এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > একের পর এক তৃণমূলের প্রথমসারির নেতানেত্রীর নিশানায় হেভিওয়েট শীর্ষনেতা? চাপ বাড়ছে মমতার?

একের পর এক তৃণমূলের প্রথমসারির নেতানেত্রীর নিশানায় হেভিওয়েট শীর্ষনেতা? চাপ বাড়ছে মমতার?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – হাওড়া জেলা এখন যেন তৃণমূলের কাছে প্রধান মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৈশালী ডালমিয়া থেকে শুরু করে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, রথীন চক্রবর্তী থেকে শুরু করে লক্ষ্মীরতন শুক্লা, একের পর এক হেভিওয়েট নেতার পদক্ষেপ এবং মন্তব্যকে নিয়ে এখন চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের। আশ্চর্যজনকভাবে এই সমস্ত নেতা নেত্রীরা যখন দলের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখছেন এবং ইস্তফা দিতে শুরু করেছেন, তখন তাদের মুখ থেকে একজন নেতার উদ্দেশ্যে শোনা যাচ্ছে মন্তব্য।

অনেকেই বলছেন, এই সমস্ত বিদ্রোহী নেতারা দলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করে বা বক্তব্য রাখলেও, তারা কোন নেতার বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ রয়েছে, তা এখনও পর্যন্ত পরিষ্কার করেননি। তবে তাদের মন্তব্যের মধ্যে নিয়ে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, তাদের প্রধান আপত্তির কেন্দ্রবিন্দু হাওড়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়। যার ফলে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, একের পর এক নেতা যখন একজনকে উদ্দেশ্য করে এই ধরনের মন্তব্য করছেন, তখন নিশ্চয়ই গোড়ায় গলদ রয়েছে।

কেননা সকলেই নিজেদের মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দিতে চাইছেন, তারা দলে স্বাধীন মত কাজ করতে পারছেন না। তাহলে কি তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করছেন অরুপবাবু! এখন তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। তবে এই বিষয়ে যখন প্রশ্ন উঠছে, তখন জল্পনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বিদ্রোহী নেতাদের দলত্যাগ। আর যদি হাওড়া জেলার একের পর এক হেভিওয়েট জনপ্রতিনিধিরা দলত্যাগ করতে শুরু করেন, তাহলে একা অরূপ রায় কি সামলাতে পারবেন হাওড়া জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন! এই বিষয়টি নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বেশ কিছুদিন আগে হাওড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা পাশাপাশি মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে দেখা গেছে তাকে। আর এরপরই সম্প্রতি রাজ্যের মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন হাওড়া জেলা ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। একের পর এক জনপ্রতিনিধিরা যখন মন্ত্রী এবং সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন তখন দলের বিরুদ্ধে বেসুরো মন্তব্য করতে শুরু করেন বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া আর তারপরেই তাকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে আশ্চর্যজনকভাবে যে সমস্ত নেতা নেত্রীরা পদ থেকে ইস্তফা দিতে শুরু করেছেন, তাদের গলায় জেলা নেতৃত্বের কোনো একজন সম্পর্কে যে যথেষ্ট অভিযোগ রয়েছে, তা কার্যত পরিষ্কার। একসময় তো বৈশালী ডালমিয়া বলেই ফেলেন, “জেলার একজন মিলে সবকিছু সামলাচ্ছে। এভাবে তো চলা যায় না।” স্বাভাবিকভাবেই তিনি কাকে একথা বলছেন, তা নিয়ে তৈরি হয় প্রশ্ন। আর তারপরেই একাংশ বলেন, এটা নিশ্চিত যে, জেলার সিংহভাগ তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অরূপ রায়ের ব্যবহারে কিছুটা হলেও ক্ষুব্ধ।

আর তাই তারা নাম না করে হলেও সেই অরুপবাবুর উদ্দেশ্যেই সরব হতে শুরু করেছেন। অন্যদিকে এই ব্যাপারে অরুপবাবু অবশ্য বিন্দুমাত্র ভাবিত নন। একের পর এক নেতা যখন পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন, তখন তিনি পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, “এতে কারো কিছু এসে যায় না। দল দলের মত করে চলবে।” আর এখানেই প্রশ্ন, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে লক্ষ্মীরতন শুক্লা, বৈশালী ডালমিয়া বা রথীন চক্রবর্তীর মত ব্যক্তিরা যদি দলত্যাগ করেন, তাহলে কি তিনি একা হাওড়া জেলা জুড়ে তৃণমূলের জয় নিশ্চিত করতে পারবেন! কেননা এই সমস্ত নেতা নেত্রীরা এতদিন তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছেন।

স্বাভাবিকভাবেই তারা যদি দলত্যাগ করেন, তাহলে তাদের সঙ্গে অনেক অনুগামী ঘাসফুল শিবির ত্যাগ করতে পারেন। কিন্তু তখন অরূপ রায়ের মত নেতা কিভাবে একা কুম্ভ হয়ে নিজের গড় রক্ষা করবেন, সেটাই এখন চিন্তার বিষয় অনেকের কাছে। তাই এই পরিস্থিতিতে অনেকেই বলছেন, অবিলম্বে সমস্যার সমাধান করতে অরূপবাবুকে সকল নেতা নেত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসা উচিত। বিশ্লেষকরা বলছেন, তৃণমূল দলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ কথা বলেন। এক্ষেত্রে তার মুখ দেখেই যে গত 2016 সাল এবং 2011 সালের নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, তা বলাই যায়। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে ভিন্ন। দিনকে দিন বিজেপির প্রভাব রাজ্যে বাড়তে শুরু করেছে।

আর বিজেপির প্রভাবে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ একা কাজ করতে পারবে না, তা গত লোকসভা নির্বাচনেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। 18 টি আসন দখল করে রীতিমত তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। তাই এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল নেতৃত্বের বোঝা উচিত, এখন সকলকে নিয়ে পথ চলতে হবে। তা না হলে 2021 এর ফাইনাল ম্যাচ জেতা তাদের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন হয়ে যাবে। এমনিতেই দলের ভাঙ্গন চরম আকার ধারণ করেছে। তাই এই পরিস্থিতিতে হাওড়া জেলার একের পর এক নেতা নেত্রীরা যখন তাদের পদ ছাড়ছেন এবং দলবদলের কথা ভাবছেন বলে জল্পনা ছড়িয়েছে, তখন একজনের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ উঠলেও কেন তৃণমূল নেতৃত্ব পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।

কেনই বা বিদ্রোহী নেতারা নাম না করে অরূপ রায়ের বিরুদ্ধে বার্তা দিলেও অরুপবাবু সুর নবম করছেন না, সেই ব্যাপারটি ভাবাতে শুরু করেছে হাওড়া জেলা তৃণমূল নেতাকর্মীদের। এখন সময় থাকতে থাকতে বিদ্রোহী নেতাদের মান ভাঙাতে অরূপ রায় বা তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, নাকি হাওড়া জেলায় তৈরি হয় নতুন কোনো সমীকরণ! সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!