এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ‘সব থেকে বড় দেশদ্রোহীদের গড় বাংলা’ ফের বেলাগাম রাজ্য বিজেপি সভাপতি

‘সব থেকে বড় দেশদ্রোহীদের গড় বাংলা’ ফের বেলাগাম রাজ্য বিজেপি সভাপতি


সম্প্রতি বঙ্গ বিজেপি সভাপতি রানাঘাটের নদীয়াতে এমন একটি বক্তব্য দিয়েছেন, যা নিয়ে তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। অতীতেও বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ এমন কিছু বক্তব্য করেছেন প্রকাশ্যে, যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এবারেও এনআরসি এবং সিএএ বিরোধিতায় যারা রত রয়েছেন, তাঁদেরকে গুলি করে মারার নিদান দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এমনিতেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে ঘিরে গোটা দেশে বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে। আর তারই মাঝে এধরনের কথা বলে ওই বিক্ষোভের আগুনকে যথারীতি আরেকটু উসকে দিলেন তিনি। এর ফলে রাজ্য বিজেপির অন্দরে যথেষ্ট অস্বস্তির সৃষ্টি হয়েছে। আর সেই কারণে তিনি নিজের দলের অন্দরেই সমালোচনার শিকার হচ্ছেন।

রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এদিন তাঁকেই সংশোধনাগারে ঢোকানোর নিদান দিয়েছেন রাজ্যের কারা মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। এদিন কারা মন্ত্রী বলেন,’অবিলম্বে ওঁকে সংশোধনাগারে ঢোকানো উচিত। তারপর সংশোধন করে ওঁকে ফেরত পাঠানো হোক।’ অন্যদিকে, রানাঘাটে দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশের কাছে তিনি আর্জি জানিয়েছেন, মেদিনীপুরের সাংসদের কাছে কোন আগ্নেয়াস্ত্র থাকলে সেটি যেন বাজেয়াপ্ত করা হয়। আবার হাবরাতেও দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। এদিন অভিযোগ পেয়ে পুলিশ দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে বলে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে অবশ্য বিজেপির জেলা নেতা স্বপনকুমার দাম জানান, ‘দিলীপ ঘোষ অন্য রাজ্যের উদাহরণ দিয়েছেন। বিষয়টিকে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।’ উল্লেখ্য, গত রবিবার নদীয়ার রানাঘাটে বিজেপির পক্ষ থেকে একটি সংশোধনী নাগরিকত্ব আইন এর সমর্থনে সভা করা হয়। সেই সভায় দাঁড়িয়ে সিএএ বিরোধী আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘এই রাজ্যে একটাও গুলি চলেনি, লাঠি চলেনি, এফআইআর হয়নি। কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। কিন্তু কেন করেনি? কারও বাপের সম্পত্তি নাকি? মানুষের করের টাকায় রেল-বাস, রেললাইন, রাস্তা করা হয়। সেসব নষ্ট করে দিয়েছে। অসম, উত্তরপ্রদেশ, কর্ণাটকে এই শয়তানদের আমাদের সরকার গুলি করে মেরেছে কুকুরের মতো। তুলে নিয়ে গিয়ে কেস দিয়েছে। ওরা এখানে আসবে, খাবে, আর এখানকার সম্পত্তি নষ্ট করবে? জমিদারি পেয়েছে নাকি? লাঠিও মারব, গুলিও করব, জেলেও পাঠাবো। আর তাই করেছে আমাদের সরকার।’

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

দিলীপ ঘোষের মন্তব্যটি সামনে আসার সাথে সাথেই তুমুল প্রতিবাদ জানায় রাজ্যের বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। রাজ্য বিজেপি সভাপতির এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূল। অন্যদিকে, বিজেপি সভাপতির এই মন্তব্যের কড়া নিন্দা করেছেন রাজ্যের তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিলীপ ঘোষের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল পালটা বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন। তিনি উল্টে বলেন ‘কেন্দ্র সরকারের দিলীপ ঘোষকে গুলি করে মারা উচিত।’

দিলীপ ঘোষের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিজেপি দল কার্যত অস্বস্তিতে। রাজ্য বিজেপি সভাপতি রীতিমতো দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। যদিও রাজ্য বিজেপি সভাপতি বাবুলের এই কথাকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছেন। কারণ 24 ঘন্টার মধ্যেই খড়্গপুরে দাঁড়িয়ে আবারও বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসেন তিনি। এবার তিনি বললেন, ‘সব থেকে বড় দেশদ্রোহীদের গড় বাংলা’। পরপর বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য দিলীপ ঘোষ রাজনৈতিক মঞ্চে এইমুহুর্তে কোণঠাসা। আর সেই কারণেই রাজ্যের কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস দিলীপ ঘোষকে সংশোধনাগারে পাঠাবার কথা বলেছেন।

ইতিমধ্যেই রাজ্য বিজেপির সভাপতির মন্তব্যকে ঘিরে তুমুল সমালোচনার ঝড় উঠেছে বাংলার রাজনৈতিক মহলে। শুধু তাই নয়, তাঁর মন্তব্যকে ঘিরে কেন্দ্রীয় বিজেপি মহলেও যথেষ্ট অস্বস্তির সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে বারংবার রাজ্য বিজেপি সভাপতি যেভাবে বিতর্কিত মন্তব্য করে চলেছেন, তাতে রাজ্য রাজনীতিতে তার প্রভাব কিছুটা হলেও কমতে থাকবে। সামনেই রাজ্যজুড়ে বিধানসভা ভোটের দামামা বেজেছে। আর তার মাঝেই বিজেপি সভাপতির এই মন্তব্য বিজেপি দলকে অন্য কোনো রাজনৈতিক মাশুল দিতে বাধ্য করায় কিনা, সে বিষয়ে নজর রাখবে রাজ্যের ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!