‘রাফাল’ কি একদিন ‘বোফর্স’ হবে? গেরুয়া শিবিরের উপর চাপ বাড়াচ্ছে কংগ্রেস জাতীয় July 24, 2018 দিন তিনেক আগে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব আলোচনার সময়ই রাফাল চুক্তিতে ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ তুলে মোদীসরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করতে দেখা গেছিল জাতীয় কংগ্রেস সুপ্রিমো রাহুল গান্ধীকে। এ নিয়ে সংসদে বেশ শোরগোলও পড়ে গেছিল। এই শোরগোলে আরো একটু ইন্ধন জোগাতে প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বাধীকার ভঙ্গের নোটিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল জাতীয় কংগ্রেস। খোদ অভিযোগকারী হলেন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা তথা প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি। অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, রাফাল যুদ্ধবিমান নিয়ে ভুল তথ্য পেশ করে সংসদকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন মোদীজি এবং নির্মলা সীতারমণ। ওদিন সংসদেও রাহুল গান্ধীর অভিযোগের জবাবে তাঁরা যে তথ্য দিয়েছেন সেটাও সম্পূর্র মিথ্যা। সত্য ঢাকার প্রয়াস করেছেন তাঁরা। এমনটাই দাবী এই প্রবীন নেতার। এদিকে আবার রাফাল-কান্ড নিয়ে বিজেপির সদস্যরাও রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের যে নোটিশ দিয়েছেন সেটা এই মুহূর্তে সেটা তাঁর বিবেচনাধীন, এমনটাই জানিয়েছেন লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে ——————————————————————————————- এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে। উল্লেখ্য,২০০৮ সালে ভারত সরকারের তরফ থেকে ফ্রান্সের সঙ্গে গোপনীয়তার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন সেসময়ের প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যান্টনি। তবে তাঁর যুক্তি,যতই গোপনীয়তার চুক্তি থাক না কেন, সেই দোহাই দিয়ে বিমানের দাম প্রকাশ না করা অবশ্যই দুর্নীতির নামান্তর। কারণ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী শুধুমাত্র যুদ্ধবিমানগুলোর কারিগরি এবং কৌশলগুলো দিকগুলোই গোপন রাখতে হবে। সেই ছুতোয় দামটাও গোপন রাখছে মোদীসরকার এখন। এরসঙ্গে যুক্তিতে তিনি জানান বিমানের দাম প্রকাশ না করলে তো ক্যাগ অডিটও করা যাবে নস। বিমান কেনার সমস্ত তথ্য ক্যাগ ছাড়াও সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস্ কমিটির জানানো উচিত। অনুমোদন নেওয়া উচিত মন্ত্রীসভার সুরক্ষা বিষয়ক কমিটির কাছ থেকে। সেসব কোনো শর্তই পূরণ করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। এছাড়া এতোদিন ধরে বিমানের দাম না জানানোর জন্য সংসদকে ভুলভাল কারণ দেখিয়েছে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে সংসদকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগে চলতি সপ্তাহেই কংগ্রেসের তরফ থেকে মোদী সরকাররের কাছে স্বাধীকার ভঙ্গের নোটিশ পাঠানো হবে বলে জানালেন তিনি। প্রসঙ্গত, আস্থা ভোটের দিন রাহুল গান্ধী যখন মোদীজিকে এই ইস্যুতে বিঁধছিলেন। প্রশ্ন তুলেছিলেন ইউপিএ আমলে যে যুদ্ধবিমানের দিম মাত্র ৫২০ কোটি টাকা ছিল তা মোদীসরকারের জামানায় ১৬৭০ টাকা হল কীভাবে? মোদীজি ফ্রান্স সফরে গিয়ে কী এমন ম্যাজিক করলেন যে এক ঝটকায় এতো দাম বেড়ে গেল? সেইসঙ্গে এটাও অভিযোগ জানিয়েছিলেন যে মোদীজির অঙ্গুলিহেলনেই সীতারমন বিমানের দাম প্রকাশ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েও করেননি। এছাড়া কংগ্রেসের হাইকমান্ডার যখন তীব্র আক্রমণ শানাচ্ছিলেন কেন্দ্র সরকারকে,তখন তখন তাঁর বক্তব্য শেস হওয়ার আগেই পাল্টা প্রতিবাদে সরব হতে দেখা গেছিল প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে। সঙ্গে ২০০৮ সালের ইউপিএ আমলে রাফাল সংক্রান্ত ভারত-ফ্রান্স গোপনীয়তা চুক্তির কপিও যুক্তিতে দেখালেন। দাবীতে বললেন,এই চুক্তির শর্ত অনুযায়ীই রাফালের দাম প্রকাশ করা হয়নি। ফ্রান্স সরকার বিবৃতি দিয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করার কথা বললেও দাম সংক্রান্ত কোনো গোপনীয়তার উল্লেখ ছিল না সেখানে। তাই এই দাম প্রসঙ্গেই আনন্দ শর্মা এবং রণদীপ সুরজেওয়ালারা মোদীসরকারকে সাঁড়াশি আক্রমণ করলেন। বক্তব্যে তাঁরা জানিয়েছেন যে ২০১৬ সালের ১৮ নভেম্বর এবং গত ১৯ মার্চ রাজ্যসভার লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রতিরক্ষা রাষ্ট্রমন্ত্রী সুভাষ ভামরে জানিয়েছিলেন কিছু জিনিস বাদ দিয়ে প্রতিটি রাফাল যুদ্ধবিমান পিছু দাম নির্ধারিত হয়েছে ৬৭০ কোটি টাকা। এদিকে, ফ্রান্সের ওই বিমান সংস্থার বার্ষিল হিসাব নিকাশ সংক্রান্ত তথ্য থেকে জানা গেছে প্রতিটি রাফাল বিমানের দাম ১৬৭০ কোটি টাকা। এই দুর্নীতির বিরুদ্ধেই সরব হতে দেখা গেলো জাতীয় হাটপার্টিকে। লোকসভা ভোটের আগে মোদীসরকারের উপর রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতেই এদিন সংসদ ভবনে অ্যান্টনির মতে বরিষ্ঠ নেতাকে মিডিয়ার সামনে এগিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস। এমনটাই আন্দাজ করছে রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহল। আপনার মতামত জানান -