এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > টানা চতুর্থ দিন প্রশ্ন ফাঁস মাধ্যমিকের সোশ্যাল মিডিয়ায় শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে হাসি-মস্করার পাশাপাশি পর্ষদ সভাপতির পদত্যাগ দাবি

টানা চতুর্থ দিন প্রশ্ন ফাঁস মাধ্যমিকের সোশ্যাল মিডিয়ায় শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে হাসি-মস্করার পাশাপাশি পর্ষদ সভাপতির পদত্যাগ দাবি

এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর আগেই নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রচন্ড পরিমানে কড়া করে দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল পর্ষদের তরফে। কিন্তু পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিন থেকেই সেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরোর মত আলগা হয়ে যেতে শুরু করল একের পর এক প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায়।

পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিনই প্রথম ভাষা বাংলার পরীক্ষা শুরু হওয়ার এক ঘন্টার মধ্যেই সেই প্রশ্নপত্র হোয়াটসঅ্যাপে ফাঁস হয়ে যায়। আর প্রথম দিনের পর দ্বিতীয় ভাষা ইংরেজী এবং ইতিহাস পরীক্ষার দিনে যথাক্রমে পরীক্ষা শুরু হওয়ার এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যেই হোয়াটসঅ্যাপে সেই প্রশ্নপত্র ভাইরাল হতে দেখা যায়।

আর একের পর এক প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনায় যখন তীব্র বীতশ্রদ্ধ হতে শুরু করেছেন পড়ুয়া থেকে অভিভাবকরা, ঠিক তখনই সেই প্রথম দিনের ট্র্যাডিশনকে বজায় রেখে গতকাল ভূগোল পরীক্ষা শুরুর এক ঘন্টার মধ্যেই সেই মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র ভাইরাল হয়ে গেল হোয়াটসঅ্যাপে।

যেখানে দেখা গেছে যে এদিন বারোটা বাজতে না বাজতেই হোয়াটসঅ্যাপ একটি ভূগোলের প্রশ্নপত্র ভাইরাল হয়। যে ছবিতে এক পরীক্ষার্থীর এডমিট কার্ডের ছবি দেওয়ার পাশাপাশি প্রশ্নপত্র হাত ঘড়ি দিয়ে সে চাপা দেওয়া আছে সেটাও দেখা যাচ্ছে। যে হাত ঘড়িতে তখন সময় দেখা যাচ্ছিল 11:50 মিনিট।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এখানেই একাংশ মনে করছে যে, তাহলে প্রশ্নপত্র পাওয়ার কিছু সময়ের মধ্যেই সেই ছাত্র এই প্রশ্নপত্রর ছবি তুলে তা ভাইরাল করে দিয়েছে। আর এখানেই অনেকের প্রশ্ন যে, তাহলে যেখানে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা বলছে পর্ষদ, সেখানে খোদ পরীক্ষা হলে ইনভিজিলেটর থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষার্থীরা সেই মূল প্রশ্নপত্রের ছবি তোলার সাহস পায় কি করে!

এদিকে একের পর এক জীবনের সব থেকে বড় পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র পরীক্ষা হলে ঢোকার এক ঘন্টার মধ্যেই ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এদিন পর্ষদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সিপিএমের ছাত্রসংগঠন এসএফআই। সূত্রের খবর, এদিন সেই এসএফআইয়ের তরফে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে এক প্রেস বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, “দয়া করে আপনি একটি সাধারণ বয়ান বলে দিন। কারণ রোজ রোজ এভাবে প্রশ্ন ফাঁসের প্রতিবাদে নতুন করে বিবৃতি দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে।”

অন্যদিকে এই ব্যাপারে পর্ষদের বিরুদ্ধে সরব হয়ে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ সাধারণ সম্পাদক স্বপন মন্ডল বলেন, “যারা এই কাজ করছে তাদের অবিলম্বে ধরতে হবে। পর্ষদের এহেন ব্যর্থতার জন্য সভাপতির অপসারণ জরুরি।” অন্যদিকে এই ব্যাপারে মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র এদিন বলেন, “পরীক্ষা ব্যবস্থায় নানা অসঙ্গতি দেখা দিতে শুরু করেছে। দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের এক শিক্ষক নেতা মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। এতে কি গোপনীয়তা ভঙ্গ হচ্ছে না! তিনি তো প্রশ্নপত্র দেখতে পাচ্ছেন।”

অন্যদিকে মূলত মালদা জেলা থেকেই এই প্রশ্নফাঁস করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠলে এদিন এই ব্যাপারে সেই সমস্ত অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক তাপস বিশ্বাস। তিনি বলেন, “আমি সব এলাকায় গিয়েছিলাম। কিন্তু কিছুই নজরে আসেনি। সবই বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।”

যদি সত্যিই বিভ্রান্তি ছড়ানো হয় তাহলে মাধ্যমিক পরীক্ষায় এখনো পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে কেন এই ভাবে তা হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়ছে! প্রশ্নপত্র নিয়ে যে নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা পর্ষদের মুখে শোনা গিয়েছিল, পরীক্ষা চলার সময় সেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা কোথায় উবে গেল! কি করছে পর্ষদ! কোথায় গেল সরকারের উদ্যোগ! প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!