তৃণমূলের বদলে কাকে ভোট দেবে আমজনতা, নয়া পরামর্শ মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ কলকাতা রাজ্য October 24, 2019 দীর্ঘদিন ধরেই দার্জিলিঙে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে সরব হয়েছে সেখানকার জনজাতিরা। তাদের একাংশ সরাসরি এই দাবিকে সমর্থন না করলেও বিভিন্ন সময় গোর্খাদের একাধিক দাবিকে সমর্থন জানিয়ে দার্জিলিংয় অর্জনে কিছুটা সক্ষম হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। 2009 সালে প্রথম দার্জিলিঙে ভারতীয় জনতা পার্টির টিকিটে জয়যুক্ত হয় যশোবন্ত সিংহ। পরবর্তীতে 2014 সালে সেখান থেকে এসএস আলুওয়ালিয়া জয়ী হন। সেই সময় গোটা রাজ্যে 34 টি লোকসভা আসনে জয়যুক্ত হলেও দার্জিলিঙে জিততে পারেনি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। আর সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে যখন গোটা রাজ্যে আঠারোটি সিট দখল করতে সক্ষম হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি, সেই সময় দার্জিলিংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে জোট করেও পরাজিত হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী অমর সিং রাই। বিজয়ী হয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী রাজু বিস্ত। আর সম্প্রতি দার্জিলিংয়ের কার্শিয়াংয়ের প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় সেই আক্ষেপের সুর শোনা গেল। শুধু তাই নয়, তাঁকে এবং তাঁর দলকে পছন্দ না হলে স্থানীয় দলকে ভোট দেওয়ার নিদান দেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তাঁকে যদি পাহাড়ের জনগণের পছন্দ না হয়, তাহলে স্থানীয় দলকে ভোট দিন” এদিনের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে অভিযোগের সুরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাইরে থেকে কিছু লোক এসে দাঁড়িয়ে ভোট পেয়ে গিয়েছে। আমাকে পছন্দ না হলে স্থানীয় দলকে ভোট দিন। দার্জিলিঙে তিনি অনেক উন্নয়ন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই উন্নয়ন তাকে করতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বস্তুত, দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে দার্জিলিং জেলার এবং বিশেষত পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য কি কি কাজ করেছেন, তার নজির তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী উক্ত প্রশাসনিক বৈঠক থেকে।কিন্তু সেই উন্নয়নের নিরিখে যতটা জনসমর্থন পাওয়ার কথা, তার প্রতিফলন নির্বাচনে ঘটেনি বলেও আক্ষেপের সুরে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তিনি আরও বলেন, “যদি পাহাড়ের তিনটি আসনে মানুষ তাকে সমর্থন নাও করেন, তবুও তিনি পাহাড়ের মানুষের সঙ্গে থাকবেন।” এলাকার মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েও মানুষ তা করতে না দেওয়াতে সেই কাজ তিনি করতে পারেননি বলেও কিছুটা দুঃখ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক বৈঠকে যে এরকম কথা বলা উচিত নয়, তাও একমত স্বীকার করে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তিনি নেহাতই দুঃখ পেয়ে এই ধরনের কথা উল্লেখ করতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান ব্যথিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্থানীয় প্রার্থী হয়েও তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী অমর রাই জয়যুক্ত হতে পারেননি। অথচ বাইরে থেকে এসে প্রচুর টাকা খরচ করে নির্বাচনে জয় যুক্ত হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। এদিনের সভা থেকে দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তের নাম উল্লেখ না করেই মন্তব্য করতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। পরিশেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “তিনি সেখানে জমি নিতে যাননি, আর এনআরসির নামে আগুন জালাতেও তিনি কোনদিন সেখানে যাবেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এদিনের দার্জিলিংয়ের কার্শিয়াংয়ের প্রশাসনিক বৈঠকে যে দুঃখ এবং আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটল মুখ্যমন্ত্রীর কন্ঠে, তা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বস্তুত, বিভিন্ন বিরোধী দল বিভিন্ন রকম কটাক্ষ করলেও পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনে সেইরকম ভালো ফল না করতে পারায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ব্যথিত হবেন, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু জনগণের মধ্যে নিজের কর্ম সম্পর্কে সচেতনতা বাড়িয়ে এবং আবেগতাড়িত মন্তব্য করে তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন কোনো রাস্তা খুলতে পারেন কিনা, সেদিকেই অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে বিশেষজ্ঞদের। আপনার মতামত জানান -