এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > রাজ্যের বিক্ষুব্ধ মন্ত্রী তথা দাদাকে বোঝাতে এবার সরাসরি আসরে প্রশান্ত কিশোর, রুদ্ধদ্বার বৈঠক ঘিরে বাড়ছে জল্পনা !

রাজ্যের বিক্ষুব্ধ মন্ত্রী তথা দাদাকে বোঝাতে এবার সরাসরি আসরে প্রশান্ত কিশোর, রুদ্ধদ্বার বৈঠক ঘিরে বাড়ছে জল্পনা !


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূলে ক্রমশ বাড়ছে অন্তর্দ্বন্দ্ব তথা দলীয় কোন্দল। উত্তর থেকে দক্ষিনে যার ঢেউ আছড়ে পড়ছে। একাধিক জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল অব্যাহত। কোচবিহার, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, হুগলি বিভিন্ন জেলায় শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে চলে এসেছে। সম্প্রতি হাওড়া জেলায় দলের প্রতি যথেষ্ট বিক্ষুব্ধ হতে দেখা গেল মধ্য হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্য সরকারের মন্ত্রী অরূপ রায়কে।আগামী বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বে তৃণমূল দলের সংগঠনগত রদবদলের পর জেলা সভাপতির পদ হারিয়ে দলের প্রতি যথেষ্ঠ ক্ষুব্ধ সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়।

এবার তাঁকে বোঝাতে আসলে নেমে এলেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মধ্য হাওড়ার ধর্মতলা লেনে মন্ত্রী অরূপ রায়ের সঙ্গে দেড়ঘন্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলল প্রশান্ত কিশোরের। তবে বৈঠকের দুজনের মধ্যে কি বিষয় নিয়ে আলোচনা হল? বৈঠক থেকে সমাধান হলো? তা এখনো জানা যায়নি কিন্তু। তবে, মন্ত্রী অরূপ রায়ের শিবিরের আশা, এবার জেলার কোন বড় দায়িত্ব দেওয়া হতে চলেছে মন্ত্রীকে। আবার, এই বৈঠকের পর কি হতে চলেছে, তা নিয়ে কৌতুহল বাড়ছে বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিবিরেরও।

প্রসঙ্গত গত ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রীর ৪২/৪২ এর ঘোষণা অরণ্যে রোদন হয়ে ফিরে এলে, রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল বিজেপির বাড়বাড়ন্ত বাড়লে। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল রাজ্যে তলব করে আনে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরকে। রাজ্যের শাসক দলের সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধি করেছেন তিনি। এবারে তাঁকে দলের গোষ্ঠী কোন্দল থামাবার, তথা অভিমানী বিধায়ক, মন্ত্রীকে শান্ত করার দায়িত্ব দেয়া হলো। একারণেই, গতকাল রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলছে মন্ত্রী অরূপ রায় ও পিকের মধ্যে।

তবে, শাসকদল তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব পিকে কতটা রোধ করতে পারবেন? সে বিষয়ে নানা প্রশ্ন, জল্পনা থেকেই যাচ্ছে। কারণ জেলায় জেলায় দেখা দিচ্ছে দলের গোষ্ঠী কোন্দল। হুগলি জেলা কমিটি গঠন করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার হুগলি জেলা কমিটি ঘোষণার সময়। অকস্মাৎ তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। আবার, পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা কমিটি গঠন করতে গিয়েও ব্যাপক অসন্তোষের মুখে পড়তে হয়। এবার হাওড়াতে কি হতে চলেছে সেদিকে সকলের দৃষ্টি সকলের।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রসঙ্গত হাওড়া জেলায় দীর্ঘ সময় ধরে জেলা সভাপতির পদে ছিলেন সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়। যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী থাকালীনই মুখ্যমন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ট তিনি। তবে, গত একুশে জুলাই এর পর দলের সাংগঠনিক রদবদল ঘটিয়ে জেলা সভাপতির পদ থেকে তাঁকে ইস্তফা দেওয়ানো হয়। পরিবর্তে জেলা সভাপতি করা হয় উত্তর হাওড়ার বিধায়ক ও মন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে। এদিকে, হাওড়া জেলা তৃণমূলে তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা হিসেবে পরিচিত হলেন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে মন্ত্রী অরূপ রায়ের জেলা সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার অরূপ রায়ের গোষ্ঠী ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোষ্ঠীর মধ্যে একটা সমবিভাজন তৈরি হতে থাকে। কিছুদিন আগে এই দুই গোষ্ঠীর মিছিলে শোরগোল পড়ে যায় সদর হাওড়া জুড়ে। অনেকে মনে করছেন, হাওড়া জেলা তৃণমূল দুই গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।

আবার, একটা সময় হাওড়া জেলায় বিশেষ ক্ষমতাশালী ছিলেন মন্ত্রী অরূপ রায়। সম্প্রতি বন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এর শিবির ক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নেবার চেষ্টা করছে। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এর শিবির তৃণমূল কর্মীদের বারবার বোঝাচ্ছে যে, অরূপবাবু সাইড লাইন হয়ে পড়েছেন। তবে, এতকিছুর পরও দু-তিন মাস চুপচাপ ছিলেন অরূপ রায়। সম্প্রতি দলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তিনি এমন সময় যখন বিধানসভা ভোট আসতে আর মাত্র কয়েক মাস বাকি। একেবারে বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে দলের প্রতি তিনি সরব হয়েছেন। যার ফলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বাড়ছে হাওড়া জেলায়।

অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন মন্ত্রী অরূপ রায়কে এবার দল ছাড়ার ব্যাপারে কোনো চিন্তাভাবনা করছেন? যদিও দল ছাড়ার ব্যাপারে মন্ত্রী নিজে বা তাঁর ঘনিষ্ঠরা কিছুই জানাননি। কিন্তু বিজেপির নেতৃত্ব এর ইঙ্গিত দিচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নন্দী বাগান এলাকায় এক স্থানীয় হেভিওয়েট বিজেপি নেতা তাঁর অনুগামীদের নিয়ে কচুরি, চাটনি, সোনপাপড়ি সহযোগে আহার করতে করতে জানালেন যে, আগামী ৩১ সে ডিসেম্বর রাত বারোটার পর ক্যালেন্ডার পাল্টে যাবে। ২১ সাল এলেই নতুন কিছু দেখা যাবে।

অন্যদিকে গতকাল পিকের সঙ্গে মন্ত্রীর বৈঠক প্রসঙ্গে সিপিএমের হাওড়া জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার জানালেন, ” মাঝখানে তৃণমূলের ভোট ম্যানেজার থলে হাতে বামেদের কিনতে বেরিয়েছিলেন। ব্যর্থ হয়ে এবার নিজের লোককে সামলাতে নেমেছেন। আসলে তৃণমূল পার্টিটাই সুতোর উপর ঝুলছে” এই পরিস্থিতিতে গতকালের বৈঠকে মন্ত্রী ও পিকের মধ্যে কি আলোচনা হল, তা নিয়ে কৌতুহল বাড়ছে সকলের। সকলের প্রশ্ন পিকে কি মন্ত্রী কে আশ্বস্ত করতে পারবেন? তিনি কি বন্ধ করতে পারবেন দলের গোষ্ঠীকোন্দলকে? শাসক দলকে কি তিনি ঐক্যবদ্ধ করতে পারবেন নির্বাচনের প্রাক্কালে?

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!