এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > তৃণমূলের ‘অসুখ’ এখন বিজেপিতেও! বিধানসভার আগে চরম আতঙ্কে চাপ বাড়ছে যুযুধান দুই শিবিরেরই

তৃণমূলের ‘অসুখ’ এখন বিজেপিতেও! বিধানসভার আগে চরম আতঙ্কে চাপ বাড়ছে যুযুধান দুই শিবিরেরই


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা কিন্তু এই মুহূর্তে সর্বজনবিদিত। রাজ্যের শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দলের ফলে একের পর এক বিপর্যয় এসেছে। তৃণমূলের পাশাপাশি রাজ্যের গেরুয়া শিবিরও যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের নিরিখে বিশেষ পিছনে নেই, তা বিভিন্ন ঘটনায় প্রকাশ পাচ্ছে বর্তমানে। রাজ্যজুড়ে একুশের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যেই জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে। কিন্তু তার মধ্যেই যেভাবে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল তৃণমূল এবং বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা সামনে আসছে, তা কিন্তু অস্বস্তিতে রাখছে দুই শিবিরকেই। রাজনৈতিক মহলের অনেকেই মনে করছেন, দুই শিবিরের এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কিন্তু আগামী বিধানসভা নির্বাচনের হিসেব-নিকেশ অনেকাংশেই বদলে দিতে পারে।

চোখ দেওয়া যাক নদীয়ার দিকে। নদীয়া জেলার তৃণমূল নেতৃত্বের গোষ্ঠীকোন্দল একেবারে প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। দলের প্রায় প্রত্যেকেই স্বীকার করে নিয়েছেন, নদীয়া জেলার তৃণমূল শিবির এই মুহূর্তে আড়াআড়িভাবে দ্বিখণ্ডিত। চাপড়া, নাকাশিপাড়া, কালিয়াগঞ্জ, কৃষ্ণগঞ্জ, শান্তিপুর, রানাঘাট সর্বত্র একই ছবি। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল নদীয়া জেলার চাপরা বিধানসভা থেকে বেশি ভোটে লিড পেয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যেভাবে মাথাচাড়া দিয়েছে সেখানে, এলাকার পরিস্থিতিও খুব একটা সুবিধাজনক নয় তৃণমূলের জন্য বলে জানা যাচ্ছে। একদিকে ব্লক সভাপতি জেবের শেখ এবং অন্যদিকে বিধায়ক রুকবানুর রহমানের মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এই মুহূর্তে হাতাহাতিতে এসে পৌঁছেছে।

এলাকার বিভিন্ন ঘটনা সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। একইভাবে ফুলিয়া কর্মীসভায় সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রানাঘাট অঞ্চলের বিধায়ক তথা রাজ্যের তৃণমূলের সহ-সভাপতি শংকর সিংহ। বীরনগরেও বারবার তৃণমূলের প্রাক্তন পুরপ্রধান এবং উপপ্রধান এর মধ্যে বিবাদ সমস্যায় ফেলেছে দলকে। গয়েশপুর জেলা নেতৃত্ত্বের সামনেই শহর সভাপতি বদল নিয়ে জোরদার বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে। শান্তিপুরে আবার দল এবং যুব সংগঠনের দায়িত্ব বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যের হাতে তুলে দেওয়ার পর দলের কর্মী সম্মেলনে পুর প্রশাসক অজয় দে কে আর দেখা যায়নি। বলাইবাহুল্য, এর পিছনে রয়েছে প্রবল অন্তর্কলহ।

নাকাশিপাড়ায় আবার ব্লক সভাপতির দায়িত্ব থেকে অশোক দত্তকে সরিয়ে দেওয়ায় এলাকার তৃণমূল কর্মীদের একাংশের মধ্যে প্রবল ক্ষোভ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। অন্যদিকে কালীগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বর্তমান বিধায়ক হাসানুজ্জামানের গন্ডগোলের খবর সবাই জানেন। অভিযোগ উঠেছে, তেহট্টের বিধায়ক তথা প্রাক্তন জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তর এলাকায় জেলা সভাপতির লোকজন সমান্তরাল সংগঠন তৈরি করছে। পাশাপাশি তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর আবির বিশ্বাসকে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়ে আসাকে অনেকেই মানতে পারছেন না।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

চাকদার মন্ত্রী তথা বিধায়কের রত্না ঘোষের সঙ্গে প্রাক্তন পুরপ্রধান দীপক চক্রবর্তীর ঝামেলার কথাতো সবাই জানেন। সেই ঝামেলা আজও বর্তমান। পাশাপাশি এবার তাকানো যাক জেলা বিজেপির দিকে। সেখানেও কিন্তু একই ভাবে অন্তর্কলহের ছবি পরিষ্কার হয়ে উঠেছে। নদীয়ার উত্তরে জেলা সভাপতি আশুতোষ পালের সঙ্গে প্রাক্তন সভাপতি মহাদেব সরকার বিবাদ যেভাবে সামনে এসেছে, তাতে কিন্তু বিপাকে পড়েছে গেরুয়া শিবির। জেলায় দিলীপ ঘোষের সভার দিন কৃষ্ণনগরে আবার বিজেপির জেলা দপ্তরের কর্মীদের বিক্ষোভ দেখা যায়। মুকুল রায়ের সভাতেও সেরকম লোক না হওয়ার পেছনে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কাজ করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। 

এদিকে আবার সাংসদ জগন্নাথ সরকারের সঙ্গে মতুয়া নেতা মুকুটমণি অধিকারী এবং জেলা সভাপতি অশোক চক্রবর্তীর বিবাদের কথা এখন গেরুয়া শিবিরের সবাই জানেন। অশোক চক্রবর্তীকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্য নেতৃত্বের কাছে ইতিমধ্যেই জেলা কমিটির বেশির ভাগ পদাধিকারী এবং মন্ডল সভাপতিরা দাবি করেছেন। অন্যদিকে দুই দলের কেউই প্রকাশ্যে দলের ভাঙন নিয়ে আসতে চাইছেননা। জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাশীষ রায় যেমন বলেছেন, মান অভিমান থাকতে পারে। কিন্তু দিদির ডাকে সবকিছু ভুলে ময়দানে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়বেন। পাশাপাশি জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণী কুমার রায় জানিয়েছেন, বড় দলে একটু-আধটু সমস্যা হয়।

কিন্তু বাইরের শত্রুর সঙ্গে লড়াই করবে যখন তখন একজোট হয়েই সবাই লড়বে। অন্যদিকে নবদ্বীপের বিজেপি মুখপাত্র জগন্নাথ সরকারও একইভাবে জানিয়েছেন, দল বাড়ার কারণে কিছু সমস্যা আসছে। তবে নির্বাচনে তার কোনো প্রভাব পড়বে না। কারণ মানুষ মোদি সরকারের উন্নয়ন দেখছে আর নরেন্দ্র মোদী বাংলা থেকে ভোট নিয়ে আসবে বিজেপিতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যেকোনো রাজনৈতিক দলে অন্তর্কলহ তাঁদের অন্যতম দুর্বলতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে যখন দুই দল একে অপরকে প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে ধরেছে, সে জায়গায় দু’দলের নিজস্ব গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কিন্তু একুশের নির্বাচনের আগে চাপ বাড়াচ্ছে দুদলেই বলে মনে করা হচ্ছে।

 

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!