গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কাঁটা উপরে মাটি কামড়ে পড়ে থেকেই কঠিন লড়াইয়ে অনায়াস জিত তৃণমূলের দুই যোদ্ধা তৃণমূল মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম রাজনীতি রাজ্য May 16, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – 2011 সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস বামেদের পরাজিত করে প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিল। তারপর পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে পৌরসভা, লোকসভা থেকে শুরু করে 2016 সালের বিধানসভা, যে কোনো নির্বাচনে তৃণমূলের অন্তর্কোন্দল বিভিন্ন কেন্দ্রে তাদেরকে হারের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল বলে দাবি করে একাংশ। এক গোষ্ঠীর নেতা প্রার্থী হওয়ার কারণে অন্য গোষ্ঠীর নেতারা রীতিমত ক্ষিপ্ত হয়ে বিরুদ্ধে ভোট করিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। যার ফলে বিভিন্ন সময় নির্বাচনে তৃণমূলের অনেক প্রার্থীকে পরাজিত হতে হয়। এবারের 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রে অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা করেছিলল শাসকদল। যার মধ্যে অন্যতম মুর্শিদাবাদ জেলার হরিহরপাড়া এবং রানীনগর বিধানসভা কেন্দ্র। একদিকে এই দুই বিধানসভা কেন্দ্রে বম এবং কংগ্রেসের দাপট এবং অন্যদিকে দলের একাংশের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত ব্যক্তিদের ঠিকমত মানতে না পারা, স্বাভাবিক ভাবেই দুই বিধানসভা কেন্দ্রে লড়াই করতে গিয়ে তৃণমূল প্রার্থীরা জয়লাভ করতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে প্রথম থেকেই তৈরি হয়েছিল সংশয়। কিন্তু এই সমস্ত জল্পনা-কল্পনাকে দূরীভূত করে নিজেদের জয় নিশ্চিত করেছেন হরিহরপাড়ার নিয়ামত শেখ এবং রাণীনগরের সৌমিক হোসেন। একদিকে বিরোধী শক্তি এবং অন্যদিকে নিজের দলের ভেতরে বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর চাপে তাদের জয় রীতিমত চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত এই দুই তৃণমূল প্রার্থী বিধায়ক হয়ে তাদের সাংগঠনিক শক্তি যে যথেষ্ট রয়েছে, তা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের পক্ষ থেকে মুর্শিদাবাদ জেলার হরিহরপাড়ায় প্রার্থী করা হয়েছিল নিয়ামত শেখকে। অন্যদিকে রাণীনগরে প্রার্থী করা হয়েছিল সৌমিক হোসেনকে। তবে প্রথম থেকেই হরিহরপাড়া এবং রাণীনগরের জয় নিয়ে সংশয়ের আবহ তৈরি হয়েছিল শাসকদলের অন্দরমহলে। কেননা এই দুই বিধানসভা কেন্দ্রে বাম এবং কংগ্রেসের দাপট রয়েছে। এবার তারা জোট বদ্ধ করে লড়াইয়ের কারণেই তৃণমূল প্রার্থীরা ঠিকমত কাজ করতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে তৈরি হয়েছিল সংশয়। তবে শেষ পর্যন্ত হরিহারপাড়ার তৃণমূল প্রার্থী নিয়ামত শেখ নিজের সাংগঠনিক দক্ষতার জেরে এখানকার সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী কংগ্রেসের মীর আলমগীরকে পরাজিত করে জয়লাভ করেন। একাংশ বলছেন, হরিহরপাড়ায় নিয়ামত শেখের জয়লাভ করার অন্যতম প্রধান কারণ, তিনি প্রতিনিয়ত মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। নিজের হাতে এলাকার সংগঠন মজবুত করার দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন তিনি। তাই ভোটের সময় নিজের মত করে ভোট পরিচালনা করা এবং মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ, তাকে বাড়তি মাইলেজ পাইয়ে দিয়েছিল। আর সেই কারণেই তিনি জয়লাভ করতে পেরেছেন। অন্যদিকে অতীতে দুবার দুবার পরাজিত রাণীনগরে তৃণমূল প্রার্থী সৌমিক হোসেনের জয় নিয়েও এবার সংশয় যথেষ্ট ছিল। কিন্তু নিজের মত করে মাটি কামড়ে পড়ে থেকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সত্ত্বেও, নিজের জয় নিশ্চিত করেছেন তিনি। কি করে এই অসম্ভব ব্যাপারটি সম্ভব হল? আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এই প্রসঙ্গে সৌমিক হোসেন বলেন, “রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সাফল্য নিয়ে ভোটারদের দরজায় দরজায় গিয়েছিলাম। ভোট ঘোষণা হওয়ার অনেক আগে থেকেই রানীনগরকে লক্ষ্য করে জনসংযোগ বাড়িয়েছিলাম। দল আমাকে এই কেন্দ্রে প্রার্থী করায় আমি কৃতজ্ঞ। মানুষ আমার উপর ভরসা রেখেছেন। তাই আগামী দিনে এলাকার শান্তি বজায় রেখে উন্নয়ন আমার পাখির চোখ হবে।” বিশ্লেষকরা বলছেন, মূলত মাটি কামড়ে পড়ে থেকে সংগঠনকে চাঙ্গা করা এবং জনসংযোগ, এই দুই তৃণমূল প্রার্থীর জয়কে অনেকটা সহজ করে দিয়েছে। প্রতিবার নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ এবং মালদহ জেলায় খুব একটা ভালো ফল করতে পারে না তৃনমূল কংগ্রেস। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম। ভোটের প্রচারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার দাবি করে এসেছিলেন, এবার মুর্শিদাবাদ এবং মালদহ জেলায় তারা ভালো আসন পাবেন। আর তার সেই কথা সত্যি হয়েছে। এমনকি মুর্শিদাবাদ জেলার যে দুটি আসন নিয়ে চিন্তায় ছিলেন তৃণমূলের সকল স্তরের নেতৃত্বরা, সেই হরিহরপাড়া এবং রাণীনগরেও এবার ফুটে গিয়েছে ঘাসফুল। যার মূল কান্ডারী নিয়ামত শেখ এবং সৌমিক হোসেনের কৃতিত্বকে মেনে নিতে হচ্ছে বিরোধী গোষ্ঠীর নেতাদেরও। আপনার মতামত জানান -