এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > নিজের পছন্দের লোককে পদে বসাতে ছেঁটে ফেলা হচ্ছে ‘যোগ্যদের’ – জেলাস্তরে উত্তাল বিজেপির অন্দরমহল

নিজের পছন্দের লোককে পদে বসাতে ছেঁটে ফেলা হচ্ছে ‘যোগ্যদের’ – জেলাস্তরে উত্তাল বিজেপির অন্দরমহল


একেই বিজেপির রথযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে সরগরম রাজ্যরাজনীতি তার উপর চাপ বাড়িয়ে দলের আভ্যন্তরীন কোন্দল প্রকাশ্যে এল বীরভূমে। বিজেপির কিষাণ মোর্চার জেলা সভাপতি পরিবর্তনের প্রতিবাদ জানিয়ে মোর্চার একাধিক পদাধীকারী এবং সদস্য বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন সিউড়িতে দলের জেলা কার্যালয়ে।

সিদ্ধান্ত বদল না হলে এই ৬০ জন নেতা-কর্মী রথযাত্রার পর ফের অনসনের পথে হাঁটবেন এমনটাও হুমকি দেন এদিন। নতুন কায়দায় এই বিক্ষুব্ধরা লাল গোলাপ সহ ইস্তফাপত্র তুলে দেন উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে। হেভিওয়েট বিজেপি নেতা রামকৃষ্ণ রায়ের বিরুদ্ধে এদিন যাবতীয় ক্ষোভ উগড়ে দেন এদিন বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা।

গোটা ঘটনায় ব্যাপক অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপির শীর্ষমহল। রথযাত্রা কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলায় গেরুয়া ঝড় তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতীয় বিজেপি সুপ্রিমো অমিত শাহ। সেই রথযাত্রা একদিকে যেমন অনিশ্চয়তার মুখে ঝুলে রয়েছে,অন্যদিকে দলীয় সংগঠনের ঐক্যবদ্ধতা রক্ষা করতেও নাঝেহাল অবস্থা গেরুয়া শিবিরের।

দলীয় সূত্রের খবর, দিনকয়েক আগে শান্তনু মন্ডলকে অপসারণ করে জেলা কিষাণ মোর্চার সভাপতির পদে নিয়ে আসা হয় সোমনাথ ঘোষকে। বিজেপি জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের ঘনিষ্ট এই নেতাকে দায়িত্বে আনার জন্যে দলের অপর এক গোষ্ঠী তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে।

সম্প্রতি সিউড়িতে রথযাত্রার প্রস্তুতি সভাতে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছিল। জেলাসভাপতির প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে রাজ্য বিজপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকে চিঠি দিয়েছিল জেলা বিজেপির একাংশ।

এদিন ফের সিউড়ির দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্ট নেতা কর্মীরা। জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে শ্লোগান তুলে বহুক্ষণ বিক্ষোভ দেখানোর পর জেলা কার্যালয়ের গেট না খোলা হলে জাতীয় সড়কের পাশে একটি বাড়িতে জমায়েত হন তাঁরা।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

সেখানে বিজেপির জেলা সম্পাদক পলাশ মিত্রের তদারকিতে বিজেপির নানা কর্মসূচির জন্যে পতাকা, ফেস্টুন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তাকে ঘিরেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন ওই নেতা-কর্মীরা। পলাশ বাবুর বারণ উপেক্ষা করেই বিক্ষোভকারীরা নিজেদের অবস্থানে অটল থাকেন।

এদিন বিক্ষোভকারীদের তরফ থেকে কিষান মোর্চার ২৭ জন পদাধীকারী ও ৩ জন সদস্য সহ মোট ৩০ জনের ইস্তফাপত্র তুলে দেওয়া হয়। সঙ্গে অভিনব কায়দায় প্রত্যেকেই একটি করে লাল গোলাপ তুলে দেন পলাশবাবুর হাতে। এটুকু করেই ক্ষান্ত ছিলেন না বিক্ষোভকারীরা। জেলা কার্যালয়ের গেট খোলার পর ফের বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এবং তাঁদের দাবী না মেনে নেওয়া হলে পরবর্তী ধাপে অনশন কর্মসূচি করার হুঁসিয়ারীও দেন তাঁরা।

এ প্রসঙ্গে বিক্ষোভকারী কিষাণ মোর্চার সাধারণ সম্পাদক বিকাশ আচার্য জানান জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় দলের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে নিজের মর্জিমতো পছন্দের লোককে মোর্চার সভাপতি করতেই শান্তনু মন্ডলকে পদ থেকে বহিষ্কার করেছেন।

জেলা নেতৃত্বের এই ধরণের অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতেই বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহন করেছেন তাঁরা। তবে এ অভিযোগ কার্যত অস্বীকার করলেন জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়। রামকৃষ্ণবাবু তাঁর বক্তব্যে জানান, মোর্চার সভাপতি কে হবেন তা নির্বাচন করেন রাজ্য মোর্চা সভাপতি। এখানে তাঁর কোনো ভূমিকাই নেই।

শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্বার্থ নিয়ে তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এসব করা হচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগ তোলেন তিনি। এ প্রসঙ্গে কিষান মোর্চার রাজ্যসভাপতি রামকৃষ্ণ পাল জানান, সভাপতি পরিবর্তনের বিষয়টি তিনি জানেন তবে বিক্ষোভ কর্মসূচির কোনো খবর তাঁর কানে এসে পৌছায়নি।

অন্যদিকে, বিজেপির কিষাণ মোর্চার জেলা সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কৃত নেতা শান্তনু মন্ডল জানান, ‘বুধবার আমাকে এসএমএস পাঠিয়ে সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।’

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিজেপির আভ্যন্তরীন কোন্দল রুখতে রাজ্য নেতৃত্বরা কী সিদ্ধান্ত নেবেন তা নিয়ে দলীয় অন্দরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। তবে নড়বড়ে সংগঠন নিয়ে বিজেপির রথযাত্রা কর্মসূচি কতোটা সফল হবে তা নিয়ে চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে পদ্মশিবির কর্তাদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!