এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > উন্নয়নের অর্থ নয়ছয়, প্রশ্নের মুখে মমতার বিডিওরা ! দিলীপের বক্তব্যে উত্তাল রাজ্য !‌

উন্নয়নের অর্থ নয়ছয়, প্রশ্নের মুখে মমতার বিডিওরা ! দিলীপের বক্তব্যে উত্তাল রাজ্য !‌


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- রাজ্যের প্রশাসনকে একেবারে কুক্ষিগত করে নিয়ে যা ইচ্ছে, তাই শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকার। পুলিশ তো বটেই, এমনকি সরকারি যারা উচ্চপদস্থ আমলা রয়েছেন, যারা বিডিও রয়েছেন, যারা ডিএম রয়েছেন, তাদেরকেও সরকারি প্রকল্প স্থাপন করার ক্ষেত্রে যা বলে দিচ্ছেন তৃণমূল নেতারা, তারা তাই করছেন। যার ফলে অনেক ক্ষেত্রেই দুর্নীতি সামনে চলে আসছে। জেলে যাচ্ছেন একের পর এক তৃণমূল নেতারা। বিরোধীদের অবশ্য তেমনটাই বক্তব্য।

আর এই পরিস্থিতিতে এবার টাকা দেওয়ার পরেও যখন কাজ হচ্ছে না, তখন রীতিমত ক্ষোভ চেপে রাখতে না পেরে সেই বিডিওদের শায়েস্তা করার নিদান দিলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তার বক্তব্য নিয়ে এখন নানা বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকেই বলছেন, দিলীপ ঘোষ হুমকি, ধমকি দিয়েই বরাবর খবরের শিরোনামে থাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু একজন সাংসদ তার সাংসদ কোটা থেকে টাকা দেবেন, আর তা দিয়ে কাজ হবে না, এটা কেউ মেনে নিতে পারে? তাই স্বাভাবিক নিয়মেই ক্ষোভকে আটকে রাখতে না পেরে দিলীপ ঘোষের পক্ষ থেকে মানুষের স্বার্থেই এই বক্তব্য উচ্চারিত হয়েছে বলেই দাবি বিরোধীদের।

প্রসঙ্গত, এদিন কেশিয়াড়ির একটি সভায় বক্তব্য রাখেন সাংসদ দিলীপ ঘোষ। আর সেখানেই তিনি স্পষ্ট করেন যে এলাকার একটি রাস্তা বারবার মেরামতির কথা বলা হলেও টাকার অভাবের কথা বলা হয়েছে। সেই কারণে তিনি প্রথমে 28 লক্ষ টাকা এবং তারপরে আবার কিছু টাকা দিয়েছিলেন সেই রাস্তা সারাই করবার জন্য। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই দিকে নজর দেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। তাই বাধ্য হয়ে এবার বিডিওকে কি করে জব্দ করতে হয়, সেই রাস্তায় হাঁটা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। এখন অনেকে বলতেই পারেন, দিলীপ ঘোষ তো এই কথা বলে হুমকি দিচ্ছেন! একজন রাজনীতিবিদ এবং জনপ্রতিনিধি প্রশাসনিক আধিকারিককে কি এইভাবে হুমকি দিতে পারেন?

একাংশ বলছেন, কথাগুলো শুনতে খারাপ লাগলেও এটা অত্যন্ত বাস্তব যে, মানুষের জন্যই জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে প্রশাসনিক আধিকারিকরা। ফলে জনপ্রতিনিধিরা টাকা দেবেন এবং সেই টাকায় কাজ করবেন না প্রশাসনিক আধিকারিকরা শুধুমাত্র বিজেপি সাংসদের টাকা বলে, এটা কি ধরনের আচরণ? তাহলে তো সেই প্রশাসনিক আধিকারিক যে ভাষায় বোঝেন, সে ভাষাতেই তাকে জবাব দিতে হবে! যে কথা দিলীপ ঘোষ বলেছেন, তা তো মানুষের জন্যই বলেছেন। তাই এর মধ্যে তেমন কিছু দেখছেন না সংশ্লিষ্ট মহল।

বিজেপির দাবি, এই রাজ্যে প্রশাসনকে সম্পূর্ণরূপে দলদাসে পরিণত করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি জনপ্রতিনিধিদের সরকারি কোনো অনুষ্ঠানে ডাকা তো হয়ই না। বরঞ্চ সেই জনপ্রতিনিধিরা যদি মানুষের জন্য কোনো কাজ করতে চান এবং অর্থ বরাদ্দ করেন, তাহলেও তাদের টাকা দিয়ে কাজ না করে দিনের পর দিন মানুষকে কষ্টের মধ্যে ফেলে রাখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলদাস প্রশাসন। কেশিয়াড়িতেও এই ঘটনাই ঘটেছে। তাই বাধ্য হয়েই এত টাকা দেওয়ার পরেও কেন কাজ করা হচ্ছে না, তা নিয়ে বিডিওকে হুশিয়ারি দিতে বাধ্য হয়েছেন দিলীপ ঘোষ। আর মানুষের জন্য হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি যদি ভুল কাজ করে থাকেন, তাহলে এই রকম ভুল কাজ তিনি বারবার করবেন বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের। মানুষের টাকা চুরি করে, মানুষের খাওয়ার চাল চুরি করে নেতা-মন্ত্রীরা জেলে যাচ্ছেন। কিন্তু তারপরেও মানুষকে সুবিধে না দিয়ে, সরকারি অর্থের অপচয় করেই যাচ্ছেন তৃণমূল সরকার এবং তাদের প্রশাসন। তাই তাদেরকে জব্দ করতে দিলীপ ঘোষ সঠিক কথাই বলেছেন বলেই দাবি একাংশের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, বিভিন্ন সময় দিলীপ ঘোষের বিভিন্ন মতামত নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। কিন্তু মানুষের জন্য তিনি এবার কথা বলেছেন। তাই অনুপ্রাণিত মিডিয়ারা এই নিয়ে আলোচনা সভা বসাতেই পারেন। কিন্তু তাতে সাধারণ মানুষের কথা যারা বলেন, যারা সাধারন মানুষের দুঃখের দিকে নজর দেন, তাদের কিছু যায় আসে না। কারণ দিলীপ ঘোষ মানুষের উন্নয়ন প্রকল্পে সাংসদ তহবিল থেকে টাকা দিয়েও কেন কাজ হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন। ফলে প্রশাসনিক আধিকারিকের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তাই যদি বিন্দুমাত্র লজ্জা থাকে, তাহলে দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্যের পর মানুষের সুবিধের জন্য স্থানীয় বিডিওর রাস্তা তৈরির দিকে নজর দেওয়া উচিত। কিন্তু বিজেপি সাংসদের টাকায় এলাকার উন্নয়ন করলে হয়ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তিনি খারাপ হয়ে যেতে পারেন। তাই ভয়ে এই কাজ করতে কতটা আগ্রহী হবেন স্থানীয় ব্লক প্রশাসন, তা যথেষ্ট সন্দেহের বিষয়। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!