এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > ঢঙ্গের শেষ নেই, ফের মমতার নয়া নাটকে বিরক্ত রাজ্য ! প্রশ্ন তুলে খোঁচা বিজেপির!

ঢঙ্গের শেষ নেই, ফের মমতার নয়া নাটকে বিরক্ত রাজ্য ! প্রশ্ন তুলে খোঁচা বিজেপির!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- সেই যে শিল্পপতিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিদেশ থেকে ফিরে এসেছেন, তারপর পায়ের সমস্যার কথা তুলে ধরে টানা বাড়িতে থেকেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি পুজোর সময় ভার্চুয়ালি বাড়ি থেকেই পূজার উদ্বোধন করেছেন অসুস্থতার কথা তুলে ধরে। তবে এখন অবশ্য তিনি সুস্থ। বাইরের বিভিন্ন কর্মসূচিতে যুক্ত হচ্ছেন। কিন্তু দীর্ঘ অসুস্থতার পর সুস্থ হয়ে মুখ্যমন্ত্রী যখন বাইরে বেরোলেন এবং রাজ্যপালের কাছে গেলেন বিজয়ের শুভেচ্ছা জানাতে, সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী এমন একটি কথা বললেন, যা নিয়ে নানা মহলে উঠছে প্রশ্ন।

বিরোধীরাও নতুন হাতিয়ার পেয়ে গিয়েছে সরকারের বিরোধিতা করার জন্য। মুখ্যমন্ত্রী মাঝেমধ্যেই এমন সব কথা বলেন, সেটা জেনে বলেন, নাকি না জেনে বলেন, নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে বলেন, সেটা তিনিই ভালো বলতে পারবেন। কিন্তু সামান্য সিমপ্যাথি থাকলে, সামান্য সহানুভূতি থাকলে উৎসব শেষ হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী যে ঢংটা রাজভবনের সামনে থেকে করলেন, তা করতে পারতেন না। বিরোধীরা অবশ্য তেমনটাই বলছেন। কিন্তু কি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী? কি বলেছেন তিনি! যা নিয়ে বিরোধীরা এত প্রশ্ন তুলছেন!

প্রসঙ্গত, এদিন বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর সেখান থেকে বাইরে বেরিয়ে এসে তিনি এটাও বলেন যে, “নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা অত্যন্ত অসুস্থ। তিনি পড়ে গিয়েছিলেন। তাই তাকে দেখতে তিনি হাসপাতালে গিয়েছেন। তিনি অত্যন্ত মর্মাহত এই ঘটনায়।” অনেকে বলছেন, এটা সকলের কাছেই অত্যন্ত দুঃখের খবর যে, অভিজিৎবাবুর মা অসুস্থ। তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন, সেটা সকলেই চান।

কিন্তু পায়ের এত বড় সমস্যা থেকে সেরে উঠে মুখ্যমন্ত্রী রাজভবন যেতে পারছেন, হাসপাতালে গিয়ে অভিজিৎবাবুর মায়ের কেমন চিকিৎসা হচ্ছে, সেটা দেখতে পারছেন। অথচ যারা দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চনার দাবিতে রাস্তায় পড়ে রয়েছেন, মুখে দু’চারটে কথা বলে তাদের সহানুভূতি দিতে পারছেন না! এটা কি ধরনের মানবতা? তিনি অভিজিৎবাবুর মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন, এটা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলছে না। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, সব জায়গায় যেতে পারলেও কেন চাকরিপ্রার্থীদের বঞ্চনার মঞ্চে যেতে পারছেন না মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী?

বিজেপির দাবি, ফের নতুন ঢং শুরু করে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। যে করেই হোক, তার সরকারের ব্যর্থতাকে ঢাকার জন্য তিনি বিভিন্ন কার্যকলাপ করে নিজে কতটা মানবদরদী, সেটা দেখানোর চেষ্টা করেন। অভিজিৎবাবুর মায়ের সুস্থতা যেমন অত্যন্ত জরুরী, ঠিক তেমনই রাজ্যের যে সমস্ত ছেলেমেয়েরা রাস্তায় বসে রয়েছেন, যারা সংসার ফেলে উৎসবের মুহূর্তে আন্দোলন করছেন, তাদের দিকে তাকানোটাও জরুরী। রাজ্যবাসীকে ভালো রাখা একজন মুখ্যমন্ত্রীর সব থেকে বড় দায়িত্ব এবং কর্তব্য। কিছু বড়লোকদের জন্য তো এই সরকার নয়। এই সরকার তো দীন দরিদ্রদের জন্য।

এই প্রতিশ্রুতি দিয়েই তো ক্ষমতায় এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাহলে আজকে তার কেন এত আমূল পরিবর্তন? কেন সব জায়গায় যেতে পারলেও তিনি সরকারি কর্মচারীদের মঞ্চে যেতে পারছেন না! কেন তিনি এসএলএসটি চাকরি প্রার্থীদের মঞ্চে গিয়ে বলতে পারছেন না যে, এই সরকার তাদের বিষয়টি বিবেচনা করছে! কিন্তু তা না করে সব সময় পালিয়ে বেড়ানোর যে চালাকি বুদ্ধি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী করছেন, তা গোটা রাজ্যের মানুষ ধরে ফেলেছেন। আগামী দিনে ভোটব্যাংকেই তার জবাব পাবে এই সরকার বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বভাবে চরম পরিবর্তন এসেছে। তার সরকার এখন বড়লোকদের সরকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গরিব মানুষদের দিকে নজর দেওয়ার মত সময় নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা অসুস্থ, তাকে তিনি দেখতে যেতে পারলেন। কিন্তু বঞ্চিত প্রতিবাদীদের পাশে দাঁড়ানোর মত দুটো কথা বলতে পারলেন না! বঞ্চিতদের মঞ্চে গিয়ে তাদের সহানুভূতি দেওয়া তো অনেক পরের কথা। সামান্য সংবাদমাধ্যমের সামনে যদি পাঁচ মিনিট এই বঞ্চিত সরকারি কর্মচারী থেকে শুরু করে চাকরিপ্রার্থীদের জন্য দুটো কথা বরাদ্দ করতেন, তাহলেও তারা আশ্বস্ত হতে পারতেন। কিন্তু তা না করে দীর্ঘদিন পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে নতুন নাটক শুরু করে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। নতুন ঢঙে তাকে রাজ্যের মানুষ অবতীর্ণ হতে দেখলেন। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!