তিনফসলি চাষের জমির মাটি ‘চুরি’ হয়ে যাচ্ছে ইটভাটায়! মমতার কৃষকবন্ধু ভাবমূর্তিতে বড়সড় ধাক্কা? উত্তরবঙ্গ তৃণমূল রাজনীতি রাজ্য January 25, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে যখন কৃষকরা রাস্তায় নেমেছে, ঠিক তখনই পাল্টা সেই কৃষকদের পক্ষ অবলম্বন করতে দেখা যায় তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যেখানে কৃষকদের জন্য তার সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক প্রকল্প করা হয়েছে বলে কেন্দ্রকে পাল্টা চাপে ফেলে দেন তিনি। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে তার সরকারের কৃষক দলের ভাবমূর্তি সামনে দেখানোর চেষ্টা করলেও, এবার তিন ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠতে শুরু করল বাংলায়। যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। ক্ষুব্ধ হয়েছেন কৃষকরা। জানা গেছে, রবিবার তুফানগঞ্জ 1 ব্লকের নাককাটিগছ গ্রাম পঞ্চায়েতের ধাধিয়াল গ্রামের কৃষকরা এই ব্যাপারে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন। তাদের দাবি, অবিলম্বে এই মাটি কাটার কাজ বন্ধ করতে হবে। এদিন পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে উঠেছে যে, রাস্তা অবরোধ করে রীতিমতো বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কৃষকরা। পরবর্তীতে অবশ্য পুলিশ এসে সেই বিক্ষোভ তুলে দেয়। তবে সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে মাটি মাফিয়ারা জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছে বলে যে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে, তাতে রীতিমত চাপে প্রশাসন। একাংশ বলছেন, বারবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদরদী ভাবমূর্তি সামনে আনা হয়। কিন্তু এই ঘটনায় তাদের সেই ভাবমূর্তি যে অনেকটাই ব্যাকফুটে চলে গেল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। নির্বাচনের আগে এখন এই ঘটনায় শাসক দলকে নতুন করে চাপে ফেলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। এদিন এই প্রসঙ্গে তুফানগঞ্জ বিধানসভায় বিজেপির সংযোজক উৎপল দাস বলেন, “এসব বেআইনি কাজে দালালচক্র তুফানগঞ্জে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এই দালাল চক্রের সঙ্গে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের কিছু নেতা জড়িত। এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমরা প্রশাসনকে একাধিকবার বলেছি। প্রশাসন ব্যবস্থা নিলে একই ঘটনা বারবার ঘটত না।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - অন্যদিকে এই ব্যাপারে স্থানীয় অঞ্চলের বিজেপি নেতা প্রসেনজিৎ বসাক বলেন, “অবৈধভাবে জমি থেকে মাটি কাটার ফলে কৃষকদের ক্ষতি হচ্ছে। এর পেছনে শাসক দলের নেতাদের হাত আছে।” তবে বিজেপির পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে তৃণমূলের দিকে অভিযোগ তোলা হলেও, তা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন এই প্রসঙ্গে স্থানীয় অঞ্চলের তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সহ-সভাপতি আমানুল হোসেন বলেন, “এর সঙ্গে আমাদের দলের কোনো যোগ নেই। বিজেপির লোকজন জড়িত। এত দিন যখন মাটি কেটে ডাম্পারে চাপিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন ওরা চুপচাপ ছিল। এখন টাকার ভাগ বাটোয়ারা কম হচ্ছে বলে গ্রামের লোকজনদের উস্কে দিয়ে রাস্তা অবরোধ করিয়েছে।” এদিকে এই ব্যাপারে তুফানগঞ্জ 1 পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তৃণমূলের ছামিউল ইসলাম বলেন, “রাজ্য সরকার এই সমস্ত অবৈধ কাজকে সমর্থন করে না যদি কেউ অবৈধভাবে মাটি কাটে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি পুলিশ প্রশাসন এবং ভূমি দপ্তরের সঙ্গে কথা বলব।” বিশ্লেষকরা বলছেন, এমনিতেই দুর্নীতি সহ একাধিক বিষয়ে তৃণমূলের উপর ক্রমাগত চাপ বাড়াতে শুরু করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এদিকে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে কৃষকদের বিক্ষোভ এমনিতেই চাপে রয়েছে বিজেপি। আর সেই চাপ বাড়িয়ে দিতে বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিজেপিকে আরও কড়া ভাষায় আক্রমণ করা হচ্ছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে যেভাবে মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল, তাতে তৃণমূল যে অনেকটাই চাপে পড়ে গেল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -