এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > নেত্রী ঘনিষ্ঠ দুই হেভিওয়েট নেতাকে সরানো হলো পদ থেকে! শুদ্ধিকরণের বার্তা? জোর গুঞ্জন!

নেত্রী ঘনিষ্ঠ দুই হেভিওয়েট নেতাকে সরানো হলো পদ থেকে! শুদ্ধিকরণের বার্তা? জোর গুঞ্জন!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গত লোকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে পরাজয়ের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি পরিবর্তন করেন। যেখানে বিপ্লব মিত্রকে সরিয়ে সেই জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয় নির্বাচনে পরাজিত অর্পিতা ঘোষকে। আর দায়িত্ব পাওয়ার পরই বিপ্লব মিত্রকে চাপে রাখতে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেন অর্পিতা ঘোষ। এদিকে জেলা সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার পর সদলবলে দিল্লি থেকে বিজেপিতে যোগ দেন বিপ্লব মিত্র। আর এই পরিস্থিতিতে দলের সংগঠনকে আরও জোরদার করে এগিয়ে যেতে উদ্যোগী হন অর্পিতা ঘোষ।

যেখানে নিজের সর্বক্ষণের সঙ্গী হিসেবে তিনি ঠিক করে নেন বালুরঘাটের দেবাশিস মজুমদার এবং হরিরামপুরের শুভাশিস পালকে‌। অর্পিতা ঘোষের পরে তারাই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় শেষ কথা বলতেন বলে জানা যায়। কিন্তু এবার সেই দুই হেভিওয়েট নেতার ডানা ছেটে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। বস্তুত, জেলা সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর অর্পিতা ঘোষ দেবাশিস মজুমদার এবং শুভাশিস পালকে জেলার কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব দেন। তবে তাদের স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি এবং মানুষের সঙ্গে না মেশার কারণ হিসেবে দলের তরফে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে নানা অভিযোগ যেতে শুরু করেছিল।

সংস্কৃতির পীঠস্থান বালুরঘাটে যেভাবে দেবাশিস মজুমদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, তাতে নিঃসন্দেহে অস্বস্তিতে পড়েছিল শাসকদল। আর এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি জেলায় দুই কার্যকরী সভাপতি থাকা সত্ত্বেও, ভিডিও কনফারেন্সের বৈঠকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কার্যকরী সভাপতি হিসেবে গঙ্গারামপুরের বিধায়ক গৌতম দাসকে দায়িত্ব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর এরপরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে যে, তাহলে কি দেবাশিস মজুমদার এবং শুভাশিস পালকে সরিয়ে দেওয়া হল?

তবে এতদিন সেই ব্যাপারে কিছু জানা না গেলেও, বৃহস্পতিবার বংশীহারীতে এসে এই দুই নেতাকে রীতিমত সতর্ক করে তাদের পদ থেকে সরিয়ে দিলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, লকডাউনের মধ্যে জেলার গুটিকয়েক নেতা নেত্রীকে নিয়ে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত হন জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষ, কার্যকরী সভাপতি গৌতম দাস, শংকর চক্রবর্তী, বাচ্চু হাসদা সহ অন্যান্যরা। আর সেখানেই উপস্থিত অর্পিতা ঘোষের হাত ধরে কার্যকরী সভাপতি হওয়া দেবাশীষ মজুমদার এবং শুভাশিস পালকে রীতিমত সতর্ক করে দেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলে খবর।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বিশেষ সূত্র মারফত খবর, মিটিংয়ে এই দুই নেতাকে তাদের পদ থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, কোনোরকম সরকারী পদের অপব্যবহার যেন তারা না করেন, তার জন্য তাদের পড়া বার্তা দিয়েছেন তিনি। এক্ষেত্রে শুভাশিস পাল জেলা পরিষদের মেন্টর থাকায় কেন তিনি লালবাতির গাড়ি নিয়ে ঘুরবেন, তার প্রশ্ন তুলেছেন রাজীববাবু। অন্যদিকে দেবাশিস মজুমদারের উদ্দেশ্যে নাম না করে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, “আপনাদের দল যেখান থেকে তুলে এনেছে, প্রয়োজনে সেখানেই গিয়ে রেখে আসবে। দলের উর্দ্ধে কেউ নয়।” আর অর্পিতা ঘোষের দক্ষিণহস্ত এবং বামহস্ত বলে পরিচিত দুই হেভিওয়েট নেতাকে যেভাবে জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক পদ থেকে সরিয়ে দিলেন, তাতে রীতিমত গুঞ্জন তৈরি করেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা রাজনীতিতে।

একাংশ বলছেন, পদ পাওয়ার পর রীতিমত ধরাকে সরা জ্ঞান না করে নিজেদের দাপট চালিয়ে যাচ্ছিলেন দেবাশিস মজুমদার এবং শুভাশিস পাল। এক্ষেত্রে জেলার অনেক তৃণমূল বিধায়ক থেকে শুরু করে প্রবীণ নেতৃত্ব তাঁদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। যার রিপোর্ট পৌঁছে গিয়েছিল তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। আর এর পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি ভিডিও কনফারেন্সে এই জেলার কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব দেন গঙ্গারামপুরের বিধায়ক গৌতম দাসকে। আর এবার জেলায় এসে সেই দেবাশিসবাবু এবং শুভাশিসবাবুকে পদ থেকে সরিয়ে রীতিমতো শুদ্ধিকরণের বার্তা দিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।তবে অনেকেই মনে করছেন নেত্রী ও দলীয় শীর্ষ নেতৃত্ব এই বার্তা দিয়েছেন, যা কার্যকর করলেন রাজীববাবু।

তবে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এই নিয়ে সিদ্ধান্ত হলেও, বাইরে কোনো রকম মন্তব্য করতে নারাজ ছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক। অনেকে বলছেন, দেবাশিস মজুমদারের জন্য বালুরঘাটে এবং শুভাশিস মজুমদারের জন্য হরিরামপুরে তৃণমূলের ভাবমূর্তি অনেকটাই খারাপ হয়ে যেতে বসেছিল। তবে এবার তাদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ায় দল অনেকটাই সুদিনের মুখ দেখবে বলে আশা করছেন তৃণমূলের নিচুতলার নেতাকর্মীরা। এখন কার্যকরী সভাপতি পদ থেকে দেবাশিস মজুমদার এবং শুভাশিস পালকে সরিয়ে দেওয়ার পর এই দুই নেতা নতুন কোনো পদক্ষেপ নেন কিনা, তার দিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!