উধাও সৌজন্যতা! বিজেপি কর্মীর সঙ্গে মেলামেশা, প্রহার তৃণমূলের! তৃণমূল বর্ধমান বিজেপি রাজনীতি রাজ্য May 24, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – ভোটের সময় রাজনৈতিক লড়াই যাই থাকুক না কেন, ভোটের পরে শাসক-বিরোধী সকলে এক জায়গায় বসে আড্ডা দেয়, রাজনৈতিক আলোচনা করে, এটাই বাংলার সংস্কৃতি। কিন্তু 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল তৃতীয়বার রাজ্যের ক্ষমতা দখল করার পর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি নেতা কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ আসতে শুরু করেছে। তবে এবার সেই বিরোধীদের পক্ষ থেকে হামলার অভিযোগ ওঠার পাশাপাশি এক ভয়ঙ্কর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যেখানে বিজেপি’র এক কর্মীর সঙ্গে মেলামেশা করার জন্য এক যুবকের বাড়িতে গিয়ে তাকে মারধর করার অভিযোগ উঠল শাসকদলের বিরুদ্ধে। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলার রাজনীতিতে সৌজন্যতা কি উধাও হয়ে গেল, এখন সেই প্রশ্ন ক্রমাগত মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে। নির্বাচনের লড়াইয়ে যাই হোক না কেন, ফলাফলের পর বাংলায় শাসক-বিরোধী একসাথে মিলেমিশে থাকে, এটাই বাংলার সংস্কৃতি। কিন্তু শুধুমাত্র বিজেপি কর্মীর সঙ্গে মেলামেশা করার জন্য যেভাবে এক যুবকের বাড়িতে গিয়ে চড়াও হয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে মারধর করার অভিযোগ উঠল, তাতে রীতিমত প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল শাসক দলের ভূমিকা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গুসকরা পৌরসভার 14 নম্বর ওয়ার্ডের আলুটিয়া এলাকার বাসিন্দা অসীম মাঝি। তিনি একটি মিলের গাড়ি চালিয়ে শনিবার বিকেলে তার এক বন্ধুর সঙ্গে পাড়ার দোকানে চা খাচ্ছিলেন। পরবর্তীতে রাত্রিবেলা তিনি বাড়ি ফিরে আসলে চারজন যুবক তার বাড়িতে এসে চড়াও হয়। যেখানে অসীম মাঝির মায়ের কাছে এসে তার ছেলের খোঁজ করার পাশাপাশি প্রশ্ন করা হয়, তার ছেলে কেন বিজেপি কর্মীর সঙ্গে মেলামেশা করেছে! পরবর্তীতে সেই অসীম মাঝিকে পেয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করে সেই চার যুবক বলে অভিযোগ। আর এই গোটা ঘটনার পেছনে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তি বাড়ছে ঘাসফুল শিবিরের। যেখানে বঙ্গ রাজনীতিতে সৌজন্যতা অন্যতম নজির হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাঝেমধ্যেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বাড়িতে ধুতি-পাঞ্জাবি পাঠিয়ে তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান, সেখানে জয়লাভ করার পরে কেন বিজেপি কর্মীর সঙ্গে এক যুবক মেলামেশা করছে, সেই প্রশ্ন তুলে ধরে তৃণমূল কর্মীদের এই প্রতিহিংসাপরায়ন আচরণ বাংলার সংস্কৃতিকে যে কার্যত ধুলিস্যাৎ করে দিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এই প্রসঙ্গে অসীম মাঝি বলেন, “পাশের বাড়ির সাহেব রজকের সঙ্গে ছোট্ট থেকে পড়াশোনা করেছি, মেলামেশা করেছি। এখন ওর সঙ্গে চপ খেয়েছি বলে চারজন এসে বলছে, ওর সঙ্গে মেলামেশা করা যাবে না। কেন জিজ্ঞাসা করতেই মারধর করে। আমি কখনও রাজনীতি করিনি। তবু বিজেপির প্রচার করেছি বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।” একইভাবে এই ব্যাপারে অসীমবাবুর মা ঝর্না মাঝি বলেন, “পাড়ার একটা ছেলে আমার ছেলের বন্ধু। সে বিজেপি করতেই পারে। আমার ছেলে তো কোনো দল করে না। শুধু ওর সঙ্গে মিশেছে বলে বাড়ি এসে মারধর করে গেল।” আর এখানেই একাংশের প্রশ্ন, সত্যিই তো তাই! তাহলে কি সৌজন্যতা উবে যাবে বাংলা থেকে? ছেলেবেলার বন্ধুত্ব ভুলে যাবে শুধুমাত্র বিজেপি করার জন্য! অনেকে বলছেন, এটা তৃণমূলের ফতোয়াকরণ রাজনীতি। এর আগেও বহুবার তৃণমূলকে এইরকম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হতে দেখা গেছে। আর যে বাংলায় সকালে উঠে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে একসাথে বাজার করতে যায় তৃণমূল কর্মীরা, একসাথে আড্ডা হয় চায়ের বৈঠকে, সেখানে শুধুমাত্র শৈশবকালের বন্ধুর জন্য এক বিজেপি কর্মীর সঙ্গে চপ খাওয়ার অপরাধে কেন তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই রকম ফতোয়া দেওয়া হবে! কেন এক নিরপরাধ যুবককে এইভাবে মারধর করবেন তৃণমূল কর্মীরা! তাহলে কি আইনের শাসন সম্পূর্ণরূপে উঠে গেল বাংলা থেকে! এখন এই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। এদিন এই প্রসঙ্গে গুসকরা শহরের বিজেপি সাধারণ সম্পাদক দীপক ঢালি বলেন, “তৃণমূলের লোকজন রাজনীতির সঙ্গে সামাজিক সম্পর্ককে গুলিয়ে ফেলে সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার করছে। এতে সমাজে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে, সেদিকে নজর দেওয়া উচিত।” এদিকে এই ঘটনা সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন গুসকরা শহর তৃণমূল সভাপতি কুশল মুখোপাধ্যায়। তবে শাসক দলের পক্ষ থেকে যে কথাই বলা হোক না কেন, ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই ধরনের ঘটনা যে তাদের দিকে বড় প্রশ্ন তুলে দিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -