এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > তৃণমূলের রদবদলে ক্ষোভ বাড়ছে তফসিলি, আদিবাসী, সংখ্যালঘুদের! বিধানসভার আগে চিন্তায় মমতা?

তৃণমূলের রদবদলে ক্ষোভ বাড়ছে তফসিলি, আদিবাসী, সংখ্যালঘুদের! বিধানসভার আগে চিন্তায় মমতা?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বড়সড় রাজনৈতিক অস্ত্র তুলে দিয়েছিল তৎকালীন বাম সরকারের বিরুদ্ধে। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গোটা রাজ্যে শোরগোল তুলে ছিলেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলন নিঃসন্দেহে নজির তৈরি করেছিল গোটা রাজ্যে‌। যেখানে তার অন্যতম সৈনিক হিসেবে পরিচিত হন অধিকারী পরিবারের সদস্য শুভেন্দু অধিকারী। আর তারপর থেকেই তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর সেই শুভেন্দু অধিকারী দাপট করতে শুরু করে।

যেখানে দায়িত্ব দেওয়া হয় শুভেন্দুবাবুকে। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে কর্মীদের মনে নতুন করে জায়গা করে নেন বর্তমান পরিবহনমন্ত্রী। কিন্তু শুভেন্দুবাবুর অনুগামীরা আশা করেছিলেন যে, এবার হয়ত তিনি দলের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে বসবেন। তবে তা তো হয়ইনি, উল্টো শুধুমাত্র তাকে কোর কমিটির সদস্য করে বিভিন্ন জেলায় পর্যবেক্ষক তুলে দিয়ে শুভেন্দুবাবুকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় আটকে রাখা হয়েছে বলে দাবি করছেন একাংশ। শুধু তাই নয়, তার ঘনিষ্ঠ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার যুব তৃনমূলের সভাপতি সংগ্রাম দোলুইকে পদ থেকে সরিয়ে বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা সুপ্রকাশ গিরিকে সেই সভাপতি করা হয়েছে।

স্বাভাবিকভাবেই শুভেন্দু অধিকারীকে যে দলে কার্যত কোণঠাসা করার প্রক্রিয়া নেওয়া হয়েছে, তা বুঝতে বাকি নেই তার অনুগামীদের। এতদিন সমাজমাধ্যম বা ব্যানারের মাধ্যমে এই ব্যাপারে সোচ্চার হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা। আর এবার “অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন অফ এসসি, এসটি, অ্যান্ড মাইনোরিটি” নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন সংগঠনের জেলা এবং রাজ্য স্তরের নেতারা। অরাজনৈতিক সংগঠন হলেও এখানে উপস্থিত ছিলেন সেখানকার অনেক তৃণমূল নেতা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

যার মধ্যে রয়েছেন জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ধীরেন্দ্রনাথ পাত্র, কাঁথি তিন নম্বর ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি মানিক দোলই‌, সাবাজপুক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তথা ব্লক যুব তৃনমূলের সভাপতি রাম গোবিন্দ দাস সহ অন্যান্যরা। জানা যায়, এরা সকলেই শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী বলে পরিচিত। আর এই বৈঠকের সংগ্রাম দোলইকে কেন যুব তৃনমূলের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল, সেই কথা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন একের পর এক নেতা। এদিন এই প্রসঙ্গে মানিক দোলই বলেন, “যেখানে যেখানে আন্দোলন সংঘটিত হয়েছে, সেখানে কাদের এগিয়ে দেওয়া হয়েছিল! কারা বুক চিতিয়ে রক্ত দিয়েছিলেন! সেকথা এখনকার রাজনৈতিক নেতাদের মনে রাখতে হবে।”

অন্যদিকে রামগোবিন্দ দাস বলেন, “আমাদের ব্যবহার করা হয়। কিন্তু তপশিলি সম্প্রদায়ের লোকেদের মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি।” অর্থাৎ অরাজনৈতিক সংগঠনের মঞ্চ হলেও, এখান থেকে তৃণমূলের অনেক নেতা যে শুভেন্দু অধিকারীর ডানা ছাটা হল, সেই ব্যাপারে উষ্মা প্রকাশ করে দলের উদ্দেশ্যে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাহলে কি এবার শুভেন্দুবাবুর অনুগামীরা প্রকাশ্যে ময়দানে নেমে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়তে শুরু করলেন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমনটা যে হবে, তা আঁচ করাই গিয়েছিল।

কেননা প্রায় প্রত্যেকেই আশা করেছিলেন, বিভিন্ন জেলায় যখন শুভেন্দু অধিকারী দলকে সাফল্যের মুখ দেখিয়েছেন, তখন তাকে দল ভালো জায়গা দেবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। যে সমস্ত জেলায় শুভেন্দু অধিকারী পর্যবেক্ষক ছিলেন, সেখান থেকে যেমন তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, ঠিক তেমনই তাঁর ঘনিষ্ঠ যুব সভাপতির ডানা ছাটা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তার গুরুত্ব যে অনেকটাই কমিয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস, তা বুঝতে পেরেছেন তার অনুগামীরা। তাই দলকে এত দিয়েও শুভেন্দু অধিকারী যখন জায়গা পাচ্ছেন না, তখন তার অনুগামীরা এবার অরাজনৈতিক সংগঠনের মঞ্চে তৃণমূলের এই নীতির বিরুদ্ধে সরব হলেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আর এমনটা যদি হতে থাকে, তাহলে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের অস্বস্তি ক্রমশ বাড়বে বলেই দাবি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। যদিও এই প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তৃণমূলের সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, “অরাজনৈতিক সংগঠনের কর্মসূচি হয়েছিল। ওতে আমাদের দলের কয়েকজন থাকলেও, তা দলীয় কর্মসূচি নয়। ওদের মতামত সম্পূর্ণরূপে ব্যক্তিগত।” তবে শিশিরবাবু এই কথা বলে ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করলেও, তলায় তলায় যে শুভেন্দু অধিকারীকে গুরুত্ব না দেওয়া নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে, তা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!