এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > তৃণমূলে আস্তে আস্তে শুভেন্দু অধিকারীর ডানা ছাঁটা অব্যাহত! তীব্র জল্পনা শুরু শাসকদলের অন্দরেই

তৃণমূলে আস্তে আস্তে শুভেন্দু অধিকারীর ডানা ছাঁটা অব্যাহত! তীব্র জল্পনা শুরু শাসকদলের অন্দরেই


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সম্প্রতি বাংলার রাজনৈতিক মহলে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে জোরদার চর্চা চলছে। রাজনৈতিক মহলে ইদানীং কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, রাজ্যের পরিবহণ, সেচ ও জলসম্পদ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দল এবং দলনেত্রীর বেশ কিছুটা দূরত্ব এসে গেছে। এই নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেও শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন জল্পনা। সম্প্রতি একুশের বিধানসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে তৃণমূল শিবিরে হয়ে গেছে ব্যাপক আকারে সাংগঠনিক রদবদল। আর প্রশ্ন উঠেছে সেখান থেকেই। এই রদবদলের ফলেই এবার দেখা গেছে, তৃণমূল কংগ্রেসের একনিষ্ঠ কর্মী শুভেন্দু অধিকারীর ক্ষমতা ছাঁটাই হয়েছে। যদিও শুভেন্দু অধিকারী এই রদবদলের আগে থেকেই দলের সঙ্গে একটি দূরত্ব বজায় রেখে চলেছেন বলে জানা গিয়েছে।

আর সেই সূত্রেই শুভেন্দু অধিকারী ইদানিংকালে দলের সমস্ত সাংগঠনিক বৈঠক এবং অনুষ্ঠান রীতিমতো এড়িয়ে গেছেন বলে খবর। এরপর রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকেও শুভেন্দু অধিকারীকে রীতিমত অনুপস্থিত থাকতে দেখা যায় নিয়মিত, যা নিয়ে গুঞ্জন আরো বাড়ে। সম্প্রতি তৃণমূলের সরকারি কর্মচারী সংগঠনের একটি বৈঠক হয়। কিন্তু সেখানে দায়িত্বে থেকেও শুভেন্দু অধিকারীকে বৈঠকে দেখা গেলনা। আর তারপর থেকেই জল্পনা তীব্র হয়েছে। গত বছরই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের সংগঠনের আহ্বায়কের দায়িত্বে এসেছিলেন দিব্যেন্দু রায়, সৌম্য ঘোষ এবং তপন গড়াই। এই কমিটির মেন্টর পদে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তবে এবার এই কমিটি ভেঙে দিলেন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আর ফেডারেশনের সর্বোচ্চ স্তরে আবারও ব্যাপক আকারে রদবদল হয়ে গেলো। এই রদবদলের ফলেই শুভেন্দু অধিকারী পুরোপুরি বাদ হয়ে গেলেন বলে জানা গেছে। সোমবার রাতে কর্মচারী ফেডারেশন এর নেতাদের নিয়ে এক বৈঠকে বসেন সুব্রত বক্সী ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এই বৈঠকে দলের চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোনের সাহায্যে বার্তা দেন। সরকারি কর্মচারীদের ভেতরে তৃণমূলের সেভাবে কদর নেই বলে বহুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল, যার ছবিও দেখা গেছে গত লোকসভা নির্বাচনে। যেখানে পোস্টাল ব্যালটে তৃণমূলের থেকে বিজেপি বহুলাংশে এগিয়েছিল। তৃণমূল শিবিরের একাংশের দাবি অবশ্য অন্য।

মহার্ঘ ভাতা, বেতন কমিশন-সহ নানা দাবিদাওয়া নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিবাদ তৃণমূল সরকারের। আর তার জেরেই পোস্টাল ব্যালটে বিপর্যয় নেমে এসেছিল লোকসভা নির্বাচনে। সেই পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মীদের মধ্যে প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টায় তৃণমূল শুভেন্দু অধিকারীর হাতে দলের তরফ থেকে ফেডারেশনের দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে তৃণমূলের একাংশ অভিযোগ জানাচ্ছে, শুভেন্দু অধিকারী গত এক বছরে বিন্দুমাত্র নজর দেননি ফেডারেশনের ব্যাপারে। অন্যদিকে ফেডারেশনের রদবদল হলেও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না শুভেন্দু অধিকারী। মেন্টর হওয়া সত্বেও শুভেন্দু অধিকারী কেন এই বৈঠকে নেই, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এবং শুভেন্দুর অনুপস্থিতিতে কিভাবে এই রদবদল হল সে প্রশ্নও তুলেছেন তৃণমূলের অনেকে। ফেডারেশনের পদ থেকে শুভেন্দু অধিকারীর সরে যাওয়া কোন বড় ব্যাপার নয় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের অনেকেই। কারণ সম্প্রতি তৃণমূল দল এবং যুব সংগঠনে যে ঢালাও রদবদল হয়েছে, সেখানেও কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীসহ তাঁর অনুগামীরা বিভিন্ন ভাবে নিজেদের পদ হারাতে শুরু করেছেন। সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরে যুব তৃণমূল সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে শুভেন্দু অনুগামী হিসেবে পরিচিত সংগ্রাম দোলুইকে। যদিও এই নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বিশেষ কিছু মন্তব্য করেননি।

কিন্তু ময়নার বিধায়ক সংগ্রাম প্রকাশ্যেই ইঙ্গিত দিতে শুরু করেছেন, তাঁকে সরিয়ে দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে শুভেন্দু অধিকারী এবার দল ছাড়তে চলেছেন তাঁর অনুগামীদের নিয়ে। যদিও তৃণমূল শিবিরের হেভিওয়েট নেতারা এই গুঞ্জনকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে একের পর এক দায়িত্ব থেকে শুভেন্দু অধিকারী কে যেভাবে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তাতে কিন্তু বার্তা সে রকমই আসছে বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। অন্যদিকে ফেডারেশনের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁর পক্ষ থেকে কোনো রকম সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানা যাচ্ছে।

অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, জনপ্রিয়তার নিরিখে কিন্তু তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরেই নাম আসবে শুভেন্দু অধিকারীর।  আর তাই শুভেন্দু অধিকারীকে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যদি ছেঁটে ফেলা হয়, তাহলে কিন্তু আখেরে তৃণমূলের ক্ষতি। এই পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে এই মুহূর্তে গেরুয়া শিবিরকে চাপে রাখতে অবশ্যই শুভেন্দু অধিকারীকে কাজে লাগানো দরকার। তবে তৃণমূল শিবিরে কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, দলের সঙ্গে ক্রমশ দূরত্ব বাড়ছে শুভেন্দু অধিকারীর। এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে বাংলার রাজনীতি নতুন কোন সমীকরণ দেখতে চলেছে কিনা, তা অবশ্য বলবে সময়।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!