রাজ্যের শাসকদলকে বড় ধাক্কা দিয়ে বিজেপির পাশে হাইকোর্ট রাজ্য February 1, 2019 এবার তৃণমূলের ঘুম উড়িয়ে বিজেপিকে সমর্থন করল হাইকোর্ট। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের মঙ্গলদা-মৌতোড় গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেলেও গেরুয়াশিবিরকে বোর্ড গঠন করতে দেওয়া হচ্ছে না। পঞ্চায়েতের দায়িত্বভার সামলাচ্ছে তৃণমূল। এই ঘটনার তীব্র আপত্তি জানাল কোলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার। বললেন,”বর্তমানে শাসকদলের কেউ যদি প্রধানের পদে বসে দায়িত্ব পালন করে থাকেন সেটা সম্পূর্ণ বেআইনি। BDO যেন এটাও ভালো করে খতিয়ে দেখেন।” এবং আগামী ৭ মার্চের মধ্যে পঞ্চায়েতের বিডিওকে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশও দিলেন বিচারপতি। প্রসঙ্গত,গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে রঘুনাথপুর মহাকুমার রঘুনাথপুরের মঙ্গলদা-মৌতোড় গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ১২ টি আসনের মধ্যে ৯ টি আসন জিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে বিজেপি। তৃণমূল এবং সিপিএম যথাক্রমে ২ টি এবং ১ টি আসন পায়। এরপর বিজেপি থেকে একজন প্রার্থী আবার তৃণমূলে যোগ দেন। এরপর ২৭ আগষ্ট পঞ্চায়েতের প্রধান,উপপ্রধান নির্বাচনের জন্যে ডেকে পাঠান বিডিও। সেদিন বিজেপির বিজয়ী প্রার্থীরা নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে পঞ্চায়েত অফিসে যান। কিন্তু তার আগেই একদল বহিরাগত দুষ্কৃতি তাঁদের হুমকি দেন। পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকে তাদের কম্পিউটার-ল্যাপটপ ভেঙে পুরো সভাই পন্ড করে দেয়। এরপরের দিনই রঘুনাথপুর ২ ব্লকের প্রিজাইডিং অফিসার অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয় থানায়। এরপর সবকিছু বিশ্লেষণ করে দেখার পর বিডিও জানান,২৭ আগষ্ট পঞ্চায়েতের প্রধান,উপপ্রধান নির্বাচনের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল সেটা বানচাল হয়ে গিয়েছে। তাই ফের ৫ ডিসেম্বর আবার বিজয়ী প্রার্থীদের নোটিশ দিয়ে এ ব্যাপারে অবগত করেন। এর পাশাপাশি ১৩ তারিখ নাগাদও মঙ্গলদা-মৌতোড় গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে বেলা ১২ টার সময় বিজয়ী সব প্রতিনিধিদের আহ্বান করা হয় প্রধান,উপপ্রধান নির্বাচনের জন্যে। কিন্তু এতে গোজের কাঁটা হয়ে বসেন জেলাশাসক। গত ৮ ডিসেম্বর তিনি বিডিওকে একটি চিঠি পাঠিয়ে বলেন,তিনি নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রধান,উপপ্রধান নির্বাচনের জন্যে কোনো মিটিং করা যাবে না। এরপর থেকে জেলাশাসকের তরফ থেকেও এ নিয়ে কোনো নির্দেশ আসেনি। ফলে পঞ্চায়েত বোবোর্ড গঠনই হয়নি। [content_block id=3910 তবে ইতিমধ্যে তৃণমূলের তিনজন প্রার্থীর মধ্যে একজন প্রধান এবং একজন উপপ্রধান নির্বাচন করে নিজেদের মর্জি খাটিয়ে পঞ্চায়েত চালাচ্ছে তৃণমূল। এর জেরে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে বিজেপির। চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি নাগাদ বলরাম ধীবর সহ আরো ৭ জন বিজেপির বিজয়ী প্রার্থীরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের এজলাসে মামলা দায়ের করেন। এই মামলারই শুনানি ছিল এদিন। রাজ্যের তরফে আইনজীবী বলেন,২৭ আগষ্ট কোরাম অনুযায়ীই প্রধান নির্বাচন করা হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে মামলাকারীদের আইনজীবী বিবেকানন্দ বাউরি প্রশ্ন তোলেন,তিনজন সদস্য নিয়ে কীভাবে কোরাম তৈরি হল? ভোটে যারা সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়েছে তারাই বোর্ড চালাতে পারছেন না। জোর করে প্রধান নিয়োগ করেছে তৃণমূল। শাসকদলের বিজয়ী প্রার্থী সুরজিৎ চক্রবর্তী (বুবাই) পঞ্চায়েত প্রধান হিসাবে কাজ করছেন। দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচাপতি বিডিওকে আগামী ৭ মার্চের মধ্যে পুরো বিষয়টি আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেন। আপনার মতামত জানান -