এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা >  থানায় ঢুকে তৃণমূল নেতার “মস্তানি”, ওসিকে চড়, গ্রেফতার হতেই 14 দিনের জেল হেফাজত!

 থানায় ঢুকে তৃণমূল নেতার “মস্তানি”, ওসিকে চড়, গ্রেফতার হতেই 14 দিনের জেল হেফাজত!

“সত্য সেলুকাস! কি বিচিত্র এই দেশ!” বাংলার এই ঐতিহাসিক উক্তিটা হয়ত এবার কিছুটা পাল্টে গেছে। বিরোধীরা বলছেন, দেশের জায়গায় এবার বাংলা বসালে হয়ত বা ভালো হয়। কিন্তু কেন! বিরোধীরা কেন বলছ এরকম কথা! একাংশের দাবি, যে বাংলায় থানার ভেতরে ঢুকে শাসক দলের নেতারা পুলিশের উর্দি ধরার মত সাহস পায়।

সেই বাংলা তো বিচিত্র বটেই। হয়ত পড়তে পড়তে ভাবছেন কোথায় ঘটল এমন ঘটনা! আর অন্য কোথাও নয়। রবীন্দ্র-নজরুলের বাংলায় তৃণমূল নেতাদের বদান্যতাতেই এখন এই ঘটনা ঘটছে বলে দাবি বিরোধীদের। সূত্রের খবর, শনিবার রাতে সুতি থানায় ঢুকে ওসিকে হেনস্থা এবং চড় মারার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে। যা নিয়ে এখন প্রবল চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাতে তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি ওবাইদুর রহমান দলবল নিয়ে থানায় ঢুকে রীতিমতো মস্তানি শুরু করে দেন। তবে থানার ভেতরে যাতে কোনো রকম বিশৃংখলা না করা হয়, তার জন্য ওই তৃণমূল নেতাকে আবেদন করেন সেই থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি সন্দীপ সেন। কিন্তু কে কার কথা শোনে! অভিযোগ, এর পরেই ওসির সাথে তার তীব্র বাদানুবাদ শুরু হয়। আর যার জেরে আইনের রক্ষক পুলিশের গায়ে হাত এবং তার পরবর্তীতে সেই ওসিকে থাপ্পড় মারেন সেই তৃণমূল নেতা।

এদিকে থানার ভেতর ওসির গায়ে তৃণমূল নেতার এই হাত দেওয়ার ঘটনায় রীতিমতো হতবাক হয়ে যান অন্যান্য পুলিশকর্মীরা। আর তারপরই গ্রেপ্তার করা হয় সেই তৃণমূল নেতা ওবাইদুর রহমানকে। এদিন এই প্রসঙ্গে আক্রান্ত সুতি থানার ওসি সন্দীপ সেন বলেন, “ধৃতের বিরুদ্ধে এলাকায় তোলাবাজি এবং অসামাজিক কার্যকলাপ অভিযোগ থাকায় তাকে থানায় ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তিনি থানায় এসে মস্তানি করেন এবং দলবল নিয়ে আমার ওপর চড়াও হন।”

এদিকে এই ব্যাপারে জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “থানায় ঢুকে ওসিকে নিগ্রহের অভিযোগে ধৃতকে গ্রেফতার করা হয়েছে।রবিবার আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে 14 দিনের জেল হেফাজত দিয়েছেন।” কিন্তু এত বড় সাহস তিনি পেলেন কি করে! যেখানে খোদ তার দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশমন্ত্রী, সেখানে পুলিশের প্রতি তৃণমূল নেতার আক্রমণ কি পুলিশমন্ত্রী তথা তাঁর দলের নেত্রীকেই অপমান করা নয়!

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই প্রসঙ্গে ধৃত ওবাইদুর রহমান বলেন, “আমি ব্লক সভাপতি থাকাকালীন এলাকায় রাস্তায় যানবাহন থেকে তোলাবাজি বন্ধ করে দিয়েছিলাম। সেটা আবার শুরু হয়েছে। ফলে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ এবং প্রতিকার চাইতে থানায় গিয়েছিলাম। তখনই বাকবিতণ্ডা থেকে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। ওসি থেকে পুলিশকর্মীরা আমাকে ব্যাপক মারধর করে।”

কিন্তু ধৃত তৃণমূল নেতা পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও, যেখানে সরকারে তৃণমূল কংগ্রেস রয়েছে, সেখানে কেন পুলিশ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে বাড়তি অভিযোগ করতে যাবে, যদি তিনি সত্যি সত্যিই না ওসির ওপর চড়াও হন! আর এইসব প্রশ্ন যখন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে, ঠিক তখনই তৃণমূল নেতার এই দাদাগিরিতে কি বলছেন স্থানীয় তৃণমূলের নেতৃত্বরা!

এদিন এই প্রসঙ্গে জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। কোনো সাধারণ মানুষের গায়েও হাত তোলা উচিত নয়। মানুষকে ভালোবাসা উচিত।” এদিকে এই প্রসঙ্গে জঙ্গিপুর মহাকুমা তৃণমূলের সভাপতি বিকাশ নন্দ বলেন, “ধৃত দলের কোনো পদে নেই। তবে উনি যেই হন না কেন, কোনো আধিকারিককে হেনস্থা করার অধিকার নেই। তাঁকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।” সব মিলিয়ে ওসির গায়ে হাত দিতেই গ্রেপ্তার তৃণমূল নেতা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!