিনি। আর এর পরেই নতুন করে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে পাহাড়ের রাজনীতিতে। ইতিমধ্যেই বিমল গুরুংকে স্বাগত জানানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তার অনুগামীরা। তবে এই বিমল গুরুংকে যে তারা কোনোভাবেই মেনে নেবেন নাড় তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন বিনয় তামাং এবং তার অনুগামীরা। আর এর ফলে রাজ্য সরকার চরম সমস্যায় পড়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু এতে রাজ্য সরকারের অসুবিধে কোথায়? একাংশ বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন, বিগত লোকসভায় পাহাড়ের ফলাফল ভালো হয়নি বিমল গুরুংয়ের জন্য। কেননা বিমল গুরুং তখন বিজেপির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে দিয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই বিমল গুরুংকে এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাশে পেলে পাহাড় তথা উত্তরবঙ্গের ফলাফল ভালো করা তার কাছে অনেকটাই সুবিধা হয়ে দাঁড়াবে। তাই বিমল গুরুংকে সাথে নিয়ে পথ চলা তার কাছে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এর ফলে পাহাড়ের শান্তি-শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা বিনয় তামাং গোষ্ঠী আবার ক্ষিপ্ত হতে শুরু করেছেন। তাদের দাবি, এতদিন ধরে পাহাড়কে শান্ত করে রেখেছিলেন তারা। ফলে এবার বিমল গুরুংয়ের মত ব্যক্তিকে যদি বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে তাদের অপমান করা হবে। স্বাভাবিকভাবেই এই ব্যাপারে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই বিমল গুরুংদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি সমাধানের চেষ্টা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সাময়িক পরিস্থিতির সমাধান হলেও, ভবিষ্যত আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তাদের দাবি, এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক ঢিলে দুই পাখি নাও হতে পারে। কেননা বিমল গুরুং এবং বিনয় তামাং দুজনেই নিজেদের জায়গা ছাড়তে নারাজ। সেক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ের সংগঠন পুনরুদ্ধার করতে গেলে এই দুইজনকেই অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই কাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে টানবেন, আর কাকে হালকা করে রাখবেন, তা নিঃসন্দেহে চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেনতেন প্রকারেণ এবার পাহাড় শান্ত রাখতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। যদি তার আগে পাহাড় উত্তপ্ত হতে শুরু করে দুই গোষ্ঠীর গন্ডগোলে, তাহলে বিরোধীরা নতুন করে এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে ময়দানে নামতে পারে। কেননা বিমল গুরুংয় বা বিনয় তামাং একমঞ্চে যে কোনোমতেই থাকবেন না, একথা কারোরই অজানা নয়। তাই এই দুই নেতাকে এক করা রাজ্য সরকারের পক্ষে কতটা সম্ভবপর হবে, তা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে সকলের কাছে। আর দুই নেতাকে এক করতে গিয়ে নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক যদি পুনরুদ্ধার করার কথা ভাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাহলে তা আদতে তৃণমূলের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন একাংশ। সব মিলিয়ে শ্যাম এবং কুল দুই ঠিক রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ের মাটিতে নিজের দলকে প্রতিষ্ঠিত করতে কি স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করেন, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -