মুখ্যমন্ত্রীকে হারিয়ে পেল বিরোধী দলনেতা! দিনের শেষে নন্দীগ্রামের উন্নয়নের স্বপ্ন সফল হবে? তৃণমূল বিজেপি মেদিনীপুর রাজনীতি রাজ্য May 16, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – এবারের বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের সব থেকে বেশি লক্ষ্য ছিল যে বিধানসভা কেন্দ্রের দিকে, তার নাম ছিল নন্দীগ্রাম। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, গোটা ভারতবর্ষের নজর ছিল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার এই হাইপ্রোফাইল কেন্দ্রের দিকে। কেননা একদিকে এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এবং অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। স্বভাবতই এই কেন্দ্রে যিনি জয়লাভ করবেন, তার নেতৃত্বেই রাজ্যের সরকার গঠন হবে বলে মনে করেছিলেন সকলে। কিন্তু তেমনটা হয়নি। সারা রাজ্য জুড়ে তৃণমূল দু’শোর বেশি আসন পেয়ে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসলেও নন্দীগ্রাম বিধানসভায় জয়লাভ করতে পারেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে তাকে পরাজিত করে শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি হেসেছেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। বর্তমানে তিনি রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হোক বা শুভেন্দু অধিকারী, দুই পক্ষের নজরই যে এবার নন্দীগ্রামের দিকে থাকবে, তা এককথায় পরিষ্কার। কিন্তু নন্দীগ্রামের উন্নয়ন কোন রাজনৈতিক দলের মধ্যে দিয়ে করা সম্ভব হবে, এখন সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে একাংশের মধ্যে। বহু রাজনৈতিক লড়াইয়ে উত্থান-পতনের সাক্ষী এই নন্দীগ্রাম। একসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে এই নন্দীগ্রামে লড়াই করে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন অধিকারী পরিবারের মেজো ছেলে। কিন্তু বর্তমানে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিপক্ষ শিবিরের প্রধান মুখ। তাকে ভারতীয় জনতা পার্টি নন্দীগ্রামে জয়লাভ করার পর রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা করেছে। ফলে তিনি শাসক শিবিরের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিতে এবার যে রাজ্য বিধানসভায় প্রতিমুহূর্তে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাবেন, তা বলাই যায়। কিন্তু নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক হিসেবে তিনি কতটা মানুষের কাছে উন্নয়ন পৌঁছে দিতে পারবেন, এখন তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে অনেকের মধ্যে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - একাংশ বলছেন, নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক হিসেবে শুভেন্দু অধিকারী আবার বিধানসভাতে গেলেও, তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাকে উন্নয়নের কাজে সহযোগিতা করা হবে না। যার ফলে তিনি চেষ্টা করলেও এখানকার উন্নয়নে বাধা পেতে পারেন। কেননা তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজিত করেছেন। ফলে এককালে তৃণমূলের অন্যতম হেভিওয়েট নেতা শুভেন্দু অধিকারী এখানে নিজের প্রাক্তন নেত্রীকে পরাজিত করার কারণে এটা যে প্রেস্টিজ ফাইট হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর সেই কারণেই সেই শুভেন্দু অধিকারীকে আরও বেশি করে জব্দ করতে নন্দীগ্রামের উন্নয়নের ক্ষেত্রে কৌশলগতভাবে বাধা দিতে পারে রাজ্যের শাসক দল বলে মনে করছেন একাংশ। পর্যবেক্ষকদের মতে, এবার শুধু নয়, বরাবর নন্দীগ্রাম খবরের শিরোনামে থেকেছে। বিগত বাম সরকারের আমলে এই নন্দীগ্রামের লড়াই 34 বছরের বাম সরকারকে সংকটের মুখে ফেলে দিয়েছিল। সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী একসাথে এই লড়াইয়ে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপট অনেকটাই আলাদা। তাই এই পরিস্থিতিতে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজিত করে শুভেন্দু অধিকারী জয়লাভ করলেও, নন্দীগ্রামের মানুষের কাছে উন্নয়ন কতটা পৌঁছে যাবে, সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। শেষ পর্যন্ত নন্দীগ্রামে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। আর সেই লড়াইয়ে শেষ হাসি হেসেছেন শুভেন্দু অধিকারী। যদিও বা জয় নিয়ে শেষ পর্যন্ত প্রশ্ন থেকে গেছে তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে। তাদের দাবি, কারচুপি করে জয়লাভ করেছেন বিজেপি প্রার্থী। আর এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, রাজ্যে যখন তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় রয়েছে এবং নন্দীগ্রামে যখন বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী জয়লাভ করছেন, তখন দুই রাজনৈতিক দল নন্দীগ্রামকে ভালো চোখে গ্রহণ করবেন। এক্ষেত্রে নন্দীগ্রামের মানুষের সুযোগ-সুবিধা এবং আশা-আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে দুই রাজনৈতিক দল এখানকার মানুষের পাশে থাকবেন বলেই দাবি করছেন একাংশ। তবে এখন রাজনৈতিক দ্বৈরথের ওপরে উঠে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি নন্দীগ্রামের উন্নয়নকে মর্যাদা দিয়ে এখানকার মানুষের পাশে থাকতে কতটা কার্যকরী ভূমিকা পালন করেন, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -